স্থানীয় সংবাদ

খালিশপুরে সাবেক কাউন্সিলর পিন্টুর বাসভবনে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলা : আহত ৩

২৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা, গ্রেফতার ৩

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ পিন্টুর বাসভবনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে এলাকার প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী একটি মহল। পুর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ২ টায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সাবেক কিাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ পিন্টুর বাসভনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও ইটপাটকেলসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। উভয় পক্ষর সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। জমিজমা সংক্রান্ত মামলার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে খালিশপুর থানা পুলিশ। এদিকে হামলায় জড়িত সন্দেহে ৩জনকে গ্রেফতার করেছে খালিশপুর থানা পুলিশ। খালিশপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনুকূল চন্দ্র ঘোষ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কেসিসি ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোঃ সুলতান মাহমুদ পিন্টুর দায়ের করা মামলার এজাহার নামের ১২নং আসামি মৃত টুকু শেখের পুত্র জুয়েল (৪৫) ও ঘটনার সাথে জড়িত আরো দুইজনকে রাতে খালিশপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটক করে। আটককৃতদের ৩ জনকে শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী সাবেক ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা মোঃ সুলতান মাহমুদ পিন্টু এজাহারে উল্লেখ করেন, জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারনে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ও মেলার মাঠে জুয়া খেলা চালাতে না পেরে ক্ষোভে রাগে বিবাদীরা সন্ত্রাসী কায়দায় বেআইনী দলবদ্ধভাবে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার বসত বাড়ীর সামনের গেটে রাম দা দিয়ে কোপ মারে এবং বাড়ীর ভিতর অবৈধভাবে প্রবেশ করে বাড়ী লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘটনার সময় আমি (পিন্টু) বাড়ীতে না থাকায় আমার নাম ধরে গালিগালাজ করতে থাকে। আমার চাচা মোঃ মিজানুর রহমান, চাচাতো ভাই রহিম হোসেন বাবু ও শেখ জিসান হোসেনকে বাসা থেকে বের করে বিবাদী শেখ ফরহাদ হোসেন (৫৫), মোঃ সাব্বির (৩০) এর মাথায় থাকা গামছা নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার চাচাতো ভাই রহিম হোসেন বাবুর গলায় ফাঁস দিয়ে টানতে টানতে গেটের বাইরে নিয়ে এসে তাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে এবং তার নিকট থাকা নগদ টাকা নিয়ে নেয়। যার কারণে রহিম হোসেন বাবুর ডান কাধে ও বুকের বাম পাশে গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। তারা সন্ত্রাসী কায়দায় হাতে থাকা রাম দা দিয়ে মোঃ মিজানুর রহমান এর মাথায় কোপ দিলে মাথার ডান পাশের কানের উপর লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। অমিতের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে শেখ জিসান হোসেন এর বুকের বাম পাশে কোপ দেয়, জিসান সরে গেলে তার বুকের বাম পাশে লেগে গুরুতর আহত হয়। এর পর বাড়ীর অন্যান্য লোকজন বের হয়ে আসে এবং খবর পেয়ে আমিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সুলতান মাহমুদ পিন্টু আরো বলেন, হামলার খবর পেয়ে আমি বাড়ীর ভিতরে ঢুকে গেলে আমাকে লক্ষ্য করে শটর্গান দিয়ে গুলি করে । আমি সরে যাওয়ায় গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আমার বাড়ীর গেটে লাগে। আমাদের ডাক’ চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র উচিয়ে লোকজনদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আমার পরিবারের সদস্যরা গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে(খুমেক) চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি প্রশাসনের নিকট এই বর্বর হামলার সুষ্ট বিচারের দাবি জানান। এ বিষয়ে শেখ ফরহাদ হোসেন বলেন, তিনি মেঘনা গেটে একটি জমি ক্রয় করেছেন জমির দলিল এবং রেকর্ড তার নামে রয়েছে। সেই জমির উপর তারা মামলা করে টাকা আমানত করেছে। সেই সাইন বোর্ড সাটিয়ে দিয়েছে। আমি সেটি খুলতে গেলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে কেএমপি খালিশপুর জোনের পুলিশ কমিশনার মোঃ নাসিম এ গুলশান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারলাম দুই পক্ষের মধ্যে আগে ও পরে শত্রুতার জের ধরে ও একটা জমি ক্রয় করে সাইনবোর্ড টানানো কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। তিনি আরো বলেন, শট গানের গুলির খোসা, ইট পাটকেল ও আহত একজনের জামা কাপড় আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে আমরা জব্দ করেছি। আমরা কিছু ফুটেজ হাতে পেয়েছি। সেই ফুটেজের সূত্র ধরেই আমরা তদন্ত করে দেখব। তিনজন আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান। আমরা গাড়ি ভাঙ্গার কোন খবর পাইনি। মামলা করলে আমরা মামলা গ্রহণ করবো। উক্ত ঘটনায় খালিশপুর উত্তর কাশিপুরের মৃত শেখ রুহুল আমিন’র ছেলে সাবেক ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সুলতান মাহমুদ পিন্টু বাদী হয়ে খালিশপুর থানাধীন কাশিপুর পদ্মা রোড চেয়ারম্যান বাড়ীর মৃত আকমান শেখের ছেলে শেখ ফরহাদ হোসেন (৫৫), শেখ ফরহাদ হোসেন’র ছেলে অনিম (২৫), মৃত আছর শেখের ছেলে শেখ মিজানুর রহমান (৫৫) সহ আরো ২০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং-২০ । তারিখ-১৮-০৪-২৪।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button