স্থানীয় সংবাদ

চার দফা দাবিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসদের খুমেক হাসপাতালে প্রথমদিনের কর্মবিরতি

দুর্ভোগে রোগীরা, আজকের মধ্যে দাবি না মানলে হাসপাতাল ত্যাগের ঘোষনা : পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস এসোসিয়েশন

তাদের দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে, পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডাক্তারদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার এবং ইন্টার্ণ ডাক্তারদের মাসিক ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা উন্নতিকরণ, এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, নন রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ, বিএসএমএমইউ এর অধীন ১২ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট এবং নন রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ভাতা পুনরায় চালুকরণ এবং চিকিৎসা সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ এবং বাস্তবায়ন

কামরুল হোসেন মনি ঃ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। পূর্বের নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস এসোসিয়েশন এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা যৌথভাবে এই কর্মূসচি পালন করেছেন। গতকাল রোববার তাদের বেতনভাতা বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবিতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর মধ্যে রয়েছে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক রয়েছেন ১১০জন এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসক রয়েছেন ১৪০জন। এই মোট ২৫০জন চিকিৎসক কর্মবিরতী পালন করছেন। আজ সোমবার দুপুর ২টা মধ্যে তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে না নিলে হাসপাতাল ত্যাগ করার ঘোষনা। পাশাপাশি আরও কঠিন কর্মসূচি ঘোষনা করবেন। এদিকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে দুর্ভোগ পড়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সেবা প্রত্যাশীরা। রাত থেকেই রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্খিত সেবা বলে ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, কিছু ওয়ার্ডে দুই একজন চিকিৎসক থাকলেও অধিকাংশ ওয়ার্ডেই নেই চিকিৎসক। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে রোগীদের। রোগীর স্বজনরা জানান, আমরা জানতে পারেছি ডাক্তারদের কর্মবিরতি থাকার কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালন ডা: মো: হুসাইন শাফায়াত বলেন, ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা তাদের পূর্বে নির্ধারিত কর্মবিরতি পালন করছেন। তাদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। যেহেতু এটা সেন্ট্রাল ইস্যু। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে তাদের দাবিগুলোর বিষয়ে কথা বলবো। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি থাকায় কিছুটা রোগীদের ভোগান্তী হতে হচ্ছে, তবে এই ভোগান্তি সাময়িক। আমরাও যতদুর সম্ভব রোগীদের ভোগান্তি না পোহাতে হয়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখছি। হাসপাতালের আরএমও ডা: সুমন রায় রোববার রাতে বলেন, হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তারদের যার যার দায়িত্ব সে হিসেবে রোষ্টার করে দিয়েছেন। সে হিসেবে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে বর্তমানে ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি এখনো চলমান আছে কি নাই, তা আমি কালকে হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারবো। খুমেক হাসপাতালে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস এসোসিয়েশন এর সমন্বয়ক ডা: হেদাইয়াত সৌরভ বলেন, হাসপাতালে আমার ১১০ জন কর্মরত আছি এবং ইন্টার্ণী ডাক্তার রয়েছে ১৪০ জন। রোগীদের স্বার্থে ইমারজেন্সিভাবে আমাদের কিছু সংখ্যাক চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে যত মেডিকেল ইন্টার্ন চিকিৎসক রয়েছেন, তারা সবাই আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। আমাদের এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি চলমান রাখবো। আজ দুপুর ২টার মধ্যে আমাদের দাবিগুলো না মানলে সকলে হাসপাতাল ত্যাগ করতে বাধ্য হবো। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ইন্টাণী চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা: দিবাকর চাকমা বলেন, খুমেক হাসপাতালের পরিচালকের বরাবর আমরা আমাদের দাবিগুলো পুরনের জন্য স্মারকলিপি প্রদান করেছি। এখনো পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে হাসপাতালের কর্তৃৃপক্ষ আমাদেরকে কিছুই বলেননি। হাসপাতাল পরিচালক স্যার জানিয়েছেন, তাদের এই দাবিগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে অবহিত করবেন। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল এর পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস এসোসিয়েশন এর সমন্বয়ক ডা: অমিয় সরকার ও ডা: হেদাইয়াত সৌরভ এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের পক্ষে ডা: দিবাকর চাকমা ও ডা: আসাদুজ্জামান সাগর স্বাক্ষরিত গতকাল রোববার এক জরুরি বিবৃতি উল্লেখ করেন, ইন্টার্ণ ডাক্তার এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি বকেয়াসহ ভাতা পরিশোধ এবং ভাতা বৃদ্বির দাবিতে ২৩ মার্চ শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাথে সাক্ষাত হয় এবং দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় স্বাস্খ্যমন্ত্রী আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দিয়েছেন এব্ং এর প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ^াস দিয়েছেন এবং এর প্রেক্ষিতে ২৩ মার্চ দুপুর ২টা থেকে ২৫ মার্চ দুপুর ২টা পর্যন্ত দেশের সকল ট্রেইনি ডাক্তার এবং ইন্টার্ণ ডাক্তাররা সম্পুর্ণভাবে কর্মবিরতিতে থাকবেন। পরবতীতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে আজ ( ২৫ মার্চ) সোমবার দুপুর ২টা থেকে সকল ট্রেইনি এবং ইন্টার্ণ ডাক্তারেরা হাসপাতাল ত্যাগ করতে বাধ্য হবেন এবং আরও কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে। তাদের দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে, পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডাক্তারদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার এবং ইন্টার্ণ ডাক্তারদের মাসিক ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা উন্নতিকরণ, এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, নন রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ, বিএসএমএমইউ এর অধীন ১২ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট এবং নন রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ভাতা পুনরায় চালুকরণ এবং চিকিৎসা সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ এবং বাস্তবায়ন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button