স্থানীয় সংবাদ

খুলনায় লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি : বিপাকে পরীক্ষার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টারঃ বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিভাগীয় শহর খুলনার তুলনায় উপজেলাগুলোতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ভয়াবহ। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি নাকাল হচ্ছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ। লেখাপড়ায় চরম বিঘœ ঘটছে চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের। আক্ষেপ করে অনেকে বলছেন, গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে আসে। রূপসার রহমতনগরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীর বড় ভাই আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। রাতে একবার বিদ্যুৎ গেলে তিন ঘণ্টার পর এসে ১ ঘণ্টা থেকে আবার ৩ ঘণ্টার জন্য চলে যায়। গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় সীমাহীন কষ্ট হয়। লোডশেডিংয়ে ভীষণ ভোগান্তিতে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। কোরবানির পর থেকে এভাবে লোডশেডিং চলছে আমাদের এলাকায় যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। কয়রার মদিনাবাদ গ্রামের ইমদাদুল হক বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে আমরা উপকূলবাসী বেশি ভোগান্তিতে আছি। সামান্য বৃষ্টি হলে কয়রাতে বিদ্যুৎ থাকে না। রাতের বেলায় তো খালি বিদ্যুৎ চলে যায়। অনেক দিন মাগরিবের আগে বিদ্যুৎ চলে যা আর রাত ১০টার আগে আসে না। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অসুবিধা হচ্ছে। দাকোপের বাসিন্দা জি এম রাসেল বলেন, ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই বললেই চলে। রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় শুনি কিন্তু সে বিদ্যুৎ গেল কই? ইউনি ভিশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীর দুঃসহ যন্ত্রণা বাড়িয়েছে লোডশেডিং, বিশেষ করে গ্রামে পরীক্ষার সময় এমন লোডশেডিং পড়াশোনায় মনোনিবেশ নষ্ট করছে। দিনের বেলায় গরমে যেমন পড়াশোনা করা যাচ্ছে না তেমনি রাত হলে অন্ধকার। এইচএসসি পরীক্ষার সময় লোডশেডিং না করার জন্য সরকারের কাছে জোর আবেদন জানাই। অনেক অভিভাবক বলেন, গরমে বাচ্চাদের বারবার ঘুম ভেঙে যায়। এভাবে ভ্যাপসা গরমের মধ্যে ঘুমহীন রাতের পর সকাল আসে, কিন্তু বিদ্যুৎ আসে না। সকালে একটু ঘুমাব তখনও সেই বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা। এত বিদ্যুৎ যায় যে সার্জার ফ্যানে চার্জ দেওয়ারও সময় পাওয়া যায় না। নগরীর দৌলতপুরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রানী বেগমের মেয়ে ভিবা জানান, রবিবার দিবাগত রাত পৌনে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। সোমবার সকালেও একই লোডশেডিং হয়। এভাবে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে তার পড়া-শুনায় চরম ক্ষতি হচ্ছে। সোমবার দুপুরে কেসিসির নগরভবনে বিদ্যুৎ না থাকায় সেবা গ্রহীতা ও কর্মচারিরা বিপাকে পড়েন। দীর্ঘ প্রায় আধা ঘন্টা এ অবস্থার মধ্যে তাদের থাকতে হয় বলে কেসিসির কর্মচারি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান। খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, খুলনা জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক ৪ লাখ ৩০ হাজার। রোববার রাতে লোডশেডিং ছিল। সোমবার দিনে নেই। সারাদেশে বিদ্যুতের যে সমস্যা সে হিসেবে গ্রামেও লোডশেডিং হচ্ছে। এছাড়া গ্রামের লাইনেও সমস্যা থাকে। যার কারণে বেশি লোডশেডিং হয়। ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ -৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন বলেন, সোমবার তাদের কোন লোডশেডিং নেই। চাহিদা যা সেই অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। গত দু’ দিন লোডশেডিং ছিল। জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে না পারায় এ অবস্থা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button