স্থানীয় সংবাদ

বেসরকারী হাসপাতাল গুলোতে নেই বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা

স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে খুলনাবাসী

শেখ ফেরদৌস রহমান : খুলনা নগর জেলা,উপজেলা গুলো মিলিয়ে প্রায় ৫শ শতাধিক এর মত রয়েছে বেসরকারী ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতাল। তবে এসব গুলোতে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা নেই। নগরীতে হাতে গোনা গুটিকয়েক স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পরিশোধন করা হলেও বাকি গুলোতে নেই। রোগীদের শরীরে সিরিঞ্জ ব্যবহার করে আশেপাশের বালতিতে যত্রতত্র করে ফেলে রাখা হয় এসব সিরিঞ্জ, স্যালাইন সুচ সহ বিভিন্ন সরাঞ্জামাদি। এমনকি এসব বিষয় নিয়ে কোন তদারকি করে না স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রশাসন। এতে করে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুকিঁ, দুষিত হচ্ছে পরিবেশ ছড়াচ্ছে রোগ জীবাণু। মূলত এসব বেসরকারী হাসপাতাল গুলোতে তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকা বাধ্যতামূলক হলেও খুলনায় অধিকাংশ বেসরকারী হাসপাতালে ইটিপি নেই। যে কারণে হাসপাতালের অভ্যন্তরে যত্রতত্র ব্যবহারিত সিরিঞ্জ, স্যালাইন নল, ব্লেড, কাচি, কাচের বোতল, সূচ, বর্জ্য ফেলে রাখা হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে বর্জ্যকর্মী সব ধরনের বর্জ্য একত্রে বালতি বা গামলায় সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে যততত্র ফেলে দেয়া বা প্লাস্টিক সামগ্রী হিসেবে ভাঙ্গাড়ী বানিয়ে বিক্রি করে। এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে ছড়াচ্ছে সংক্রামক জনসাধারনের চলাচলে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। এছাড়া অধিকাংশ এসব বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো মানছেনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা। এমন কি চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা। এছাড়্ া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিধি অনুযায়ী প্রতিটি ১০ শয্যা বেসরকারী হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত ৩ জন চিকিৎসক, ডিপ্লোমাধারী ২ জন নার্স ও ৩ জন সুইপার থাকা বাঞ্চনীয়। একই সাথে ৮শ বর্গ ফুট জায়গা, সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক নার্স ও সুইপার থাকতে হবে। অন্যদিকে প্যাথলজি বিভাগ চালু করতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী প্যাথলজিস্ট ও ১ জন সুইপারের পদ থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি মাইক্রোস্কোপ, ফ্রিজ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি, অপারেশন থিয়েটার ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক কিনিকগুলোর বাস্তব চিত্র ভিন্ন অধিকাংশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত চিকিৎসক না থাকলেও চুক্তি অনুযায়ী ডাক্তার ডেকে রোগীর অপারেশন বা অন্যান্য চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি নেই স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নেই কোন তদারকি। সরকারী স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে ও উন্নত চিকিৎসার প্রলোভোন দেখিয়ে সরকারী হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের কমিশন ও মাসিক বেতনভুক্ত দালাল চক্র। এ বিষয়ে শহীদ শেখ আবুনাসের হাসপাতালের (আরএমও) ডাঃ প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বেসরকারী হাসপাতালে বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ব্যবহৃত রক্তমাখা পুশ করা সিরিঞ্জ, প্লাস্টিকের স্যালাইন নল সহ অন্যান্য ব্যবহৃত সরাঞ্জামাদি যততত্র ফেলে রাখা থাকে। এগুলো মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক । এসব ব্যবহৃত সরাঞ্জামাদি ফেলে রাখলে বাড়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। আর সেই সাথে পরিবেশ দূষণ হয়। বাতাসের সাথে ছড়িয়ে পড়ে রোগ জীবাণু। এতে করে সাধারণ মানুষেরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক এ এস, এম মনিরুজ্জামান (বাবু) বলেন, মানব দেহে ব্যবহৃত এসব সিরিঞ্জ , স্যালাইন নল, ব্লেড, কাচি, কাচের বোতল, সূচ বালি তে করে যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়। এসব ব্যক্তি মালিক স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নেই বর্জ্য পরিশোধন ব্যাবস্থা। এতে করে বাড়ছে জনসাধারণের স্বাস্থ্য ঝুকি। এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর যথাযথ তদারকির করতে হবে। তবে এখনও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিষয়টি খুবই গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। এবিষয়ে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মনজুরুল মুরশিদ বলেন, আমারা বিষয়টি দেখছি। নগর , জেলা, উপজেলা পর্যায়ে এসব বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব কিছু করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button