স্থানীয় সংবাদ

জোড়াগেট কোরবানী পশুরহাট সফল করতে কেসিসির নানামুখি পরিকল্পনা

রাতের হাট দিনের মত আলোকিত

স্টাফ রিপোর্টারঃ আসন্ন পবিত্র ইদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে সোমবার থেকে খুলনার জোড়াগেট বাজার চত্বরে সপ্তাহব্যাপী কোরবানির পশুরহাট শুরু হয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক দুপুরে এই হাটের উদ্বোধন করেন। হাট উদ্বোধনের পরের দিনই হাটে গরু আসতে শুরু করেছে। গতকাল প্রথম দিনেই দেশী ৮টি গরু এসেছে। উৎসুক জনতা ওই গরুর সামনে ভীড় জমায়। গরুর ব্যাপারী মনিরুল ইসলাম জানান, গরুর হাটে প্রথম দফা তিনি আটটি গরু এনেছেন। এর মধ্যে ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু রয়েছে। ছোট সাইজের গরুর দাম চাইছেন ৭০-৭৫ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিল ৬০-৬৫ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরুর দাম চাইছেন ৮০-৯০ হাজার টাকা। যা গত বছর ছিল ৭৫-৮০ হাজার টাকা। গরু প্রতি এবার ৫-১০ হাজার টাকা বেশী দিয়ে গরু ক্রেতাকে কিনতে হবে। কারণ হিসেবে জানান, এবার সব কিছুর দাম বেড়েছে। যার প্রভার গরুর ওপর পড়েছে। তিনি আরো বলেন, নড়াইল জেলার কালিয়া থেকে তিনি প্রতি বছর এই হাটে আসেন। আজ বুধবার তার আরো এক ট্রিপ গরু আসবে। গরু আনতে পথে কোথাও কোন বাধা মুখে পড়েননি তিনি। গত বছরের চেয়ে এবার হাটের পরিবেশ অনেক ভাল বলে তিনি মন্তব্য করেন। গত বছর তিনি ১৭টি গরু হাটে আনেন। বিক্রি হয় ১২টি। ৫টি গরু ফেরৎ নিয়ে যান। তবে এবার সব গরুই বিক্রি হবে এমনটাই আশা করেন তিনি। তিনি বলেন, ভারতের গরু আসার খবর তার কাছে নেই। তিনি টিভিতে এমন খবর শুনেছেন। কিন্তু বাস্তবে দেখেননি। দেশী গরু অনেক বেশী উৎপাদন করা হয়েছে, যা চাহিদার চেয়েও বেশী। এ জন্য ভারতীয় গরু আসা দরকার আছে বলে তিনি মনে করেন না। কেসিসির বাজার সুপার আঃ মাজেদ মোল্লা বলেন, গত বারের চেয়ে এবার জোড়াগেট কোরবানীর পশুর হাটের পবিশে অনেকভাল। হাটে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। এবার হাটে জলাবদ্ধতা হওয়ার কোন সুয়োগ নেই। ইতোমধ্যে হাটে গরু আসনতে শুরু করেছে। তারা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যাপারীদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ২/১ দিনের মধ্যেই হাটে গরুতে সয়লাব হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি আরো বলেন, এই পশুরহাট দক্ষিণাঞ্চলসহ খুলনা মহানগরীর মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী হাট। সকলের সহযোগিতায় দীর্ঘ দিন ধরে এই হাটটি পরিচালনা করে আসছে কেসিসি। সড়কপথের পাশাপাশি নৌপথেও এখানে পশু আনার সুবিধা রয়েছে। এবারের হাটে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন, কন্ট্রোল রুম, মেডিকেল টিমসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। খুলনায় সর্বাধিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত সর্ববৃহৎ হাট হিসেবে পরিচিত জোড়াগেট কুরবানীর পশুরহাট বলে তিনি দাবি করেন। গত বছরের চেয়ে এবার হাসি বেশী আদায় হবে বলে তিনি মনে করেন। কেসিসির সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সম্পূর্ন হাট এখন নতুন রূপে সেজেছে। হাটে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আজ বাকী কাজ শেষ হবে। হাটে ১৬টি সিসি ক্যামেরা, ৩০টি এলইডি সার্চ লাইট , ৫০ ওয়ার্ডের ৩শ’ লাইট ও ৩০ ওয়ার্ডের ৪ লাইট স্থাপন করা হয়েছে। পশুরহাটে কোথাও অন্ধকার ন্ইে। রাতেও দিনের মত সব কিছুই দেখা যাচ্ছে। এ জন্য ৩০ জন জন কর্মী দিন রাত কাজ করছে বলে তিনি জানান। কেসিসির কনজারভেন্সী অফিসার আনিসুর রহমান জানান, গরুর হাট পরিস্কার রাখতে তিনিটি টিম কাজ করছে। সকাল ৭টা হতে দুপুর ২টা , দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা ও রাত ১০টা হতে সকাল ৭টা পর্যন্ত সিফট ভাগ করা হয়েছে। প্রতি শিফটে ২০-২৩ জন কর্মী কাজ করছে। একজন এসিও’র তদারকিতে তারা কাজ করছে বলে তিনি জানান। গতকাল সন্ধ্যায় হাটে গিয়ে দেখা যায়, কেসিসির প্রধান প্রকৌশরী মোঃ মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম হাট পরিদর্শনে আসেন। তারা পুরো হাটটি ঘুরে সুবিধা-অসুবিধা দেখেন এবং সে মতে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে যান প্রধান প্রকৌশলী।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button