মুমিনের দুয়ারে কড়া নাড়ছে ‘মাহে রমজান’
পবিত্র মাহে রমজানকে ঘিরে মুসলিম উম্মাহর মাঝে চলছে সাজ সাজ রব
মো. আশিকুর রহমান ঃ অত্যন্ত পবিত্র, বরকতময়, সংযম ও ধৈর্যের বার্তাবাহী মাস রমজান। নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আত্মশুদ্ধির মহিমান্বিত মাস মাহে রমজান। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিনের ফরজ হুকুম পালনে প্রতিবছরই এই পবিত্র ও অত্যন্ত বরকতময় মাসটি আসে মুসলমানদের জীবনকে পরিশুদ্ধ এবং পাপমুক্ত করার জন্য। এবারও মুমিনের দুয়ারে কড়া নাড়ছে ‘মাহে রমজান’। সম্ভব্য ১২ মার্চ (মঙ্গলবার) হতে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারক প্রথম দশক, রহমের দশ দিন। ¯্রষ্টার ফরজ হুকুম পালনে মাহে রমজানকে ঘিরে মুসলিম উম্মাহর মাঝে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। ইসলামি নীতি নির্ধারকরা বলেছেন, রমজান ইবাদতের বসন্তকাল। এ মাসে ইবাদত-বন্দেগির সওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের বারতা নিয়ে আসে রমজান। পবিত্র কোরআন নাজিলের কারণে রমজান হয়েছে সর্বশ্রেষ্ট। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ন ও বরকতময়। মানবজাতির কল্যাণ লাভসহ এ মাসে আল্লাহর অফুরন্ত রহমত ও শান্তি বারিধারা বর্ষিত হয়। মহিমান্বিত এ মাসের মাহাত্ম্য ও মর্যাদা অনেক ঊর্ধ্বে । দীর্ঘ এগারো মাস শেষে মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি ও পাপ মার্জনার জন্যই পবিত্র মাহে রমজানের আগমন।
১০ মার্চ (রবিবার) নগরীর নগরীর ডাকবাংলা, শিববাড়ী, ফেরীঘাট, নিউমার্কেট, ময়লাপোতা, সাতরাস্তার মোড়, গল্লামারী, নিরালা, জিরোপয়েন্ট, রুপসা, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি এলাকাসহ স্থানীয় এলাকা ঘুরে বিভিন্ন বয়সী, পেশাজীবি মানুষের সাথে কথা বলে মাহে রমজানের বিষয়ে তাদের নানা বিষয়ের প্রতিক্রিয়া জানা গেছে। একই সাথে মাহে রমজানের গোটা মাস ¯্রষ্টার নৈকট্য অর্জনে কিভাবে চলাফেরা বা এই মূল্যবান সময় পার করতে হবে তার বিষয়ে একাধিক আলেম ওলামা মতামত জানিয়েছেন।
স্কুল ছাত্র তাসনিমুর রহমান আরিক জানান, যতই কষ্ট হোক প্রতিটি রোজা রাখবো। কারন ছোট বেলা হতে দেখছি পরিবারের সকলেই রোজা রাখেন। আমিও রোজা রাখতে চাই। রোজার মাসে আলাদ মজা, বিশেষ করে ইফতার ও সেহরীর সময়ে।
ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান শুভ জানান, প্রতি বছরের ন্যায় রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বারতা নিয়ে আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমাজান। রমজানের স্বাদই আলাদা। বিশেষ করে তারাবিহ্, ইফতারী, সেহরীর সময়। এছাড়া রোজার মাসে খারাপ কাজ হতে দূরে থাকা যায়। একদিন পরেই রোজা, সুতারং-সেহরী, ইফতারী, তারাবী প্রতিটি জিনিসের জন্য নেয় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। গৃহিনী আছিয়া বেগম জানান, দিনের বেলায় রান্না-বান্না কাজ নেই। আল্লাহ যেন সুস্থ শরীরে গোটা মাসের রোজাসহ ফরজ ও নফল ইবাদত করতে পারি। আল্লাহ যেন রোজায় বেশি বেশি আমল করতে পারি। চাকুরীজীবি মো. সোহেল রানা জানান, আল্লাহ পাকের ফরজ হুকুম মাহে রমজানের রোজা রাখা। গ্রীষ্মকাল চলছে। তাপদাহ্ বাড়ছে। ততই কষ্ট হোক না কেন আল্লাহর ফরজ হুকুম ভঙ্গ করা যাবে না। অবশ্যই গোটা মাসই রোজা রাখবো ইনশাল্লাহ। আল্লাহ যেন সুস্থভাবে গোটা মাস রোজা রাখার তৌফিক দান করেন। গাইকুড় নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হাফেজ মাওলানা আঃ সবুর খান জানান, রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের বারতা নিয়ে আসে রমজান। পবিত্র কোরআন নাজিলের কারণে রমজান হয়েছে সর্বশ্রেষ্ট। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ন ও বরকতময় পাপাচারে যাদের জীবন অতিষ্ঠ, রোজা তাদের ক্ষান্ত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। আর মুমিনের জন্য কাঙ্খিত সফলতা হাতছানি দিতে থাকে। এ মাসের বরকতে ক্ষমার অঙ্গীকার করেছেন আল্লাহ। রমজানের প্রাপ্তি ও সুফল নিশ্চিত হওয়ার পূর্বশর্ত হলো, এ মাসের মর্যাদা যথাযথভাবে আদায় করা উচিৎ। হাফেজ মাওঃ হারুনুর রশীদ জানান, মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেন- রোজা আমার জন্যই , আমি নিজেই তার প্রতিদান দেব। মাহে রমজান কোরআন নাজিলের মাস। এই মাসে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বান্দার জন্য অফুরন্ত নিয়ামত রেখেছেন। রমজানে ইবাদতের পরিবেশ তৈরি এবং পবিত্রতা রক্ষায় সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য। রমজান মাস ইবাদত, আল্লাহর নৈকট্য লাভ, ঈমান নবায়ন এবং গোনাহ মাফের মাস। যে ব্যক্তি রমজান পেয়েও নিজের গোনাহ মাফ করাতে পারল না, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে ধিক্কার জানিয়েছেন। তাই এই মহিমান্বিত মাসটি কীভাবে কাটাবেন, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিন।