স্থানীয় সংবাদ

নগরীর দোলখোলায় সড়ক ও ফুটপাত ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের দখলে

যানবাহন চলাচল ব্যাহত, জনদুর্ভোগ চরমে

মো: মুশফিকুর রহমান মেহেদী : একদিকে চলছে ড্রেন সংস্কারের কাজ, অপরদিকে ফুটপাত ও সড়কজুড়ে বসেছে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। আবার স্থানীয় দোকানিরাও দখলে পিছিয়ে নেই। সব মিলিয়ে যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। ড্রেন সংস্কারের কারণে দু’ থেকে তিনটি মোটরসাইকেল কিংবা রিক্সা ঢুকলেই সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয় যানজট। পথচারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। সড়ক ও ফুটপাত এ সকল ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায়, পথচারীদের চলাচলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
শহরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক হিসেবে পরিচিত এই দোলখোলা রোডের ফুটপাতজুড়ে বসেছে সবজি, মাছ-মাংস ও তরি-তরকারি বিক্রেতা। ফুটপাত ও সড়কের এ সকল ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে সদাই কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন বেশ কিছু ক্রেতা। ফলে চলাচলে আরো সমস্যা সৃষ্টি হয় বলে জানান পথচারীরা।
হিমাংশু পোদ্দার নামক একজন পথচারী বলেন, আমাদের চলাচলে খুবই সমস্যা সৃষ্টি হয়। স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার সময় খুব বেগ পেতে হয়। অনেক সময় মাছ-মাংসের নোংরা পানি, রক্ত ছিটকে শরীরে লেগে পরণের কাপড় নষ্ট হয়।
রাজিন উদ্দিন নামক আরেকজন পথচারী বলেন, এক পাশে ড্রেন খুড়াখুড়ি, তার পাশে ড্রেন নির্মাণ সামগ্রী, বিপরীত পাশে আবার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের দখল। সব মিলিয়ে এই পথ দিয়ে চলাচল করতে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে ফুটপাত ঘিরে এ ব্যবসায়ীদের মত সড়কজুড়ে দৈনন্দিন বেচাকেনা করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী। এ সকল ব্যবসায়ীরা ভ্যানে করে মালামাল এনে সড়ক দখল করে বেচাকেনা চালাচ্ছেন। এই সড়কের ব্যস্ততম সময় সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। আর সেই সময়টিই বেছে নিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। নিয়ম-নীতির কোনো রকম তোয়াক্কা না করে সড়কের উপর সারিবদ্ধভাবে করছেন বেচা বিক্রি। আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এ সড়কে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। তবে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী ব্যতীত বেশ কিছু স্থানজুড়ে বসেছে স্থানীয় দোকানদার। ড্রেনের একপাশ সংস্কারের কারণে সড়কের উপরেই করতে হচ্ছে বিকিকিনি। ড্রেন সংস্কার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানিয়েছেন এ সকল ভ্রাম্যমাণ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বলেন, পাঁচ সদস্যের সংসার আমার, একটা দোকান নিতে গেলে লক্ষ টাকা অগ্রীম ও ৫-১০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। এত টাকা কোথায় পাবো? তাইতো ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়ছি।
তবে ড্রেন সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হলেই এই সড়কে আর কোন ঝামেলা হবে না বলে জানান স্থানীয় দোকানদার রাকিব। তিনি বলেন, সড়কে এরকম ব্যবসা করলে যাতায়াতের একটু সমস্যা হয়- এটা আমরা মানি। কিন্তু কি করব? সংসার চালাতে গেলে দোকান নিয়ে তো বসতেই হবে।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে সবজি বিক্রেতা কাসেম মিয়ার দাবি, বাড়ির সামনে সামান্য অংশে সবজি বিক্রি করলে ততটা সমস্যা হয় না।
অপরদিকে, নগরীর ফারাজীপাড়া মোড় এলাকায় ফুটপাত আটকে ব্যবসা করছেন বেশ কিছু ব্যবসায়ী। সেখানে যেন পা ফেলার কোন স্থানই নেই। ফুটপাতজুড়ে শুধু অস্থায়ী দোকানের সারি। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত চলে এসেছে দোকানপাট। খানজাহান আলী রোড, শেরে বাংলা রোড ও স্টেশন রোড, জব্বর সরণি, জিয়া হলের আশপাশ, মজিদ সরণি, জলীল সরণি, কদমতলা মোড়, কেডিএ ঘোষ রোড, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফেরিঘাট মোড়, ক্লে রোড, সিমেন্ট্রি রোড, ডাকবাংলা থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত দখল করে আছে এ ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ( যুগ্ম সচিব) লস্কর তাজুল ইসলাম বলেন, ফুটপাতসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সিটি মেয়র নিজেই পর্যবেক্ষণ করেন। বিষয়টি তার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করব।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button