যশোরে কারখানায় চুরির অপবাদে যুবককে নির্যাতন করে হত্যা
যশোর ব্যুরো : যশোর সদরের সতীঘাটায় আরো একটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফয়জুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবককে চুরির অপবাদে কারখানায় আটকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে সদর উপজেলার সূতীঘাটার আব্দুল্লাহর কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফয়জুল ইসলাম সতীঘাটা তোলাগোলদার পাড়ার জালাল উদ্দীন গাজীর ছেলে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার ১১ ফেব্রুয়ারী বিকেলে সুতিঘাটায় লাশ নিয়ে মিছিল হয়েছে। পুলিশ আব্দুল্লাহসহ ৫ জনকে হেফাজতে নিয়েছে। কিন্তু পুলিশ স্বীকার করেনি।
নিহত আব্দুল্লাহর চাচাতো ভাই মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ফয়জুল সুতিঘাটা ভৈরব টু ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে। শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারী কাজ শেষ করে বাড়ি আসে। সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে সুতিঘাটা বাজারে যায়। এরপর ফয়জুলের আর কোন সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। বাড়ির লোকজন ফয়জুলকে খোঁজাখুজি করে কিন্তু তার সন্ধান পায় না। শনিবার দিবাগত রাত ৪ টার দিকে বাড়ির লোকজন খবর পায় ফয়জুলকে চুরির অপবাদে কানাইতলায় আব্দুল্লার কারখানায় আটকিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার সাথে আব্দুল্লাহ তার তিন ছেলে ও কর্মচারি জড়িত। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন ও স্বজনরা ওই কারখানায় গেলে তাদেরকে ঢুকতে দেয়া হয় না। পরে থানায় খবর দেয়া হলে রোববার ১১ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ টার পুলিশ যেয়ে লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়জুলকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে চুরির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে তার পরিবারের লোকজন।
যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ফয়জুল চুরি করতে গিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। কিন্তু তাকে পুলিশে না দিয়ে কয়েকজন মিলে মারপিট করে। এতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফয়জুল মারা যান। এ ঘটনা আব্দুল্লাহসহ ৫ জনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ স্বীকার করেনি। এ ঘটনায় নিহত ফয়জুলের পিতা জালাল উদ্দিন গাজি রোববার দুপুরে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আব্দুল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেটা মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি। ফয়জুলের মামলা নিয়ে পুলিশ তালবাহানা করছে। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত ফয়জুলকে বাঁচাতে পুলিশ দেনদরবার শুরু করেছে। যে কারণে তাকে বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ড করার পরিকল্পনা করছে বলে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ। এদিকে ফয়জুল হত্যার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে এলাকাবাসি রামনগরের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে লাশ নিয়ে মিছিল করে।