বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা কেটে নেয়ার ঘটনায় গ্রেফতারকৃতকে রিমান্ডের আবেদন

স্টাফরা জড়িত সন্দেহ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নিকট বাদীর অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখার ক্যাশ কাউন্টার থেকে দুর্বৃত্তরা গ্রাহকের ব্যাগ কেটে দু’লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে আজ। এদিকে বাদী স্টাফরা জড়িত সন্দেহে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বাদী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারী দুপুরে আফরোজা আক্তার সবর তার মেয়ে রওশনারার পারিবারিক সঞ্চয় টাকা উত্তোলন করতে বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখায় যান। টাকা উত্তোলন শেষে গণনা করে টিস্যু ব্যাগে রাখেন। নগদ দু’লাখ টাকা রাখার পর খুচরা আরো ২৫ হাজার টাকা গণনা করে ব্যাগে রাখতে গেলে দেখেন তার ব্যাগ হালকা। এমন সময় তিনি ব্যাগে হাত দিয়ে দেখেন ব্যাগের সাইড কাটা। কে বা কারা ব্যাগ কেটে নগদ দু’ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক চেচামেচি করলে পুলিশ আসলেও দুর্বৃত্ত আটক বা টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ৬ মার্চ খুলনা সদর থানায় চারজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় যুথি আক্তার শ্রাবন্তী (১৯) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে। সে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার সরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাসানের স্ত্রী। মামলার তদপ্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোল্ল্যা জুয়েল রানা বলেন, গ্রেফতারকৃত শ্রাবন্তীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে আজ বুধবার।
এদিকে বাদী গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক, খুলনা শাখা নির্বাহী পরিচালকের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, “গত ২৯ ফেব্রুয়ারী দুপুরের দিকে আমি আপনার ব্যাংকে যাই। ব্যাংকের নিচতলা ক্যাশ কাউন্টার হতে আমি নগদ আড়াই লাখ টাকা উত্তোলন করি। ওই টাকার মধ্যে দু’লাখ টাকা গণনা শেষে আমার টিস্যু ব্যাগে রাখা হয়। পরে বাকী ২৫ হাজার টাকা গণনা করে ব্যাগে রাখতে গেলে দেখা যায় আমার ব্যাগ কাটা। ব্যাগে রক্ষিত নগদ ২ লাখ টাকা নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে চেচামেচি করলে পুলিশসহ আপনার অফিসাররা আসেন। কিন্তু লুট হওয়া টাকা উদ্ধার করতে পারেনি। সুরক্ষিত এলাকায় আমার মত একজন গ্রাহক অরক্ষিত হয়ে পড়বে তা আমি কখনও ভাবতে পারিনি। আপনার ব্যাংকের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কে আমার ব্যাগ কাটল আর কে টাকা নিয়ে গেলে তা আপনি আন্তরিক হলে উদ্ধারপূর্বক দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করা সম্ভব। কারণ আমার মত সাধারণ গ্রাহক আপনার ব্যাংকে প্রবেশ করতে নানা জবাবদিহিতা বা বাধার মুখে পড়তে হয়। সেখানে দুর্বৃত্তরা সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করে টাকা লুট করে সহজেই পালিয়ে যায়। বিষয়টি ভাবতেই অবাক লাগে। আপনারদের স্টাফদের মধ্যে কেউ কেউ এ চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে বলে আমার সন্দেহ হয়। এ টাকা লুটের সময় বহিরাগতদের সাথে তারাই যোগসাজসে এ কাজটি করেছে। সঠিকভাবে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা গ্রাহকরা এ ব্যাংকে আসতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবো। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও টাকা উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান ওই নারী।” লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসএম হাসান রেজা বলেন, অভিযোগটি খোঁজখবর নিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।