স্থানীয় সংবাদ

খুলনা থেকে ৪ রুটে রূপসী লোকাল বাস চলাচল বন্ধ

দূরপাল্লার বাসে লোকাল যাত্রী লোকসানে লোকাল বাস, রূপসী বাংলা পরিবহন বন্ধের কারণে সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন রুটে দেখা দেয় গাড়ি সংকট।

স্টাফ রিপোর্টার ঃ রূপসা-বাগেরহাট বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির ডাকা রূপসী বাংলা পরিবহন বন্ধের কারণে সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল থেকে বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন রুটে দেখা দেয় গাড়ি সংকট। ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। কেউ কেউ বিকল্প পরিবহনে গন্তব্যে যেতে পারলেও তিন-চারগুণ বেশি বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। আর কেউ কেউ দুর্ভোগের শিকার হয়ে আবার ফেরত গেছেন। ওই রুটে দূরপাল্লার পরিবহনে লোকাল যাত্রী ওঠানোর প্রতিবাদে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ সিদ্ধান্তের কারণে খুলনার সঙ্গে বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার প্রায় ২০টি সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর-বরিশাল থেকে যারা পেশাগত কারণে নিয়মিত খুলনা শহরে যাতায়াত করেন, তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। জানাযায়, খুলনা-গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর-বরিশাল এই রুটে রূপসী বাংলা ব্যানারে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত বাস চলাচল করে। প্রতিটি বাস খুলনা থেকে ছেড়ে গৌন্তব্যে পৌঁছে আবার যাত্রী নিয়ে খুলনায় ফেরে। জানাযায়, সড়কে পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা রক্ষায় বাস মালিক এবং শ্রমিক সংগঠগুলো সরকারি দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী একটি পরিবহন থামবে তার নির্দিষ্ট স্থানে, যাত্রীও তুলবে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে। এরফলে দুরপল্লার যাত্রীরাও অনেকটা নিরাপদে থাকেন। অন্যদিকে লোকাল যাত্রীদের জন্য বাস মালিক এবং শ্রমিক সংগঠগুলো সরকারি দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে লোকাল সার্ভিস চালু করে। যারা লোকাল যাত্রী পরিবহন করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে দূরপাল্লার পরিবহরগুলো বাড়তি লাভের আশায় বা অনৈতিক লাভের আশায় লোকাল যাত্রী নিচ্ছে তাদের পরিবহনে। এরফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে লোকাল সার্ভিসের বাস মালিকরা অন্যদিকে দূরপাল্লার যাত্রীদের সময়ক্ষেপন হচ্ছে এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশাল রুটের সাথে সংশ্লিষ্ঠরা বলছে, এই রুটে প্রতিদিন প্রায় ১০০ ট্রিপ হয়। এর সাথে শুধু বাস মালিক জড়িত নয়। এর সাথে ৫ শতাধিক শ্রমিক জড়িত রয়েছে। বাস বন্ধের ফলে ওই শ্রমিক এবং তাদের পরিবারগুলোও মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফাল্গুনি পরিবহনের চেয়ারম্যান মামুন হাসান রিপন জানান, প্রত্যেকের রুট আলাদা। প্রত্যেক পরিবহন বা বাস তার নির্দিষ্ট রুটে চলবে এবং নিয়ম মেনে চলবে। দূরপাল্লার পরিবহন যদি লোকাল যাত্রী নেয় তাহলে লোকাল সার্ভিসের বাস বা তার সাথে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতির মুখে পড়ে। ফলে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে নিয়ম মেনে চলা বিকল্প নেই। রূপসা-বাগেরহাট বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল হক লিপন জানান, আমরা বন্ধ করিনি। বন্ধ হয়ে গেছে। দূরপাল্লার পরিবহন লোকাল যাত্রী ওঠানোর জন্য আমাদের তেলের পয়সা উঠছে না। ফলে আমরা লোকাল সার্ভিস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমরা বলেছি, গোপালগঞ্জ এবং খুলনার বিভিন্ন রুটে বা কাউন্টারে চেকিং ব্যবস্থা সক্রিয় করতে হবে। তা না হলে, আমরা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হবো। গোপালগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামিল সরোয়ার জানান, খুলনার বাস মালিকরা বাস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। প্রত্যেকটি রুটে চেকিং কার্যক্রম না থাকায় দূরপাল্লার পরিবহন লোকাল যাত্রী নিচ্ছে। এতে লোকাল বাস সার্ভিস ক্ষতির মুখে পড়ছে। এখন বাস মালিক, শ্রমিক সকলেই বিপাকে পড়েছে। গোপালগঞ্জ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ বুলবুল ইসলাম জানান, আমি মনে করি, এখানে গোপালগঞ্জ এবং খুলনা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের দায় রয়েছে। তারা আন্তরিক হলে এর সমাধন করা সম্ভব। মাদারীপুর বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সালাম তালুকদার জানান, গোপালগঞ্জ থেকে কয়েকটি দুরপাল্লার পরিবহন লোকাল যাত্রী ওঠানোর কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। এটি দ্রুত সমাধান না করলে যাত্রী, বাস মলিক এবং বাস শ্রমিকেরা ক্ষতির মুখে পড়বে। খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বিপ্লব জানান, ওই বাস বন্ধের কারণে অনেক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পেড়েছে। রমজান মাসে এটা মেনে নেয়ে যায় না। আমি চেষ্টা করছি এর সমাধান করার জন্য। দূরপাল্লার পরিবহনে যারা লোকাল যাত্রী তুলছে তারা ঠিক করছেন না। এতে লোকাল বাসগুলো বা তার সাথে সকল শ্রমিকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button