খুলনায় বেকার নিস্ক্রিয় তরুণদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে
শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ খুলনা জেলা ও নগরীতে আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে বেকার ও নিস্ক্রিয় যুবকের সংখ্যা। কর্মসংস্থান নেই পড়াশুনা নেই চাকুরী নেই ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী এমন তরুণদের বেকার জীবন যাপনে অনেকটা হতাশাগ্রস্থ হয়ে চলছে জীবন। এতে করে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এসব তরুণেরা। কথা হয় নগরীর খালিশপুর এলাকায় বেকার তরুণ মোঃ নয়নের সাথে তিনি বলেন, পারিবারিক ভাবে একটি মুদি দোকান ছিল। হঠাৎ করে বড়ভাই বিদ্যূৎস্পৃষ্ঠে মারা যায়। এরপর থেকে দোকানে লোকশান শুরু হয়। এরপর দোকান বন্ধ হয়ে যায়। আমার এখন কোন কাজ নেই অলস সময় পার করছি। দুটি সন্তান আছে। মাঝের মধ্যে দৈনিক পরিশ্রমিক কাজ করছি। তবে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক করতে পারিনা। এছাড়া কথা রাকি হোসেন নামের এক যুবক এর সাথে তিনি বলেন, পড়াশুনা এসএসসি পর্যন্ত যেতে পারিনি। নগদ অর্থ নেই যে কোন ব্যবসা করব আর না আছে কোন চাকুরী কি করব? এখন বেকার। বড় ভাই সরকারী চাকুরী করে। তার দেয়া অর্থ দিয়ে চলে সংসার। তবে সরকারীভাবে যুবউন্নয়নের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ কারিগর হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে এমনটি জানেনা অনেকে বেকার তরুণ। এছাড়া যুব উন্নয়নে যেয়ে নিজে একজন উদ্দ্যোক্তা হওয়া যায় এমন আত্মবিশ^াস নেই অনেক তরুণের। পাশাপাশি বিদেশ যাওয়া যাচ্ছে সরকারী অর্থে এমনটিও সম্পর্কে অনেকে অবগত থাকলেও তারা অলস আর নিস্ক্রিয়ভাবে জীবন যাপন করছে। এ বিষয়ে সচেতন নাগরীক মোঃ আনোয়ার হোসেন মন্টু বলেন, বর্তমান সময়ে সরকারীভাবে বেকার-তরুণদের জন্য আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে তবে অধিকাংশ তরুণেরা ভাল চাকরী আর ভাল বেতন এর দিকে ছুঠছে। খুলনা যুব-উন্নয়নে রয়েছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, পোল্ট্রিখামারসহ গবাদি পশুর খামার, মৎস খামার, দর্জি সহ অসংখ্য প্রশিক্ষণের সু-ব্যবস্থা এদিকে কোন তরুণের আগ্রহ নেই। তাদের ইচ্ছা যে সরকারী চাকুরী। যেকারণে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। এজন্য আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবক ছাড়াও পাড়া-মহল্লায় এমনকি মসজিদে ইমাম এর মাধ্যমে যুব উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তাদেরকে আত্মবিশ^াসি করে তুলতে হবে। কথায় আছে “অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা” বেকার থাকলেই তারা অপরাধে জড়িয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে খুলনা যুব-উন্নয়নের উপঃ পরিচালক মোঃ মোস্তাক উদ্দিন বলেন, আমরা নিয়মিত আগ্রহী বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। তাদেরকে আর্থিক সহযোগীতা ও করা হচ্ছে। এখানে কারিগরি প্রশিক্ষণসহ কোয়েল পাখি পালন, হাস-মুরগী পালন, মৎস খামার, বুটিক প্রশিক্ষণ, পোশাক তৈরি ইলেকট্রনিক প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, মোবাইলফোন সহ কৃষি প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের যাতায়েত খরচ সহ আর্থিক সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তবে এর মধ্যে কতিপয় যুবকরা আসে শুধু প্রশিক্ষণ শেষে নগদ অর্থ নিতে। আর অর্থ নেয়ার পর আবারও তারা নিস্ক্রিয়। তথ্যমতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরে্যা(বিপিএস) -২০২২ সালে জনশুমারি ও গৃহগণনা এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে সারাদেশে ১ কোটি ২৯ লাখের মত নিস্ক্রিয় তরুণ আছে। তবে শ্রম শক্তি জরিপ অনুযায়ী রয়েছে ফলাফলের পার্থক্য যার মধ্যে খুলনায় নিস্ক্রিয় তরুণ আছে ৩৯ দশামিক ৬৬ শতাংশ।