স্থানীয় সংবাদ

ভরা মৌসুমেও সবজির দাম বাড়তি!

দাম বাড়তির অভিযোগ বাজারে আসা ক্রেতাদের

মোঃ আশিকুর রহমান ঃ ভরা মৌসুমেও বাজারে সবজির দাম বাড়তির অভিযোগ জানিয়েছেন একাধিক ক্রেতাগন। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিগত কারণে প্রতিবছরই অনেক কৃষকই অতিরিক্ত মুনাফার আশায় চাষ করে অগ্রীম শীতকালীন সবজির। যে কারণে শীত জেঁকে বসার আগেই বাজারে হাজির হয় অগ্রীম শীতকালীন সবজি। যার দরুন ওই সময়ে বাজারে অগ্রীম হাজির হওয়া শীত সবজির অনেকটাই দাম চড়া থাকে। তবে সময়ের পরিবর্তনে একদিকে শীত কমতে থাকে, অন্যদিকে বাজারে সরবরাহ বাড়তে থাকে সবজির। সবজির দামও নাগালে চলে আসে ক্রেতা সাধারনের। কিন্তু, বর্তমান সবজির বাজারে শীতকালীন সবজির যথেষ্ট সরবরাহের পরও সবজির দাম বাড়তি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা নগরীর বিভিন্ন পাইকারী বাজার হতে যে দামে সবজি সরবরাহ করে থাকেন, খরচ-খরচা বাদ দিয়ে সামান্য লাভে খুচরা বাজারে বিক্রি করে থাকেন। প্রথমে মুকাম, মুকাম হতে আড়ৎদার, আড়ৎদার হতে পাইকারী ব্যবসায়ী এবং সর্বশেষ পাইকারী ব্যবসায়ী হতে খুচরা ব্যবসায়ীর হাত ঘুরে ক্রেতাদের হাতে। কয়েকটি স্তর ঘুরতে ঘুরতে বেড়ে যায় সবজির দাম। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পায়ে থাকেন না বলে জানা গেছে।
বাজারে আসা ক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রতিবছরই মাঘের শেষে শীতের সবজির দাম তেমন থাকে। বিগত দিনে দেখেছি এই সময়ে বাধাকপি গবাদী পশুর খাবার হিসাবে কিনে নিয়ে গেছে অনেক খামারীরা। কিন্তু বর্তমানে শীতের বিদায় ঘটলেও বাজারে দৃশ্যমান সবজির দাম বেশ চড়াও বলে জানিয়েছেন তারা। বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলেও দাম স্বাভাবিক নয়। প্রতিটি সবজির দাম বিগত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি ১৫/২০ টাকা বেশি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত খাড়া করে বিক্রি করছেন। বুধবার ( ৭ ফেব্রুয়ারী) সবজির খুচরা বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ৫০/৫৫ টাকা, বতিসীম ৭০ টাকা, সীম ৫০, মেটে আলু ৬০, মটরশুটি ১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০/৬০ টাকা, ফুলকপি ৩০/৩৫ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, ওলকপি ৩০ টাকা, পাতা কপি ২৫ টাকা, বিট কপি ৪০ টাকা, লালশাক ৪০ টাকা, ঘি কাঞ্চন শাক ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পেপে ৩০ টাকা, খিরাই ৬০ টাকা, গাজর ৪০/৫০ টাকা, কচুলতি ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, কুশি ৮০ টাকা, এছাড়া পেয়াজ ১০০ টাকা, রসুন দেশি নতুন ১৬০ টাকা, পুরাতন ২৮০ টাকা, চায়না ২৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা পারভেজ বখতিয়ার জানান, শীত বিদায় নিচ্ছে, ইতোমধ্যে গরমের আভাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারে শীত সবজির যথেষ্ট আমদানী, তারপরও দাম বেশি। প্রতি বছর এই সময়ে ১৫/২০ টাকার মধ্যে সবজির দাম চলে আসে। তবে বাজারে এখনো সবজির যথেষ্ট দাম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের নিকট হতে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অপর ক্রেতা ইজিবাইক আফজাল জানান, ভাড়া ৫ টাকা বাড়লে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়, সবজির যে এতো দাম তা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। সবজি ও মাছ, মাংস সবকিছুর দাম বেশি। আমরা সাধারণ নি¤œ আয়ের মানুষ যাবো কোথায়? বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। সবজি ব্যবসায়ী রাসেল জানান, অনেক কৃষকই এখন পেশা বদল করছে। অনাগ্রহী উঠছে কৃষি কাজে। তাই ক্রমশই ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ফসল উৎপাদন না হওয়ার চাহিদা সংকটে সবজির দাম এমনতেই বাড়বে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button