খুমেক হাসপাতালে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই
খুমেক হাসপাতালে অনিয়ম-অবহেলা চরমে, দেখার কেউ নেই (পর্ব-৪)

থানায় নেই কোন অভিযোগ, মহিলা চোর সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয়
কামরুল হোসেন মনি ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার আশায় আশপাশের অন্ততঃ ৮ থেকে ১০টি জেলার রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। দীর্ঘ দিনের দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের পাশাপাশি হঠাৎ করে আশংকাজনক হারে বেড়েছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। রোগী কিংবা স্বজন কেউই রেহাই পাচ্ছেন না এই চুরি-ছিনতাইয়ের হাত থেকে। পুরুষদের চেয়ে মহিলা চোরের সংখ্যা বেশি। গত বৃহস্পতিবার খুমেক হাসপাতাল থেকে চুরি করার সময় মেডিসিন -৫ ইউনিট থেকে চোর মেহেরুন নামে এক মহিলা আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। খুমেক হাসপাতালে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার লেবার ওয়ার্ড থেকে রোগীদের কাছ থেকে মোবাইল চুরি করে মেহেরুন নামে এক মহিলা চোর। সেখান থেকে ওই চোর মহিলাটি মেডিসিন-৫ ইউনিটে যায়। সেখানে খুলনা মেডিকেল কলেজ এর এক শিক্ষার্থীরা ব্যাগ চুরি করে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় আটক হয়। পরে সে স্বীকার করে যে লেবার ওয়ার্ড থেকে মোবাইল চুরি করে ওই ওয়ার্ডে আসেন। চুরি হওয়ার মোবাইল ও ব্যাগ প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া হয়। আর ওই মহিলাকে পুলিশের কাছে তুলে দেন। এর আগে দিন বুধবারও দুইজন মহিলা চোরকে আটক করা হয়েছিলো। এ হাসপাতালে পুরুষের চেয়ে মহিলা চোরের সংখ্যা বেশি। কারণ মহিলা হওয়াতে তারা যে কোন সময় যে কোন ওয়ার্ডে নির্বিঘেœ যেতে পারেন। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে থাকে মহিলা চোর চক্রের সদস্যরা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হাসপাতালটির বিভিন্ন ওয়ার্ড ও টিকিট কাউন্টারসহ গত দেড় মাসে অনন্ত ২০-২৫টি বেশি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন অজুহাতে সারা রাত বিভিন্ন ওয়ার্ডে টহল দেয় বহিরাগতরা। তবে এ বিষয়ে উদাসীন হাসপাতাল প্রশাসন। এমন অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের। রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, কেউ এম্বুলেন্স ড্রাইভার আবার কেউ ওষুধের দোকানের প্রতিনিধি পরিচয়ে সার্বক্ষণিক দলবেঁধে ওয়ার্ডের কারণে অকারণে হাসপাতাল ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভেতরে আসা যাওয়া করে। এতে এক ধরনের আতংক ও হুমকিতে পড়েছে হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর দিন-রাতে মহিলারা তো আছেই। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সহজ সরল নারীদের প্রথম টার্গেট করে চোরের দল। হঠাৎ চোরের উপদ্রব বেশ হারে বাড়তে শুরু করেছে। হাসপাতালটিতে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা প্রায় অর্ধশতাধিক নারীর স্বর্ণের চেইন ও মোবাইল খোয়া গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক নারী। ছিনতাইকারীরা তার লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ ঘটনা হাসপাতাল জুড়ে আলোচিতও হয়। এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে খুমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: মো: হুসাইন সাফায়াতকে মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভি করেননি।
এ ব্যপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো: ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমাদেরকে ফোনে জানালে আমরা ফোর্স পাঠাই। এরপর কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি।