বানীশান্তায় ‘জীবনখেয়া’র বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন

‘জীবনখেয়া’ থেকে ১০হাজার রোগী পাবেন ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধ
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি ঃ অবহেলিত উপকূলীয় এলাকার জলবায়ূ শরণার্থী ও চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে ‘জীবনখেয়া’ নামের একটি ভাসমান হাসপাতাল চালু করেছেন বেসরকারী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। উপকূল ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের ১০হাজার প্রান্তিক রোগী এ হাসপাতাল থেকে আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাবেন। মঙ্গলবার (১৬এপ্রিল) সকাল ৮টায় উপকূলীয় মোংলার সন্নিকটে খুলনার দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা যৌনপল্লীতে চিকিৎসা সেবা প্রদাণের মধ্যদিয়ে উদ্বোধন হয় এই হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রমের। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাশের তত্বাবধানে এই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে।মঙ্গলবার বানীশান্তা যৌনপল্লীসহ বানীশান্তা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেও এ মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় ৩শতাধিক রোগী এই ক্যাম্প থেকে চিকিৎসা সেবা নেন। বিনামূল্যে তাঁরা (রোগী) পেয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শসহ ১সপ্তাহের ওষুধ ও পুষ্টিকর খাদ্যপণ্য।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাশ বলেন, উপকূলীয় এলাকা ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষজনকে চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য হাজার টাকা শুধু যাতায়াত ভাড়ায় ব্যয় করতে হয়। এসসিবির অর্থায়নে বিদ্যানন্দের এই ভাসমান হাসপাতাল সেইসব মানুষের দোরগোড়ায় আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রায় ১০হাজারের বেশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ এখান থেকে চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন। তিনি আরো বলেন, বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ষ্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় ৮জন চিকিৎসক, ১জন গাইনী বিশেষজ্ঞ, ১জন শিশু বিশেষজ্ঞ ও ১জন চক্ষু বিশেষজ্ঞ নিয়ে এই ভাসমান হাসপাতালটি আগামী ৪০ দিন ধরে খুলনা, বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর হয়ে নোয়াখালীর ২৯টি স্পটে ক্যাম্প করে চিকিৎসা দিবেন। বিনামূল্যে ল্যাব টেস্ট ও ওষুধের পাশাপাশি রোগীদেরকে পুষ্টিকর খাদ্যপণ্যও দেয়া হচ্ছে এই হাসপাতাল থেকে। এর পাশাপাশি জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে স্বাবলম্বীকরনের কার্যক্রমও চলমান থাকবে এই হাসপাতাল থেকে।
দেশ-বিদেশে ভিন্নতর ও অভিনব সব আইডিয়া নিয়ে সেবামূলক কাজ করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন বিদ্যানন্দ। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে কেউ যখন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছিলোনা তখন জীবনবাজী রেখে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসমরে যুদ্ধ করে সাধারণ মানুষের ভালবাসা অর্জন করে নেয় এই প্রতিষ্ঠান। সমাজসেবায় তাদের অসামান্য সব অবদানের জন্য ২০২৩সালে সরকার তাদের একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও ২০২২ সালে সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের জাতীয় মানবকল্যান পদক ও ২০২১সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ‘কমনওয়েলথ পয়েন্টস অফ লাইট’ পদকে ভূষিত হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।