অবৈধ বিজ্ঞাপন প্রদর্শনকারি ৩৩৮ তালিকা জেলা টাস্কফোর্স কমিটির হাতে

আইন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট
স্টাফ রিপোর্টার ঃ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী তামাকজাত দ্রব্যের সকল প্রকার বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ। সাতক্ষীরা পৌরসভার আওতাধীন এলাকায় পরিচালিত তামাকজাত দ্রব্যের অবৈধ বিজ্ঞাপনের একটি প্রতিবেদন এইড ফাউন্ডেশনের পক্ষথেকে প্রকল্প কর্মকর্তা, কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল হক, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সাতক্ষীরা, মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এর নিকট হস্তান্তর করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিটাল জরিপের মাধ্যমে দেখা গিয়েছে শহরে মোট ৩৩৮ টি দোকানে অবৈধভাবে বিজ্ঞাপণ প্রদর্শিত হচ্ছে। সমীক্ষায় সাতক্ষীরা পৌরসভায় মোট ৩৩৮ জন তামাক বিক্রেতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকেরই প্রাসঙ্গিক বিবরণ রয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে, এটি পাওয়া গেছে যে পৌরসভা পৃথক তামাক বিক্রেতার লাইসেন্সিং শুরু করেনি। ঞঅচঝ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন ব্যাপক ছিল, ৩৩৭ টি ব্যানার, ৩০৩টি স্টিকার, ২২২টি লিফলেট, ১০৩টি প্যামফলেট এবং ১৮টি ক্যাশ বাক্স যাতে তামাকের বিজ্ঞাপন রয়েছে। অধিকন্তু, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে ১৮৬টি বিক্রয় কেন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে এবং ৪৭টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে। বাজারে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুল, সাদাপাতাসহ বিভিন্ন তামাকজাত পণ্য শনাক্ত করা হয়। সিগারেট সবচেয়ে বেশি ছিল, যেখানে ৩৩৩টি দোকান সেগুলি বিক্রি করে, তারপরে ২৮৪টি দোকানে বিড়ি বিক্রি হয়। এই সকল অবৈধ বিজ্ঞাপণ ব্যবহারের মাধ্যমে তামাক কোম্পানীসমূহ প্রধাণত কিশোর ও যুব সমাজকে টার্গেট করছে। তাদের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার বিশেষকরে সিগারেট সেবনের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে। যা আমাদের যুব সমাজকে তামাকের কালো থাবায় আচ্ছাদিত করছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় ২০২০ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এবং সংশোধনী ২০১৩ বাস্তবায়নে, একটি নির্দেশিকা পাশ করেছে। এই নির্দেশিকাটিতে, তামাক নিয়ন্ত্রণের বেশিরভাগ বিষয়ই গুরুপ্তারোপ করা হয়েছে। উপরন্তু, স্থানীয় সরকার আইন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গাইডলাইন অনুসারে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়কেন্দ্রের জন্য পৃথক লাইসেন্স প্রদান; অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নিকট তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য কোন লাইসেন্স প্রদান না করা; হোল্ডিং নম্বর ব্যতিত কোন প্রকার তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রকে লাইসেন্স প্রদান না করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রর্দশন না করা এবং স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ছাড়া তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতাদের লাইসেন্সিং এবং ট্যাপ্স নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের প্রকৃত চিত্র চিহ্নিত করতে সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় ডিজিটাল জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। ভাইটাল স্ট্রাটেজির এর আর্থিক সহযোগীতায় ও এইড ফাউন্ডেশন এর প্রোকল্পের আওতায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের স্থানীয় সংগঠন মৌমাছি, সাতক্ষীরা পৌরসভা ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন গঠিত সাতক্ষীরা জেলা টাক্সফোর্স কমিটির সার্বিক সহযোগীতায় গত জুন ২০২৩ খ্রিঃ থেকে সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় পরিচালিত হয়েছে তামাকের, বিজ্ঞাপন, প্রমোশন ও স্পন্সরশীপ বিষয়ক ডিজিটাল জরিপ। জরিপের আওতাধীন সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় যেসকল দোকানে তামাক কোম্পানীর অবৈধ বিজ্ঞাপণ প্রদর্শিত হচ্ছে তার অপরাধ প্রতিবেদন তালিকা প্রণয়ন করা হয়। জরিপের লক্ষ্য অনুসারে, সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় যে সমস্ত দোকানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় হয় সেখানে কী ধরণের অবৈধ বিজ্ঞাপণ প্রচার হচ্ছে সেটি তালিকাভুক্ত করা হয়।
সামগ্রিকভাবে তামাক কোম্পানীর বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতে সকল ওয়ার্ড গুলোকে পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত। জরিপ কার্যক্রমের এই তালিকাটি সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় তামাকজাত পণ্যের অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধে সহায়তা করবে এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তামাক নিয়ন্ত্রণের গাইডলাইন অনুসারে লাইসেন্সিং কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি সাতক্ষীরা জেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন টাক্সফোর্স কমিটির উদ্যোগে সম্মিলিতভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন ও প্রচার প্রচারণা রোধে এই জরিপের রিপোর্ট অনুসারে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট কার্যকর করা হবে।