ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় কিডনি রোগি মৃত্যুপথযাত্রী
পাথর অপারেশনের পরবর্তী রিপোর্টেও ধরা পড়েছে পাথর
স্টাফ রিপোর্টার ঃ রুগীর অবস্থা অশঙ্কাজনক হওয়ায় কিডনির পাথর অপারেশনের পর আবারও আল্টাসনো করে দুই কিডনিতেই পাথর ধরা পড়েছে। রুগী এখন মৃত্যুর সাথে লড়ছে। তার কিডনিতে ডায়ালোসিস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। রুগীর নাম মনজুআরা বেগম(৪২)। বাড়ি পাইগাছা উপজেলার চাঁদখালি ইউনিয়নের কাওয়ালী গ্রামে। তার একটি শিশু কন্যা সন্তান আছে। মনজুআরা বেগমের স্বামী চাঁদখালি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আনিছুর রহমান বিশ^াস জানিয়েছেন, গত ২১ মে তার স্ত্রী অসুস্থ হলে তাকে গ্রাম থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিৎিসার জন্য আনা হয়। হাসপাতালের গেটে কাদের নামের একজন দালাল তাকে পরমর্শ দিয়ে বলেন, এই রুগীকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করলে বাঁচাতে পারবেন না। এনাকে প্রাইভেট হসপিটালে ভর্তি করাতে হবে। তার পরমর্শে তিনি তার স্ত্রীকে খুলনা মেডিকেল কলেজের কিডনি সার্জারি ডা. আবুল কালাম আজাদকে স্পেশাল ভাবে দেখান। ডা. আবুল কালাম আজাদ রুগীকে জরুরী অপারেশরে পরমর্শ দেন। ডা. রুগীকে খুলনা হেলথ কেয়ার হসপিটালে ভর্তি করতে বলেন। ডাক্তারের পরামর্শে তিনি তার স্ত্রীকে গত ২৬ মে ঐ হসপিটালে ভর্তি করার। ডাক্তার ঐ দিন বেলা ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রুগীকে অপারেশন থিয়েটারে রাখেন। এই অপারেশনের জন্য তিনি ডাক্তারকে ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। শর্ত ছিল ৩ দিন পর রুগী সুস্থ হলে হসপিটাল ছাড়বেন কিন্তু দিন দিন রুগী অসুস্থ হতে থাকে এবং ক্রমাগত বমি করতে থাকে। তখন হসপিটাল কর্তৃপক্ষ রুগীকে বেড ছাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তিনি অতিরিক্ত ফি পরিশোধ করে আরও দুইদিন হসপিটালে থাকেন। ডাক্তার বলেন আপনারা বাড়ি চলে যান সব ঠিক হয়ে যাবে। ডাক্তারের কথা শুনে তিনি পাইকগাছায় গ্রামের বাড়িতে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর রুগীর খিচুনি, প্রচন্ড জ¦র ও বমি হতে থাকে। এক পর্যায়ে রুগী অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন তিনি জরুরী ভিত্তিতে তাকে পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। তারা রুগীকে খুলনায় আনার পরমর্শ দেন। তখন রুগী আর কথা বলতে পরছিল না। রুগীকে অন্য একটি প্রাইভেট হসপিটালে ভর্তি করলে ডাক্তার বলে রুগী স্টোক করেছে। ডাক্তারের পরমর্শে রুগীকে সিটি স্কান করালে ডা. সিদ্ধার্থ বাওয়ালী স্টোকের লক্ষণ পাননি। এর পর আত্মীয়দের পরমার্শে তিনি তার স্ত্রীকে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে আবারও আল্টাসনো করে রুগীর দুই কিডনিতেই পাথর ধরা পড়ে। গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি মেডিসিন ডা. এনামুল কবীর রিপোর্ট পরীক্ষা করে জানান এই রুগীকে জরুরীভিত্তিতে ডায়ালোসিস দিতে হবে। তবে রুগী শঙ্কা মুক্ত নয়। তার পরমর্শে ডায়ালোসিস দিলে রুগীর জ্ঞান ফেরে। আবারও ডায়ালোসিস দিয়ে তাকে কিছুটা সুস্থ করা হয়। এই ঘটনা ডা. আবুল কালাম আজাদকে জানালে তিনি বলেন, আমি ভালো ভাবে তাকে অপারেশন করেছি। এই রুগী এখন গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হুমায়ূন কবীর অপুর তত্ত্বাবধানে আছে তবে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। মো. আনিছুর রহমান বিশ^াস আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনাটি আমি সাংবাদিকদের জানানোর জন্য আমার স্ত্রীকে নিয়ে খুলনা প্রেসক্লাবে যাই এবং সাংবাদিকদের পরামর্শ নেই। বর্তমানে আমি বাড়িতে আছি। এই ঘটনার জন্য ডা. আবুল কালাম আজাদের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে।