স্থানীয় সংবাদ

ফকিরহাটের প্রধান সড়ক সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ হলেও কাজ হয়নি : জন দুর্ভোগ চরমে

তদারকিতে জটিলতা

আজাদুল হক, বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা সদরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন প্রধান সড়কটির ব্যস্ততম অংশের ইটের সলিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে যাতায়াতকারি হাজার হাজার মানুষ। রাস্তাটির সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ দেওয়ার পর ৫ মাস অতিবাহিত হলেও সড়ক বিভাগের উদাসিনতার কারনে সংস্কার কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এ সড়কটির বেহাল দশার খবর পেয়ে সরেজমিনে খোজ খবর নিতে গেলে স্থানীয়রা জানান, ৬/৭ বছর আগে বাগেরহাট-খুলনা পুরাতন সড়কের ফকিরহাট বাজারের উপরের এই অংশের রাস্তার পিচের কার্পেটিং উঠে যায়। ২০১৮ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ওয়াসা এই সড়কে বৃহদাকার পাইপ বসায়। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ রাস্তাটিতে শুধুমাত্র ইটের সলিং দিয়ে ঢেকে দেয়। ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস, থানা, সরকারি কার্যালয় ও বিভিন্ন স্কুল কলেজে যাওয়ার জন্য এ রাস্তাটি মানুষ ব্যবহার করে। উপজেলা সদর বাজারের উপর রাস্তাটি অবস্থিত হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা বিক্রেতা যাতায়াত করে এ রাস্তা দিয়ে। এছাড়া এই রাস্তা দিয়েই ফকিরহাটসহ আশে-পাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষ বিভাগীয় শহর খুলনায় যাতায়াত করেন বলে জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা খান আরিফুর রহমান। এ সময় উপস্থিত অন্যরা বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারনে কয়েকবছর ধরে অসংখ্য যানবাহন ও যাতায়াতকারী মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায় রাস্তাটির সামনে ও পিছনে পিচ ও কংক্রিটের অংশ থাকলেও মাঝখানের প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তায় খানাখন্দের কারণে মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই। ভ্যান যোগে এ রাস্তা দিয়ে ফকিরহাট উপজেলা হাসপাতালে এক গর্ভবতী মাকে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাঙ্গা রাস্তায় অনাবরত ধাক্কা খেয়ে তিনি আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়েন বলে জানান একজন প্রর্ত্যক্ষদর্শী। এ রাস্তা দিয়ে যানবাহনে যাওয়ার সময় ঝাঁকি লেগে অনেক যাত্রীর ব্যাগসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রাস্তায় পড়ে যায়। অনেকের জমির দলিল, একাধিক ছাত্রছাত্রীর সার্টিফিকেট হারিয়ে হর হামেশা নানান দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া প্রায়ই ঘটে ছোট- বড় দুর্ঘটনা। একাধিক চালক ও পথচারীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। রাস্তাটি মাঝে মধ্যে সংস্কার করলেও সড়কের পাশে ড্রেন না থাকায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় বলে জানায় সচেতন মানুষরা। ভারী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, শত শত ইজিবাইক, মাহিন্দ্র, পিকআপ, নসিমন এবং খুলনা ও বাগেরহাটগামী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে যাওয়া-আসা করে। যানবাহনের চাপের কারণে ইটের সলিং উঠে গিয়ে দুর্ঘটনা প্রবণ হয়ে উঠেছে সড়কটি। স্থানীয় দোকানদার বলরাম মিত্রসহ বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন শুনেছি রাস্তাটি সংস্কার হবে। অথচ বাস্তবতায় দেখছি না। রাস্তাটির কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটার মো. মাহফুজ খান সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের জন্য কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে। ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, সরকার ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই রাস্তাটিসহ আরো কিছু অংশ নির্মানের জন্য কার্যাদেশ ও ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এখনও কাজ শুরু করেনি। এতে জনদূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তিনি রাস্তার কাজটি দ্রুত শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ বিষয়ে বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ফকিরহাটের বাজারের এ রাস্তা নির্মাণের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলেছি। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button