গবাধি পশু গরু শরিরে এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস ছড়াচ্ছে

আতঙ্কে গৃহস্তের খামারীরা
শেখ ফেরদৌস রহমান : গেল কয়েক বছর ধরে গরুর শরিরে গুটি বসন্তর মত দেখতে এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ নামক এক ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে । এসব ছোঁয়াছে ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর থেকে অন্য গরু আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি এই রোগে আক্রান্ত হলে গরুর শারিরিক অবস্থা আর ভালো না হতে পারে। বেশ কিছু জায়গায় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মারা যাওয়ার খবর শোনা যাচ্ছে। এতে করে দিশেহারা আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছে গৃহস্তের-খামারিরা। প্রাথমিক অবস্থায় এই এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসের আক্রান্ত হলে গরু শরিরে চাকা চাকা ফোস্কা পড়ে, কিছু খেতে পারেনা। গরুর শরিরে জ¦র হওয়া দুর্বল হয়ে পড়া মুখ থেকে নালা বের হওয়া। এভাবে দশ থেকে পনেরো দিন পর গরু নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী খামারি মোশারেফ গাজীর সাথে তিনি বলেন, আমার গোয়ালে দুটি গাভীন গরু ছিল একটি গরু ৭ মাসের গাভিন অবস্থায় এই এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসের কবলে পড়ে। এরপর অন্য গরুর একই রোগ হয়। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কমে যাবে। তবে এই রোগের পাদূর্ভাব আরও বাড়তে থাকে। আমি চিকিৎসকের পরামর্শ নেই। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ইনজেকশন প্রয়োগ করতে থাকি। এক পর্যায়ে আমার গাভীন ৭ মাসের গরু একটি বাছুর জন্ম দেয়। তবে, বাছুরের অবস্থা একই। তার শরিরে চাকা চাকা ফোস্কা পড়া। বাছুর মায়ের দুধ খেতে পারছে না। এভাবে তিন চারদিন পর গরুটির বাছুর মারা যায়। আর বাছুর মারা যাওয়ার ঠিক তিনদিন পর আমার গরুটিও মারা যায়। আমার সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে এই গরুটি ক্রয় করেছিলাম। এখনও ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি। আর মাত্র দুই মাস পর আমার গরুটার নবজাতক বাছুর জন্ম দিবে। আমি দুধ বিক্রি করব। ঋণের অর্থ পরিশোধ করব। তবে এই এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস আমার সব কিছু আশা-ভরসা শেষ করে দিল। এ বিষয়ে কথা হয় আরও এক ভুক্তভোগী মোঃ তরিকুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, আমার গাভীন ফিজিয়ান জাতের গরুটি এই এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। তবে আমি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শে গরুকে চিকিৎসা দিয়ে ভাল করেছি। যদিওবা আমি এর জন্য কোনভাবে প্রস্তত ছিলামনা। তারপরও বেশ অর্থ খরচ হলেও গরুটার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন আল্লাহ। এ বিষয়ে কথা হয় খুলনা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ডাঃ অরুণ কান্তি মন্ডলের সাথে তিনি বলেন, এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার আগে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এই এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসের আক্রান্ত গরুকে জ্বর বা ব্যাথানাশক ওষুধ দেওয়া, খামার বা গোয়াল ঘরের আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, এছাড়া এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে দ্রুত গরুকে ভ্যাক্সিন দিতে হবে। পাশাপাশি এই রোগে আক্রান্ত গরু মশারির নিচে রাখা এবং আক্রান্ত গরু অন্য গরু থেকে পৃথক ও পরিষ্কার জায়গায় রাখা দরকার। এতে অন্য গরুর শরীরে এই রোগ ছড়াবে না।