বাগেরহাটে জেএমবি’র ৯ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-

বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতে মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর ৯ জন সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছে বাগেরহাটের একটি আদালত। বাগেরহাটের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ড. মো. আতিকুস সামাদ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। জঙ্গি সদস্যদের রায়কে ঘিরে এদিন বাগেরহাট আদালত পাড়ায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দন্ডপ্রাপ্তরা হলো আকাশ মোল্লা ওরফে বাবু, মোঃ কবিরুল, মোঃ হাবীবুল্লাহ ও মিজানুর রহমানকে তিনটি ধারায় ৮ বছর করে কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। অপর আসামী, জহিরুল ইসলাম, মাকসুদুর রহমান ওরফে তোতা ও মোর্শেদ আলমকে ৫ বছর করে কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয় এবং সাইফুল ও তরিকুল ইসলামকে পৃথক দুটি ধারায় ২ বছর করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আসামীদের বাড়ি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবারন ও রায় বিষয়ে আদালত সুত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার খলিশাখালী এলাকার সাফায়েত শেখের বাগানের পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘরে অবস্থান নেয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতে মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্যরা। তারা সরকার বিরোধী নাশকতার উদ্দেশ্যে এ অবস্থান নেয়ার খবর পুলিশ গোপণে পেয়ে রাতেই সেখানে অভিযানে গেলে জেএমবি সদস্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যাওয়া চেষ্টা করে। পুলিশ গুলি ছুড়ে তাদের ধাওয়া করে ৪ জনকে গেপ্তার করে। বাকিরা পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি রিভলবার, চারটি হাত বোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, কম্পিউটারের হার্ডডিক্স ও সংগঠনটির বেশকিছু জিহাদি বই জব্দ করে পুলিশ। এই ঘটনায় কচুয়া থানার এসআই আনসার উদ্দিন খান বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেন। কচুয়া থানার তৎকালীন পরিদর্শক হুমায়ুন কবির খান তদন্ত শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ১১ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ১৩ জনর স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ড. মো.আতিকুস সামাদ আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন। রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. শহীদুজ্জামান বলেন, রায়কে ঘিরে আদালত পাড়ায় নেয়া হয় বাড়তি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আসামীদের বিরুদ্ধে কি রায় হয় তা জানতে শতশত মানুষ এজলাসের সামনে ভিড় করেন। রায় ঘোষণা শেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আসামীদের বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। আসামী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খান মোহাম্মদ বাদশা ও সাহেবুর রহমান।