স্বল্প পুঁজিতে ভালো মুনাফা হওয়ায় খুলনায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাশরুম চাষ

স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় অনেকেই ঝুঁকছেন মাশরুম চাষের দিকে
সাইফুল্লাহ তারেক, আটরা গিলাতলা প্রতিনিধি ঃ খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারী ইর্ষ্টান জুট মিলের শ্রমিক ওলিয়ার রহমান । মাশরুম চাষ বিষয় জানতে পারায় ঢাকাস্থ মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ শেষে স্বল্প পুঁজি নিয়ে ওষধি, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন মাশরুম চাষ শুরু করেন। শুরু হয় তার কর্মব্যস্ততা। ২০০৬ সালে বসতঘরে ছোট পরিসরে ১৫ টি স্পন প্যাকেট নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেন ওলিয়ার। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মাশরুম পান তিনি। বর্তমানে ওলিয়ারের খামারে ২ হাজারের অধিক মাশরুমের স্পন প্যাকেট রয়েছে। ৭ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে তার খামারে। তাদের প্রায় ২০ হাজার টাকা বেতন দিচ্ছেন ওলিয়ার। এখন উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ থাকছে ওলিয়ার। বর্তমানে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ওলিয়ার । ওলিয়ার জানান, ‘মাশরুম চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। প্রতিদিন আমি ৮ থেকে ১০ কেজি মাশরুম পাচ্ছি। প্রতিকেজি কাঁচা মাশরুম ২ থেকে আড়াইশ আর শুকনা মাশরুম ১৫ শ থেকে ২ হাজার টাকা টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মাশরুম পাঠাচ্ছি। এছাড়া কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও দেশের বিভিন্ন স্থানে মাশরুম প্রেরণ করছি। মাশরুম উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম বীজ (স্পন) উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছি। আমার মাশরুম চাষ দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক মাশরুম চাষে আগ্রহী হচ্ছে। অনেকে আমার খামারের বীজ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেছেন। সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে, ঋণ সহায়তা পেলে তরুণ বেকার যুবকেরা মাশরুম চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।’ তিনি আরো জানান, মাশরুম পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন হওয়ায় এরই মধ্যে এটি সারা দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি খাবার তালিকায় মাশরুম রাখছেন। চাহিদা বাড়ায় শিক্ষিত যুবকদের মাঝে মাশরুম চাষের আগ্রহও বাড়ছে। মাশরুম চাষে আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। বসতঘরের আশপাশের অব্যবহৃত জায়গা ও ঘরের বারান্দায়ও মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব। মাশরুম বীজ উৎপাদনের জন্য খড়, কাঠের গুঁড়া, কাগজ, গমের ভুসি প্রয়োজন হয় যা খুব সহজলভ্য। এ ব্যাপারে ফুলতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, মাশরুম মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। ঔষধি গুণ সম্পন্ন মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। এটি চাষে কম পুঁজি লাগে। মাশরুম চাষ বেশ লাভজনক। আমাদের দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের উপযোগী। বসতঘরের পাশে অব্যবহৃত জায়গা ও ঘরের বারান্দা ব্যবহার করেও মাশরুম উৎপাদন করা যায়। ওলিয়ার রহমানের এই মাশরুম চাষে সফলতা দেখে অনেকেই এখন মাশরুম চাষ করছেন। তিনি আরো বলেণ সারা বাংলাদেশ ওলিয়ার রহমান মাশরুমের বীজ সরবরাহ করছেন তাকে আমরা উপজেলা অফিস থেকে সকল প্রকার সহযোহিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে।