স্থানীয় সংবাদ

খুলনা বিভাগে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে : চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রের্কড ৪১ দশমিক ৩

খুলনায় তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫ ডিত্রি সেলসিয়াস, গরমে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা : স্কুল বন্ধের দাবি

কামরুল হোসেন মনি ঃ খুলনা বিভাগে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। তীব্র রোদ-গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। খৃুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ও তীব্র তাপদাহ। যার প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে। গতকাল শুক্রবার খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এই দিনে খুলনায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে দিন বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোর ও চুয়াডাঙ্গা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে খুলনায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আস্তে আস্তে তাপদাহ পারদের মতো বেড়েই চলেছে। এই গরমে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকরা। কারণ পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটি শেষে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে আগামীকাল রোববার। তাদের দাবি স্কুল খোলার আগেই পুনরায় বন্ধের ঘোষনা দিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
খুলনার আবহাওয়াবিদ মো: আমিরুল আজাদ বলেন, গতকাল শুক্রবার দুপুর তিনটার পর খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া যশোরে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি, মোংলায় ৪১ ডিগ্রি, খুলনায় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি, খুলনার কয়রা উপজেলায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি এবং কুমারখালী ( কুষ্টিয়া) সর্বোচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দুই জেলাতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ওই আবহাওয়াবীদের মতে, তাপমাত্রা যদি ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তাহলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয় যখন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আর অতি তীব্র হয় ৪২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে। এদিকে ছুটির দিনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ভর্তি ১২৮৬ জন। হাসপাতালের আরএমও ডা: সুহাস রঞ্জন হালদান বলেন, ছুটির দিনেও হাসপাতালে সকাল ৭টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিলো ১২৮৬ জন। এর আগে দিন রোগী ভর্তি ছিলো ১৩০৫ জন। তিনি বলেন, শনিবার থেকেই রোগীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নগরীর ময়লাপোতার বাসিন্দা এক অভিভাবক মো: আব্দুল জলিল বলেন, পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটি শেষে রোববার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই গরমে আমরা বড়রাই অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তীব্র রোদে রাস্তায় তাকানো যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে আগুনের ফুলকি সারা শরীরের এসে পড়ছে। এই অভিভাবকের সন্তান খুলনা সরকারি মডেল স্কুলে ৫ম শ্রেণীতে পড়ে। তিনি বলেন, স্কুল খুললেও আগামী কয়েকদিন এই গরমে ছেলেকে স্কুলে পাঠাবো না। পড়াশোনার ক্ষতি যদি হয়, হোক। কারণ স্কুলে এই গরমে পাঠালে তার সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। কারণ, শ্রেণিকক্ষে বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে শিশুশিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া সরকার যখন ৩দিনের হিট এলার্ট জারি করেছে তখন তিনি স্কুল খোলার আগেই পুনরায় বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। এদিকে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে রাস্তায় মানুষ কম থাকলেও গরমে বেশি অস্বস্তিতে খেটে খাওয়া মানুষ। সকাল থেকেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে গরম। এক রিক্সা চালক বলেন, সকাল থেকে গরম বেড়েই চলছে। এ প্রখর রোদে গাড়ি (রিক্সা ) নিয়ে বাইরে থাকাটাই কষ্ট। রাস্তায় মানুষ কম থাকলেও গরমের কমতি নেই। তীব্র তাপে ঘেমে জামা ভিজে আবার শুকাচ্ছে। এরপরও পেটের দায়ে বের হতে হয়। গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা আমিরুল বলেন, এত গরমে যে বাতাস বইছে সেটাতেও গরম। আজ রাস্তায় যানজট নেই, জুম্মা নামাজ পড়তে ঘর থেকে বের হইছি। মনে হচ্ছে আগুনের ফুলকির মতো বাতাস এসে গায়ে লাগছে। এই গরমের তাপে মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র শিশু আছাদ জাহিম সোয়াব বলেন, প্রচন্ড গরমে আমার মাথা ব্যথা করছে। অসহ্য গরমে বাইরে বের হতে পারছি না।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button