খুলনা শিশু হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ : অসহনীয় গরমে চরম দূর্ভোগ

ফ্যানের বাতাস গায়ে লাগে না, জটিল শিশু রোগিদের প্রয়োজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ার্ড
শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ গেল কয়েক সপ্তাহ যাবৎ সূর্য যেন মাথার উপর জ¦লছে। এই তিব্র অসহনীয় গরমের মধ্যে বেশি অসুস্থ্য হচ্ছে শিশুরা। এতে করে খুলনা শিশু হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। তবে হাসপাতালটিতে সেবা নিতে আরও বেশি গরম উপেক্ষা করে সেবা নিতে হচ্ছে সেবা প্রত্যাশিদের। ৮০’র দশকে শিশু ফাউন্ডেশন কর্তৃক অর্থায়নে এই শিশু হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ১২ জন কনসাল্ট্যান্ট ও ৩২ জন মেডিকেল অফিসার, ৭০ জন নার্সসহ প্রায় ৩শ জন স্টাফ রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন প্রায় আটশ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালটির আন্তঃ বিভাগে প্রায় ২৭৫টি শয্যা রয়েছে। পাশাপাশি কেবিন সংখ্যা মাত্র ৩২টি। এছাড়া হাসপাতালটির এ-ব্লক আর বি- ব্লক এর উপর ভর্তি রোগীরা এই দাবদাহে আরও বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। উপর তলায় ছাদের গরম যেন তাদের কাছে অসহনীয় হচ্ছে। এছাড়া বহির্বিভাগে সেবা নিতে রোগীরা রয়েছে আরও বেশি বিপাকে। হাসপাতালটিতে ২৪ ঘন্টা রয়েছে জরুরী চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা। তবে বর্তমান দাবদাহে অধিকাংশ শিশুরা ভর্তি হচ্ছে জ¦র, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়া ও পেটে ব্যাথা সমস্যা নিয়ে। য কারণে অতি অসুস্থ্য হয়ে আক্রান্ত শিশুরা ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালটিতে। পাশাপাশি শিশুর সাথে তার মা,বা অন্য স্বজনেরা থাকছে শিশুর সাথে। এতে করে আরও বাড়ছে চাপ। সেরেক্ষত্রে রোগীর চাপ থাকাতে অনেকে ময্যা না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।যেখানে বিন্দুমাত্র নেই বাতাশের ব্যাবস্থা।এছাড়া মকাল হতে দুপুর পযন্ত বহির্বিভাগে যেন আর দুর্বিষহ অবস্থা। শিশু রোগী আর তাদের স্বজনদের চাপ থাকায় ভিতরের পরিবেশ আরও বেশি অসহনীয় হযে উঠে এই তিব্র গরমে।সরেজমিনে দেখা যায় এ-ব্লকের চারতলায় বারান্দায় শিশু অয়নকে নিয়ে বসে আছেন তার মা। হাসপাতালে এখনও শয্যা খালি হয়নি। যেকারণে এখন বারান্দায় বসে আছেন। তবে শয্যা খালি হলে তিনি ওয়ার্ডে যাবেন। রোগীর মাথার উপরে নেই কোন ফ্যান বা বাতাসের সু ব্যাবস্থা। এছাড়া কথা হয় হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা তাসনিম(৩) এর মায়ের সাথে তিনি বলেন, হাসপাতালে শিশু রোগীর অনেক চাপ আর গরমে যেন আরও বেশি অসুস্থ্য হওয়ার উপক্রম। আমি বাগেরহাট থেকে এসেছি আমার ছেলের শরীরে জ¦র কমছেনা। এর মধ্যে এত গরমে আর মানুষের চাপে যে অসহনীয় হয়ে উঠছে প্রতিটি সেকেন্ড বা মুহুর্ত। উপরে যেসব সিলিং ফ্যান ঘুরছে তার বাতাস শরীরে লাগছে না। অত্যন্ত এই জায়গাটায় যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের জন্য সু-ব্যাবস্থা করত কর্তৃপক্ষ। একই কথা বলেন, বহির্বিভাগে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বরত একজন টেবিল বয় তিনি বলেন, ভাই সকাল হতে দুপুর দুইটা পর্যন্ত শত শত রোগী এসে জড়ো হয় এই বহির্বিভাগে। এতে করে অভ্যন্তরের পরিবেশ আরও বেশি গরম হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমি জানি আমাদের হাসপাতালটিতে এ-ব্লকের পাঁচ তলায় ও বি-ব্লকের চত্বরে বেশ গরম থাকে। আমরা একবার পাঁচতলা এ-ব্লকে ওয়ার্ডে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেছিলাম। তবে রক্ষানাবেক্ষণের অভাবে সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া এখানে অল্প খরচে শিশুদের চিকিৎসা জন্য সু ব্যবস্থা আছে। পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় আমরা অভ্যন্তরীন পরিবেশে বাতাসের সু ব্যবস্থা করতে পারছিনা। তারপরও দেখছি প্রচেষ্টা আছে আমাদের । পাশাপাশি কোন মহৎ ব্যক্তি যদি হাসপাতালটির আভ্যন্তরীন পরিবেশে বাতাসের সু ব্যবস্থা করতে সহযোগীতার হাত বাড়ায়। এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি হাসপাতালে কেমন অর্থ সঞ্চয় আছে। দ্রুত একটি কার্যকরি ব্যবস্থা নিব।