স্থানীয় সংবাদ

বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ মুজিবনগর সরকার : উপাচার্য

খুবিতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ১৭ এপ্রিল (বুধবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০টা১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য যে অস্তমিত গিয়েছিল, দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলার মহান ব্যক্তিরা এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতিগত স্বাধীনতার সংগ্রাম দীর্ঘ ২শ’ বছরের। ব্রিটিশদের দেশবিভাগের পর স্বাধীনতার যে সংগ্রাম শুরু হয়, তার চূড়ান্ত রূপ হচ্ছে মুজিবনগর সরকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে এই সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ পরিচালিত হয়। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিম-লেও এই সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা পালন করে এই সরকার। একটি মুক্তি সংগ্রামকে রাষ্ট্রে পরিণত করার মূল দিক ছিল এই সরকার। যাদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন এবং রাষ্ট্রের কাঠামো ভাগ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মুজিবনগর দিবসসহ এ জাতীয় বিভিন্ন দিবস সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের নিজস্ব উদ্যোগে পালন করা উচিত। এর মাধ্যমে আমরা নিজেরা যেমনি সমৃদ্ধ হবো, তেমনি নতুন প্রজন্মও মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিষয় জানতে পারবে। পাশাপাশি তারা দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে শুরুতে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানের স্মৃতির প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ধ্রুপদী আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবীতে একটি জাতি রাষ্ট্রের উত্থান ঘটেছে, এটা কিন্তু সহজ নয়। অনেক জাতি লড়াই করেছে কিন্তু তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। বাংলাদেশ যেভাবে সৃষ্টি হয়েছে, তা কিন্তু যেকোনো নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য মডেল। সঠিক নেতৃত্ব, সংগঠিত প্রয়াস, সর্বাত্মক ত্যাগ কিভাবে একটি জাতিকে স্বপ্নের পথে পৌঁছে দিতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমাদের বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানের ভূবনে বিচরণ করাতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। দেশকে ভালবাসতে শেখাতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজ ও অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি দীপক চন্দ্র মন্ডল। এর আগে সকাল ১০টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল কালজয়ী মুজিব প্রাঙ্গণে উপাচার্যের নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এ সকল অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদসমূহে বাদ জোহর দোয়া মাহফিল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button