স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় মাসব্যাপী বই মেলার উদ্বোধন

মানুষের নিত্য সঙ্গী হলো বই : সিটি মেয়র

স্টাফ রিপোর্টার ঃ গতকাল উৎসবমুখর পরিবেশে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন খুলনার উদ্যোগে এবং বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার খুলনার ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত ২৯ দিনব্যাপী “একুশে বইমেলা, খুলনা-২০২৪” এর উদ্বোধন হয়। এবারও ১ ফেব্রুয়ারী থেকে মাস ব্যাপী চলবে এ মেলা। খুলনার বয়রাস্থ বিভাগীয় গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে এ মেলা ২৯ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলবে। বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আঃ খালেক। পরে মূল মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র বলেন, বই ছাড়া জ্ঞান অর্জন করা যায় না। মানুষের নিত্য সঙ্গী হলো বই। বই সবসময় বন্ধুর মতো কাজ করে। বইপড়া ছাড়া কেউ বড় হতে পারে না। আর বইমেলা হচ্ছে বাঙ্গালির প্রাণের মেলা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বেশি করে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বইয়ের প্রতি সকলকে আকৃষ্ট করতে বইমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, একুশ আমাদের অহংকার, একুশ আমাদের গৌরব। দেশের যত আন্দোলন তার অনুপ্রেরণা হয়েছে ভাষা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে। বেশি করে বই পড়াতে মেয়র সকলের প্রতি আহবান জানান। খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবির ও রবি আজিয়াটা লিমিটেডের হেড অব পাবলিক অ্যাফেয়ারস এন্ড সাসটেইনেবিলিটি’র শরীফ শাহ জামাল রাজ। স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি খুলনা শাখার সভাপতি মোঃ আলমগীর। বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহযোগিতায় খুলনা জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বই মেলায় প্রকাশনা সংস্থা, বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বই বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের একশত স্টল রয়েছে। মাসব্যাপী বইমেলা সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা এবং অন্যান্য দিনগুলোতে বিকেল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সকলের জন্য খোলা থাকবে। প্রতিদিন বিকালে আলোচনা সভা, সেমিনার, প্রবন্ধ ও কবিতা পাঠ, নতুন লেখকদের বইয়ের মোড়ক উম্মোচন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বইমেলা উপলক্ষ্যে শিশুদের জন্য থাকছে উপস্থিত বক্তৃতা, বিতর্ক, আবৃত্তি, চিত্রাংকন, সঙ্গীত ও বইপাঠ প্রতিযোগিতা। এছাড়া বইমেলা উপলক্ষ্যে সকল বইয়ের ওপর ২৫ শতাংশ ছাড়ে ক্রেতারা বই কিনতে পারবেন। বয়রাস্থ বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব হামিদুর রহমান জানান, মেলার স্টল তৈরীর কাজ প্রায় শেষের পথে। ২/৩টি বাদে প্রায় স্টল পরিপূর্ণভাবে সাজানো হয়েছে। মেলা প্রথম দিকে মাইকিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে মেলার ফেইজবুক পেইজ খোলা হয়েছে। মেলা ধুমপান নিষিদ্ধ থাকবে। এবার পরিবেশ অনুকূলে তাই মেলা জমবে বলে তিনি আশাবাদী। উদ্বোধনী দিনে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে দর্শদ সমাগম ছিল চোখে পড়ার মত। খুলনা বুক ডিপো স্টলের প্রতিনিধি আলতাফ হোসেন জানান, এবার মেলার শ্রীবৃদ্ধি করেছে স্থায়ী লেখক কুঞ্জ। লেখক কুঞ্জ দর্শকদের নতুনভাবে আকর্ষিত করছে। আসফিয়া বুক ডিপো স্টলের প্রতিনিধি কেএম তুহিন বাবু বলেন, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার পরও উদ্বোধনী দিনে দর্শক সমাগম ছিল চোখে পড়ার মত। এবার কেনাকাটা জমবে বলে তিনি আশাবাদী। বইমেলার আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে রূপান্তর, খুলনা এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমী, খুলনার আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট কবি এস এম হুসাইন বিল্লাহ। পরে অতিথিরা মেলার স্টল ঘুরে দেখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button