স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় এনএসআই পরিচয়ে ভয়ানক প্রতারক গ্রেফতার

কেএমপি পুলিশের প্রেস ব্রিফিং

সে নিজেকে এনএসআই, ডিজিএফআই, পুলিশ কর্মকর্তা ও বিসিএস কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে শতাধিক মেয়ের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছে, তার ভাই কাঠালিয়ার নামকরা ডাকাত ও সে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য

স্টাফ রিপোর্টার ঃ চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী ও অবৈধ কাজে লিপ্ত ভুয়া এনএসআই কর্মকর্তা বিপ্লব বড়ালকে (৩২) গ্রেফতার করেছে খুলনা থানা পুলিশ। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ১৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার কেএমপি’র সদর দপ্তরস্থ সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রকিবুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এর আগে শুক্রবার ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার বিল ছোনাওঠা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে ঝালকাঠি জেলার বিল ছোনাওঠা গ্রামের ধীরেন বড়ালের ছেলে। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, বিপ্লব বড়াল একজন প্রতারক এবং সে নিজেকে এনএসআই, ডিজিএফআই, পুলিশ কর্মকর্তা ও বিসিএস কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাদের সঙ্গে অনৈতিক কাজ এবং কুরুচিপূর্ণ ছবি ও ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে আসছিল। উক্ত কুরুচিপূর্ণ ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অবৈধ শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনসহ তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও নগদ অর্থ আত্মসাৎ করাই তার মূল পেশা। সে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কানাইদিয়া গ্রামের তরুণী দুর্বা দাশের সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নগদ ১ লাখ টাকাসহ ৬ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়। গত ৬ মাস আগে বিপ্লব বড়ালের সঙ্গে মেয়েটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আসামি বিপ্লব বড়ালের সঙ্গে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা করে। পরবর্তীতে বিয়ের জন্য চাপ দিলে দুর্বাদাশ ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জীবননাশের হুমকি দেয়। এছাড়া টাকা এবং স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে দুর্বাদাশ বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন যে, বিপ্লব বড়াল জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) কোনো কর্মকর্তা নয়, সে একজন প্রতারক। সে এনএসআইয়ের ভুয়া কার্ড প্রদর্শন করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন সময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সুকৌশলে অর্থ আত্মসাত করেছে। এ ঘটনায় ওই প্রতারকের নামে মামলা দায়ের করেন দুর্বাদাশ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রকিবুল ইসলাম জানান, বিপ্লব বড়াল প্রতারণার মাধ্যমে জয়ন্ত ফকিরের কাছ থেকে নগদ ৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা, এবং দেবাশীষ রায়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিপ্লব বড়ালের বিরুদ্ধে ২ টি মামলা রয়েছে। তার বড় ভাই মনা বড়াল একজন পেশাদার ডাকাত। তার বিরুদ্ধে কাঁঠালিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় ৪ টি মামলা রয়েছে। তারা দুই ভাই আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button