২৯ ফেব্রুয়ারি যশোর পৌরসভায় স্মারকলিপি ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষণা

ধার্য্য করা অযৌক্তিক বিলের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে পৌর নাগরিকগন
যশোর ব্যুরো : নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপন করা সাবমার্সিবল পাম্পের ওপর যশোর পৌরসভা কর্তৃক মাসিক ৩শ টাকা হারে কর জারির প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে যশোর পৌরসভার সব পেশার নাগরিকগন। পৌরসভা থেকে নাগরিক সেবার কোন কিছুই তো পাচ্ছে না, উল্টো নানা ট্যাক্সের আওতায় নাগরিকদের বন্দি করা হচ্ছে। পৌরসভা রীতিমতো ট্যাক্স নির্যাতন শুরু করেছে অব্যাহতভাবে। মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারী বিকেলে প্রেসক্লাব যশোরে পৌর নাগরিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় নাগরিকরা এই মন্তব্য করেন। পানি কর, পানির বিলের সাথে সাবমার্সিবলের অযৌক্তিক বিল ধার্য্য করার প্রতিবাদে পৌর নাগরিকদের মতবিনিময় সভায় বিক্ষুব্দ নাগরিকরা বলেছেন, পৌর নাগরিকদের সাথে কোন আলোচনা না করে ট্যাক্স বসানো হচ্ছে। পৌরসভা সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। কোন সেবা সেখান থেকে পাওয়া যায়না। রাস্তাঘাট গুলো দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে আছে। এমনও রাস্তা আছে গত ২০ বছরের মধ্যে কোন মেরামত হয়নি। একটু পানি হলে নাগরিকদের বাড়িতে বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। ভেলায় করে পারাপার হতে হয়। বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। ড্রেনগুলো অকেজো হয়ে আছে। ময়লা আবর্জনা নিস্কাসনের জন্য ডাষ্টবিন ব্যবস্থা নেই। পৌরসভার অনেক পাম্প ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে আছে। ঠিকমতো পানি সরবরাহ পাওয়া যায় না। যে পানি সরবরাহ করা হয় তা ব্যবহার অনুপযোগি। পানির গতি নেই। কিন্তু পানির ৯ ভাগ কর আছে। সাধারণ নাগরিক বাধ্য হয়ে নিজ খরচে সাবমার্সিবল স্থাপন করেছে। এখানে পৌরসভার কারিগরি কোন সহযোগিতা নেই। উল্টো নাগরিকদের প্রতিমাসে ৩শ’ টাকা দিতে হবে। কেন এই বিল? কী কারনে এই বিল? নাগরিকরা বলেছেন, একেতো নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে মানুষ দুর্বিসহ। তারওপর নতুন করে পৌর ট্যাক্স অ্যাসিসমেন্ট চলছে। ফের নতুন করে ট্যাক্স বসানো হবে।
বক্তারা বলেছেন, নাগরিকরা ট্যাক্স দেবে। কিন্তু তার সেবা দিতে হবে। সেবা দিবে না আবার ট্যাক্স ধার্য্য করবে এটা হবে না। আগামী ২৯ তারিখের মধ্যে নতুন ধার্য্যকৃত ৩শ টাকা হারে বিল পরিশোধের চিঠি দেয়ার হয়েছে। ওই বিল নাগরিকরা দেবে না। বরং বিল না কমালে সব ধরনের ট্যাক্স দেয়া বন্ধ করে দেয়া থেকে বিরত থাকবে নাগরিকরা। মতবিনিময় সভায় বলা হয়, আগামী ২৯ তারিখ এই ট্যাক্স বসানোর প্রতিবাদে পৌরসভা চত্ত্বরে নাগরিকরা অবস্থান নেবে। এবং মেয়রকে স্মারকলিপি দেয়া হবে। পৌরসভা কর্তৃক এই বিল বাতিল না করলে পরবর্তীতে আন্দোলন সংগ্রাম করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শওকত আলী খানকে আহবায়ক এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জিল্লুর রহমান ভিটুকে সদস্য সচিব করে যশোর পৌর নাগরিক কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির দাবি গুলো হলো, ৩শ টাকা বিল বাতিল করতে হবে, সাপ্লাইয়ের পানি নিশ্চিত করা না হলে পানির বিলসহ কর বাতিল করা হবে, পানির বিলের ১০ ভাগ কর বাতিল করতে হবে এবং অস্বভাবিক পৌর কর বাতিল করতে হবে। সভায় সভাপতিত্ব করে ব্যবসায়ী শওকত আলী খান। বক্তব্য রাখেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী মাহমুদ রেজা, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রেজাউল ইসলাম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামরুজ্জামান, তৌহিদ জামান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জিন্নাত আলী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মফিজুর রহমান রুননু, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জিল্লুর রহমান ভিটু, কাজী আশরাফুল আজাদ, নাসির উদ্দিন সেফার্ড, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শাহীন ইকবাল, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাসান হাফিজুর রহমান, নাসির উদ্দিন লিপু প্রমুখ। অনুষ্টানটি সঞ্চালন করেন যশোরের বিশিষ্ট পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও রাজনীতিক ইকবাল কবির জাহিদ।