স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় ধর্মীয় ভাবগার্ম্ভীযে শবে বরাত পালিত

গুনাহ্ হতে মুক্তির জন্য রাতভর ইবাদত : কবরবাসীর জন্য দোয়া

মোঃ আশিকুর রহমান ঃ খুলনায় ধর্মীয় গার্ম্ভীযের সাথে যথাযোগ্য মর্যদার মধ্যে মুসলিম উম্মেহার জগতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ন দিন শব-ই-বরাত পালিত হয়েছে। মুসলিম উম্মার কাছে সৌভাগ্যের রজনী শব-ই-বরাত। এ রাতে মহান রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। মহান রব্বুল আলামিনের রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ) দিবাগত রাতে ধর্মপ্রান মুসল্লিরা আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকিরসহ অন্যান্য ইবাদত পালন করেছেন। একই সাথে কবরবাসী পিতা-মাতা, আত্মীয় স্বজনের মাগফেরাত ও ক্ষমার জন্য কবরস্থানে গিয়ে বিশেষ প্রার্থনাসহ কান্নাকাটি করেন।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ) পবিত্র শব-ই-বরাত উপলক্ষ্য নগরীর শিববাড়ী, ডাকবাংলা, সোনাডাঙ্গা, ময়লাপোতা, রুপসা, বয়রা, বৈকালি, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেলিগেট, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি, আটরা, ফুলতলাসহ নগর ও নগরীর স্থানীয় এলাকাগুলোর মসজিদে বিভিন্ন সময়ে ইসলামী আলোচনা ও বিশেষ দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ করে বাদ এশা ওই সকল এলাকার অধিকাংশ মসজিদ গুলোতে শব-ই-বরাত উপলক্ষ্যে ইসলামী আলোচনা করেন স্ব-স্ব মসজিদের ইমামগন। আলোচনা শেষে কবরবাসীর জন্য এবং মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিনের নৈকট্য প্রাপ্তির ও ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিশেষ দোয়া মোনাজাত হয়। একই দিনে মসজিদ গুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত মুসল্লীগণ নফল নামাজ, কোরআন তোলোয়াত, তজবি তাহলিল, জিকিরে কাটিয়েছেন। ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর গোয়ালখালী, টুটপাড়া, কৃষি কলেজ, মহেশ^রপাশা (সাড়াডাঙ্গা) কবরস্থানে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সী মানুষ তাদের হারানো প্রিয় বাবা-মা, আত্মীয় স্বজনের মাগফেরাত ও ক্ষমার জন্য দারস্থ হতে। ওই সময় তারা কান্নারত অবস্থায় মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কথা হয় কৃষি কলেজ সংলগ্ন দেয়ানা সরকারী কবরস্থানে পিতার কবর জিয়ারত করতে আসা ইঞ্জিরিয়ার পারভেজ বখতিয়াতের সাথে। তিনি জানান, বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর হলো। প্রতিবছরের বিশেষ এই দিনটিতে বাবার কবর জিয়ারত করতে আসি। এছাড়াও মাঝে মধ্যে বাবার করবখানাটি দেখভাল করার জন্য আসি। শব-ই-বরাত ভাগ্যে নির্ধারনের রাত বলে জেনে আসছি। তবে আমলের উপর সব নির্ভর। আল্লাহ যেন বাবাকে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের মেহমান করে নেন, পাশাপাশি আমাদের সকলের গুনাহ মাফ করে দেন এটাই কামনা। আবরার হাসনাত আরিক জানান, মসজিদে এসেছি নামায আদায় করতে। নামায আদায় শেষে দাদার কবর জিয়ারত করতে গিয়েছি। দাদা ৫ বছর হলো আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে গেছেন। দাদা নামাজি মানুষ ছিলেন। আমিও যেন দাদার মতো নামাজী মানুষ হতে পারি এক কামনায় করি মহান আল্লাহপাকের কাছে। বৃদ্ধ মুসল্লি মালেক জানান, জীবনের অধিকাংশ সময় পার করে দিয়েছি। জানি না কখন মৃত্যু আসবে। সব সময় মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে চলা উচিত। মসজিদে এসেছি নামায আদায় করতে। তবে দুঃখ জনক আমরা ফরজ নামাজ বাদ দিয়ে অন্য ইবাদত নিয়ে টানা হেচড়া করি। সকলের উচিৎ পাচ ওয়াক্ত নামায় আদায় করা, পাশাপাশি আল্লাহর সকল ফরজ ইবাদত আগেই পালন করা। হাফেজ মাওঃ হারুনুর রশীদ জানান, মুসলমানদের সমগ্র কর্মই ইবাদত, যদি তা সঠিকভাবে পালন করা যায়। নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হলো তাহাজুতের নামাজ। শব-ই-বরাতের রাতে অনেকেই সারা রাত নফল নামাজ পড়ে ফজরের নামাজ কাযা করে ঘুমিয়ে পড়েন। তাহলে সারা রাত জেগে ইবাদত করাটাই বৃথা, সুতরাং, আগেই আমাদের মহান রব্বুল আলামিনের ফরজ হুকুম পালন করা উচিত। অতঃপর নফল।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button