স্থানীয় সংবাদ

চার বছর পর ব্যস্ততম লাল হাসপাতাল সড়কটি পূণরায় মেরামতের কাজ শুরু : ব্যয় পাঁচ কোটি টাকা

স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন খালিশপুরবাসী

খলিলুর রহমান সুমন ঃ দীর্ঘ চার পর ভোগান্তির পর অবশেষে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন খালিশপুর এলাকাবাসী। খালিশপুরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক ১৮নং লাল হাসপাতাল সড়ক চলছে নতুন করে সংস্কারের কাজ। পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই সড়কটি আগামী ঈদের পরপরই তা চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)। এখন চলছে সড়কে খোয়া ফেলা ও তা সমান করার কাজ। অর্ধশতাধিক শ্রমিক দিন রাত কাজ করছে সড়কে। রোড রোলার দিয়ে খোয়া সমান করার কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। সাব ঠিকাদার জানান, আগামী ঈদের পরপরই এ সড়কের কাজ শেষ হবে। প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ সড়কের কাজ করা হবে বলে তিনি আশাবাদী। করোনা মহামারির সময় বিএমডিএফ’র ফান্ডের টাকায় কেসিসি ওই সড়ক ও ড্রেন মেরামতের কাজ শুরু করে ২০২০ সালে। পথিমধ্যে ড্রেনের কাজ কোনভাবে শেষ করলেও সড়কের কাজ করোনার কারণে শেষ করেতে পারেনি ঠিকাদার। জুলাই’২০ মাসের প্রথম দিকে কাজ শুরু হয়। শেষ করার কথা ছিল ৩০ মার্চের’২১ মধ্যে। লাল হাসপাতাল সড়কের (১৮নং রোড) দৈর্ঘ্য ১৩৫০ মিটার লম্বা। ওই সময় ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সড়কের প্রস্থ ৬০ ফুট। দু’পাশে ড্রেনসহ ফুটপাত হওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে ৪ এপ্রিল’২১ এ সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয় কেসিসি। অবশেষে ওই প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়। এর পর থেকে এলাকাবাসী ওই সড়ক দিয়ে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে ছিল। এলাকাবাসীর দাবির মুখে মেয়রের আন্তরিকতায় আবারো এ সড়কের কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের ১৫ তারিখে। ইতোমধ্যে কাজ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। দু’ কিলোমিটার লম্বা এ সড়কটি পুরাতন যশোর রোড থেকে বিআইডিসি সড়ক পর্যন্ত লম্বা। চলাচল অযোগ্য সড়কটি নতুন করে মেরামত শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী মেয়রকে ধন্যবাদ জানান। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পূর্নবাসন প্রকল্পের আওতায় এ সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় শত কোটি টাকা। খালিশপুর ১৮নং লাল হাসপাতাল সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৫২ টাকা। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারী সড়কের কার্যাদেশ দেয়া হয়। সে মতে, কাজ শেষ করার কথা রয়েছে ২০ জুন’২৪। ১৩৮০ মিটার লম্বা এ সড়কটি প্রশস্ত ৭ মিটার। এ সড়কে ১০ ইঞ্চি চওড়া খোয়া বিছানো হবে। ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাইমুল ইসলাম খালেদ বলেন, এ সড়কটির কাজ সেই করোনার সময় বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সড়ক দিয়ে চলাচলে মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। মেয়রের ঐকান্তিক চেষ্টায় সড়কের কাজ আবারো শুরু হয়েছে। দুর হলো পথচারিদের ভোগান্তি। এ জন্য তিনি মেয়রকে ধন্যবাদ জানান। তবে কাজটি যাতে নিয়ম অনুযায়ী টেকসই হয় সে দিকে নজর দেয়ার জন্য মেয়রের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। ১১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ কাজল বলেন, গত ৪ বছর ধরে এ সড়কটি দিয়ে মানুষ চলাচল করতে খুবই কস্ট হতো। অবশেষে এলাকাবাসীর দাবির মুখে মেয়র এ সড়কটি নতুন করে করার জন্য তাকে তিনি ধন্যবাদ জানান। একই সাথে কাজ যাতে সিডিউল অনুযায়ী হয় সে জন্য সংশ্লিষ্টদের সজাগ দৃষ্টি রাখার দাবি জানান তিনি। অনেক ভোগান্তির পর এ সড়কটি নতুন করে করা হচ্ছে। যাতে সড়কটি দীর্ঘ দিন ভাল থাকে সে ব্যাপারে মেয়রের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। ১১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাঃ সম্পাদক সরদার আলী আহমেদ জানান, করোনা মহামারির সময় থেকেই এ সড়কের ভোগান্তি শুরু হয়। যা দীর্ঘ ভোগান্তি শেষে এখন সড়কটি মেরামত কাজ চলছে। এ জন্য তিনি মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কাজটি যাতে সিডিউল অনুযায়ী হয় সে জন্য তার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। একই কথা বললেন ১০নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাঃ সম্পাদক ইমরুল ইসলাম। তিনি বলেন, কাজটি যত তাড়াতাড়ি শেষ হবে ততই এলাকাবাসীর উপকার। কাজটি নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার দাবি জানান এই নেতা। শিশু পার্কের অপজিটের দোকানদার মুজিবুর রহমান বলেন, কাজ খুবই দ্রুত হচ্ছে। তবে তা মানসম্মত হচ্ছে কি না তা বুঝার উপায় নেই। কাজটি যাতে সঠিক নিয়মে হয় সেই দাবী এই দোকানীর। সাইদ এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার তাজুল ইসলাম বলেন, কাজের মান নিশ্চিত করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ কার হবে বলে তিনি জানান। এ জন্য প্রতিদিন অনেক শ্রমিক কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে। কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মশিউজ্জামান খান বলেন, কাজ যাতে ১০০ ভাগ সিডিউল অনুযায়ী হয় সে জন্য মেয়র নিজেই একজন সহকারি প্রকৌশলীকে সরাসরি ওই কাজে তদারকি করতে দায়িত্ব দিয়েছেন। সাথে তো আরো উপ-সহকারি প্রকৌশলী আছে এ কাজ দেখভাল করার জন্য। কাজে কোন ধরনের অনিয়ম হলে মেয়র ছাড় দিবে না বলে তিনি জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button