স্থানীয় সংবাদ

খুলনা জেলায় একবছরে ৩২ জন কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত

৩৭ বছরে শনাক্ত ৪৪৪৯ জন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ গত এক বছরে খুলনা জেলায় ৩২ জন নতুন করে কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ পুরুষ রয়েছে। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট খুলনা জেলায় মোট কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৪৪৯ জন। খুলনা কুষ্ঠ ও যক্ষ্মা নিয়ন্ত্র প্রকল্প (পিমে সিস্টার্স) এর মাধ্যমে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি সরকারী ও বেসরকারীভাবে কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো “আত্মমর্যাদার পরিবেশ, কুষ্ঠ কলংকের হবে শেষ”। এ উপলক্ষে সিভিল সার্জন অফিস চত্বর থেকে র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালি শেষে প্রতিপাদ্য বিষয় এবং কুষ্ঠ রোগ নির্মূল এর উপরে একটি সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
র‌্যালিটি উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ। র‌্যালি ও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ, খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সবিজুর রহমান। প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বক্তব্য প্রদান করেন ডা: আনোয়ারুল আজাদ, প্রাক্তন বিভাগীয় কনসালট্যান্ট বক্ষব্যাধি। বক্তব্য দেন সাজ্জাদুর রহিম পান্থ, পরিচালক-স্বাস্থ্য, সিএসএস। বক্তব্য দেন ডাঃ সিস্টার রবার্তা পিনোনে, পরিচালক-পিমে সিস্টার ও বিভিন্ন জিও-এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ।
বিভাগীয় পরিচালক এবং সিভিল সার্জন তার বক্তৃতায় কুষ্ঠজনিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সকল ধরনের সেবা প্রাপ্তি সহজতর করার আশ^াস প্রদান করেন। তারা অন্যান্য প্রতিবন্ধী সেবার সাথে কুষ্ঠজনিত প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াস দেন। মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মীগণ যদি কুষ্ঠ ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে জানে ও প্রাথমিকভাবে রোগী চিহ্নিত করতে পারে তবে এর কারনে প্রতিবন্ধিতার হার কমবে ও সামাজিক কুসংস্কার অনেকাংশে দূরীভ’ত হবে। বক্তারা এই মর্মে আশা প্রকাশ করেন যে অচিরেই কুষ্ঠজনিত সামাজিক সমস্যা দূর হবে ও রোগাক্রান্ত মানুষেরা পূর্ণ মানবিক মর্যাদা নিয়ে সমাজে বসবাস করতে সক্ষম হবে। এই প্রসঙ্গে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারনা চালানোর ওপর বিশেষ গুরুত¦ আরোপ করা হয়। পিমে সিস্টার এর কোঅর্ডিনেটর আকতার আলী বলেন, ২০২৩ সালে খুলনায় জেলায় নতুন করে ৩২ জন কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে শতকরা ৭০ জন। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ৪৪৯৯ জন। তিনি বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে খুলনা মহানগরীর কয়েকটি নির্দ্ধারিত ক্লিনিকে কুষ্ঠ রোগের ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা বিনা মূল্যে প্রদান করে আসছে এবং বড় বয়রা দাস পাড়ায় অবস্থিত ৩৩ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কুষ্ঠ ও যক্ষ্মা রোগীদের বিনামূল্যে ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। শরীরে চামড়ার উপর যে কোন জায়গায় অনুভূতিহীন হালকা বাদামী রং এর ফ্যাকাশে দাগ কুষ্ঠ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ, কুষ্ঠ রোগের দাগে চুলকায়না। কোন প্রকার পঙ্গুত্ব ছাড়া কুষ্ঠ মুক্ত খুলনা গড়তে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের ও সকল প্রচার মাধ্যমের আন্তরিক সহযোগীতা একান্ত প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button