স্থানীয় সংবাদ

পহেলা ফাগুন আর ভালোবাসা দিবসে খুলনায় কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট : বই মেলায় নানা প্রস্তুতি

ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বুধবার পহেলা ফাল্গুন। বাংলার ঋতু রাজ এই বসন্ত। ঝড়ে পড়া গাছে নতুন করে পাতা গজাতে শুরু করবে। দেখা মিলবে সবুজের বাংলাদেশ। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলার চির বসন্ত পহেলা ফাগুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে খুলনার ফুল মার্কেটে লেগেছে ব্যস্ততার ছোঁয়া। ক্রেতার হাতে তরতাজা ফুল পৌঁছে দিতে এরই মধ্যে তোড়জোড় শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। এবারও পহেলা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে অন্তত কোটি টাকার ফুল বিক্রির পরিকল্পনা করছেন ব্যবসায়ীরা। এখন ফুল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ফারাজীপাড়া ফুল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, খুলনা মহানগরীর সবচেয়ে বড় ফুলের মার্কেট এটি। মোট দোকান ১৩টি। বরাবরের মতো বেশি বিক্রি হচ্ছে গোলাপ, গাঁদা ও রজনীগন্ধা। এছাড়াও বিক্রি হচ্ছে গ্যাডিউলাস, অর্কিট, জরবেরা, ভূট্টা, ইউলেস্টার ও জিপসি।ফারাজীপাড়ার ফুলের দোকানগুলো সেজেছে বসন্ত বরণ ও বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে। এছাড়া দৌলতপুর, খালিশপুর ও বয়রায় ফুলের দোকানেও একই রকমের আয়োজন। বেচা কেনাও জমে উঠেছে। তবে দাম অনেক বেশি থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এম রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, এবার ফুলের দাম অস্বাভাবিক বেশি। ফুল কিনতে কষ্ট হচ্ছে। ফারাজীপাড়ার ‘বিয়ের ফুল’ নামে দোকানের মালিক শেখ মো. নাসিম কচি বলেন, খুলনায় এবার কোটি টাকার বেশি ফুল বিক্রির টার্গেট আছে ব্যবসায়ীদের। এবার ফুলের দাম অনেক বেশি। যশোরের গদখালী বাজার থেকে ১০০ গোলাপ ৩ হাজার ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ভালো মানের গোলাপ ১০০টি ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। এছাড়া মার্কেটে ভারতীয় গোলাপ ঢুকেছে যার একটি ফুলের দাম ১৫০ টাকা। ১২ পিস অর্কিট কিনতে হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। আমরা যেভাবে বেশি দামে কিনেছি, সেভাবেই বিক্রি করতে হচ্ছে। স্বপ্ন ছোঁয়া ইভেন ম্যানেজমেন্টের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আশিক বলেন, ফুল বিক্রি জমে উঠেছে। বেশি চলছে গোলাপ ও গাঁদা ফুল। তবে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার ফুলের দাম বেশি।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে খুলনা বয়রা বিভাগীয় গণগ্রন্থগার প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে মাস ব্যাপী একুশে বই মেলা। ইতোমধ্যে বই মেলা জমে উঠেছে। স্টল মালিকরা পহেলা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে বরণ করে নিতে নানা প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা নতুন নতুন বই স্টলে থরে থরে সাজিয়েছেন। আসফিয়া লাইব্রেরী স্টলের প্রতিনিধি কেএম তুহিন বাবু বলেন, আজ ঐতিহ্যবাহী দু’টি দিবস। এ দিবসে লেখক-লেখিকা, পাঠক-পাঠিকা, তরুণ-তরুণীরা মেলা ভীড় করবে। দিনটি মনে করে রাখার জন্য মেলায় এসে তারা একে অপরকে কিনে দিবে বই। আর সেই পছন্দের বই বিক্রির করার জন্য স্টল মালিকরা নানা প্রকার বই সাজিয়ে রেখেছে। আফসার ব্রাদার্স স্টলের প্রতিনিধি ফিরোজ মৃধা বলেন, হাসি-আনন্দের এ দু’টি দিবস একই দিনে হওয়ায় এর মূল্য অনেক। এক ঢিলে দু’ পাখি মারার সুযোগটা অনেকেই হাত ছাড়া করতে চাইবে না। ভালবাসার মানুষটি সুন্দর উপহার হিসেবে প্রেমের গল্পের বই কিনে দিতে কেউই যেন কার্পণ্য করবে না। কারণ পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল বন্ধুর নাম বই। তিনি বলেন, বিখ্যাত লেখক হুমায়ুন আহমেদের ‘অপেক্ষা’ উপন্যাস বইটি প্রেম-প্রেমিকরা লুফে নিবে। সে জন্যই এ বইটি অনেক বেশী সংগ্রহে রেখেছি। যাতে কোন কোন পাঠক তার স্টল থেকে ফিরো না যায়। বিশিষ্ট কবি রূপা বাড়ৈই বলেন, এ দু’টি দিবস আসলে মনের ভিতর আনচান করে। জুটি বেধে সবাই মেলায় আসবে, তারা তাদের পছন্দসই প্রেমের গল্প-কবিতার বই কিনে উপহার দিবে-এমনটাই আশা তার। বিভাগীয় গণগ্রন্থগারের উপ-পরিচালক ও বই মেলা কমিটির সদস্য সচিব মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, ওই দু’টি দিবস বরণ করে নিতে খুলনার বই মেলা সারা দিন খোলা থাকবে। মেলার মূল মঞ্চে থাকবে ভাল ভাল অনুষ্ঠানমালা। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বাড়ানো হবে বলে তিনি জানান।
এছাড়া খুলনায় ৩০টি সংগঠনের আয়োজনে বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আজ বুধবার। আব্বাসউদ্দীন একাডেমির আয়োজনে নগরের ঐতিহ্যবাহী শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন বিকেল ৪টায় সব সংগঠনের সমবেত পরিবেশনা ‘ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল’ গানের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button