রিক্সা-ভ্যান উচ্ছেদ বন্ধ করাসহ ৪ দফা দাবিতে স্মারকলিপি

খবর বিজ্ঞপ্তি : বিকল্প কর্মসংস্থান ছাড়া খুলনা নগরীতে ব্যাটারী রিক্সা-ভ্যান উচ্ছেদ এবং গ্যারেজে হয়রাণি বন্ধ করা, আটককৃত গাড়ি ব্যাটারি-মোটরসহ ফেরত দেয়া, প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারীচালিত রিক্সার লাইসেন্স প্রদান করা, বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দ্বারা রিক্সার জন্য যথোপযুক্ত ডিজাইন প্রণয়ন করা এবং সেই ডিজাইনের রিক্সা নির্মাণ করার জন্য উপযুক্ত সময় দেয়া, প্রয়োজনে অফিস চলাকালীন নগরীর প্রধান ২/৩টা সড়ক চিহ্নিত করে ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা এবং এই সময়ে শুধুমাত্র সেসব রাস্তায় একপাশ থেকে আরেক পাশে রিক্সা পারাপার হতে দেয়া ও বাকি সব রাস্তায় এই রিক্সা চলতে দেয়ার দাবিতে গতকাল বেলা ১১টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে রিক্সা, ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ এবং রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা মহানগর কমিটি। এ সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রিক্সা-ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ খুলনা মহানগর কমিটির আহবায়ক আলমগীর হোসেন বাবু ও সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব জনার্দন দত্ত নাণ্টু। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রিক্সা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা মহানগর আহ্বায়ক এইচ এম শাহাদাৎ, সদস্য এস এ রশীদ, মিজানুর রহমান বাবু, সংগ্রাম পরিষদ খুলনা মহানগর কমিটির কোষাধ্যক্ষ কোহিনুর আক্তার কণা, সদস্য আব্দুল করিম, মানিক মিয়া, হারুনুর রশীদ, মোঃ সেলিম, রিক্সা শ্রমিক নেতা আবু সাঈদ, রাহাত আহমেদ, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল আলিম, আলমগীর হোসেন, মোঃ ইয়াসিন, নাণ্টু হাওলাদার, মোঃ হান্নান প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী বরাবর তাদের দাবি উত্থাপন করে বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় ব্যাটারিচালিত রিক্সাকে আরো আধুনিকায়নের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দ্বারা বিজ্ঞানসম্মত ডিজাইন করা এবং এগুলোর রেজিস্ট্রেশন ও চলাচলের নীতিমালা করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছি। সরকার অথবা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে আধুনিক ডিজাইনের রিক্সা আমাদের কাছে প্রস্তাব করলে আমাদের মেকানিকরা তা নির্মাণ করতে পারবে। যৌক্তিক সময় দিলে আমরা বর্তমান গাড়ি পরিবর্তন করে সেই গাড়ি নির্মাণ করে নিতে পারব। এছাড়া যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ‘থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০২১ নামে একটি খসড়া নীতিমালা করেছে যা চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল মাননীয় হাইকোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মহাসড়ক ব্যতীত সর্বক্ষেত্রে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার বাহন চলতে দেয়ার ব্যাপারে রায় দিয়েছেন। এক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ নিলে সারাদেশে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের নিরাপদ কর্মসংস্থান হবে। আমরা আরও মনে করি, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিবন্ধন, রুট পারমিট, লাইসেন্স দেয়ার ব্যবস্থা চালু হলে সড়কে শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এর ফলে সরকার পাবে রাজস্ব, সড়কে আসবে শৃঙ্খলা আর চালক-মালিকরা পাবে স্বস্তি। আমরা ইতোমধ্যে গণমাধ্যম মারফত জানতে পেরেছি প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী বলেছেন, সরকার সারাদেশে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ ব্যাটারিচালিত রিক্সা লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই লাইসেন্স যেন প্রকৃত শ্রমিকরা পায় সেটা অবশ্যই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্তমানে গ্যারেজসমূহে গিয়ে বেআইনিভাবে বৈধ বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়া এবং গ্যারেজে রাখা ব্যাটারি ও মোটরসহ সম্পদ ধ্বংস করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় খুলনা নগরীর হাজার হাজার রিক্সা শ্রমিক, মালিক, মেকানিক, যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ীর অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানানো হয়।