বেড়েছে কসাইদের কদর, মূল্য চড়া!
ঈদের প্রস্তুতি মাংসের দোকানগুলোতেও
মো: মুশফিকুর রহমান (মেহেদী) : কড়া নাড়ছে মুসলিম উম্মাহর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঈদ-উল-আযহা। খুলনার বিভিন্ন গ্রাম ও বিশেষ হাট থেকে অনেকেই কিনছেন কুরবানীর পশু। এর বাইরে নগরীর বিভিন্ন মাংসের দোকানগুলোতে নানা প্রস্তুতি চলছে। শুধু মাংসের দোকান নয়, বেশ কয়েকটি উম্মুক্ত স্থানেও বিক্রি হবে গরুর মাংস। ফলে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন খুলনার পেশাদার ও অপেশাদার কসাইয়েরা।
এদিকে, খুলনায় কোরবানির কাটাকাটিতে অনেক ক্ষেত্রে পশুর দামের বিশ শতাংশতেও যেন মিলছে না কসাই। কসাইয়ের চড়ামূল্যের কারণে অনেক কোরবানিদাতারা ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
কুরবানীর ঈদ ব্যতীত বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে কসাইরা বিভিন্ন স্থানে গরু জবাই করে কেজি দরে মাংস বিক্রি করেন। তবে তার সংখ্যা সীমিত হলেও কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গরু জবাই’র পরিমাণ বেশ বাড়বে হবে বলে আশা করছেন তারা।
নগরীর খালিশপুর নতুন রাস্তা এলাকার অপেশাদার কসাই খোরশেদ আলম বলেন, আমি প্রতি শুক্রবার একটি করে গরু জবাই করি। তবে ঈদের জন্য তিনটা গরু জবাই করা হবে।
নিরালা দীঘির পাড় এলাকার কসাই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আগে খুলনার উম্মুক্ত স্থানে বেশ কয়েকটি গরু জবাই দেওয়া হতো। এখন মাংসের দোকানের স্খ্যংা বেশি হওয়ায় গরু জবাই দেওয়া হয় কম। তবে ঈদের আগের দিন থেকে মাংসের দোকানগুলো জমজমাট হবে বলে আশা করছেন খুলনার পেশাদার কসাইগণ।
অন্যান্য দিনগুলোতে এক থেকে দুইটি গরু জবাই হলেও কুরবানী উপলক্ষে প্রতিটি মাংসের দোকানদার ৩ থেকে ৫ টি গরুর মাংস বিক্রি করেন- এমনটি জানান, খুলনার অন্যতম বৃহত্তম মাংসপট্টি ময়লাপোতার কসাই রাজন। তিনি বলেন, কুরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিটি মাংসের দোকানে তিন থেকে ছয়টি গরুর মাংস বিক্রি হয়। যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না, বিশেষ করে তারাই মাংস কিনতে আসেন। এছাড়া আশিক মিটশপের আশিকুর রহমান বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে শুরু হয় মাংস বিক্রির ধূম। চলে বিকাল পর্যন্ত।
অপরদিকে, কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য প্রতি হাজারে দুইশত টাকা দিয়েও কসাই পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে কয়েকটি সূত্র। এদিনে গ্রাম থেকে অনেক অপেশাদার কসাইরাও এক একটি গরুর মাংস কেটে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেন বলে জানা যায়।
তবে সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত শতকরা বিশ টাকা মজুরি হলেও ১১ টার পর থেকে শত করা ১৫ থেকে ১০ টাকা নেওয়া হয় বলে জানান ময়লাপোতার আশিক কসাই। আশিক বলেন, এই ঈদে তিনটা গরু কাটার অর্ডার পেয়েছি। আটটা থেকে ১১ টা পর্যন্ত প্রতি লাখে বিশ হাজার টাকা মজুরি নিব। আর ১১ টার পরে নিব লাখে ১৫ হাজার টাকা।
জানা যায়, লাখে বিশ হাজার টাকা দিয়েও মিলছে না কসাই। পেশাদারেরা নিজস্ব মাংসের দোকানে ব্যস্ত থাকবেন। পাশাপাশি অপেশাদারেরা অনেকেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ফলে যারা এখনো কোরবানির পশু কিনতে পারেননি, তারা পড়েছেন বিপাকে।
মুসলিম হোসেন নামক একজন ঠিকাদার বলেন, চাঁদরাতে হাট থেকে গরু কিনবো। কিন্তু এখনো কসাই খুঁজে পাইনি।
হায়দার আলী নামক একজন ব্যক্তি বলেন, প্রতি লাখে ২০ হাজার টাকা কসাইকে দেওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক।
ব্র্যাকের কর্মকর্তা রাকিব হোসেন বলেন, কসাইদের গরু কাটার মজুরি নির্ধারণে সহনশীল হওয়া উচিত। নইলে বিষয়টি পীড়াদায়ক হতে পারে।