শ্রমিক নেতা বিপ্লব সোনাডাঙ্গা বাস ষ্ট্যান্ডে মাদক ব্যবসায়ীর স¤্রাট

# সংবাদ সম্মেলনে মটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা #
# বহিরাগত প্রায় ২ হাজার লোকদের ভোটার বানিয়েছে
# ক্ষমতার দাপটে নিজের ছেলেকে বানিয়েছে প্রচার সম্পাদক
স্টাফ রিপোর্টার ঃ স্বৈরাচারি বিপ্লব সোনাডাঙ্গা বাস ষ্ট্যান্ডে মাদক ব্যবসায়ীর সম্রাট এবং সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে শ্রমিকদের জিম্মি করে রেখেছে। গত নির্বাচনে নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগে নির্বাচন দিয়ে দেবতা সেজেছে। অথচ নিজের পদ সাধারণ সম্পাদক, ক্যাশিয়ার, নিজের ছেলে ঐশ্বয্যর পদ প্রচার সম্পাদক পদে জোর পূর্বক কাউকে নমিনেশন কিনতে দেয়নি। বাকি সব পদ উন্মুক্তভাবে নির্বাচন হয়। নির্বাচনের সময় দেখা যায়, সকলে নির্বাচিত হওয়ার আশায়, দেবতা বিপ্লবের ছবি পোস্টারে দিয়াছিল। কিন্তু স্বৈরাচারী বিপ্লবের পাতানো নির্বাচনে যারা হওয়ার তারাতো হয়েই আছে।
গতকাল খুলনা প্রেসক্লাবে দুপুর ১২টায় খুলনা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং-১১১৪) সাধারণ সদস্যরা খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ১৯নং ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর ও শ্রমিক লীগ নেতা জাকির হোসেন বিপ্লবের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে ওই সব তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলন পাঠ করনে মটর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সাবেক শ্রমিক নেতা মো: রেজাউল হক বাবলু। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা আন্দোলন করো দেশের সর্বস্থরে স্বাধীন হয়েছে অথচ খুলনা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে মটর শ্রমিকরা স্বাধীন পায় নাই। স্বৈরাচারী বিপ্লব এখনও শ্রমিকদের মারধর করিতেছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর শ্রমিক একলাছ (ড্রাইভার) কে মারধর করে ৮০ হাজার ৭শ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চাদাবাজি মামলা হয়। গত ৪ আগস্ট বিপ্লব বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের তার বাহিনীকে নিয়ে সোনাডাঙ্গা ২য় আবাসিক এলাকায় ও খোকন কমিশনারের বাড়ির সামনে ছাত্রদের মারধর করে এবং কুরআনের পাখি মাওলানা দেলোয়ার সাঈদীর সাহেবের লাশ খুলনার মাটিতে নামাতে না পারে তার জন্য মিছিল করিয়াছে। সে সোনাডাঙ্গা বাস ষ্ট্যান্ডে মাদক ব্যবসায়ীর সম্রাট এবং সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে শ্রমিকদের জিম্মি করে রেখেছে। শ্রমিকের ঘাম ঝরানো ইউনিয়নের কল্যাণ তহবিলের গচ্ছিত টাকা দিয়ে কেসিসি’র ১৯ নং ওয়ার্ডে কমিশনার পদে নির্বাচন করেছে। ড্রাইভার জামালের গাড়ির দূর্ঘটনায় এক জন যাত্রী মারা যায়, যার কারণে ড্রাইভার জামাল তার সুপার ভাইজার ও হেল্পারদের ফাসির অর্ডার হয়। স্বৈরাচারি বিপ্লব তদবিরের জন্য জামালের স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় কোন এক হোটেলে রাখে এবং শীলতাহানীর চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে জামালের মামলার আর কোন তদবির করে নাই। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ মটর শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি দুদু ভাই ফাসি স্থগিত করিয়ে খুলনা জেলে নিয়ে আসে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এ সংবাদ সম্মেলনে মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ১৯নং ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর ও শ্রমিক লীগ নেতা জাকির হোসেন বিপ্লব বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার সোনাডাঙ্গা থানার একটি ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মামলায় জামিন নিতে গেলে খুলনা মহানগর হাকিম-২ আদালতের বিচারক জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জাকির হোসেন বিপ্লব খুলনা মহানগর শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং খুলনা বিভাগীয় মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাকির হোসেন বিপ্লব, তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফাহিম হোসেন ঐশ^র্য্যসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন শ্রমিক নেতা ইকলাস শেখ। তিনি মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বিগত কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। মামলার এজাহারে ইকলাস উল্লেখ করেন, নির্বাচন নিয়ে বিপ্লবের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। এ কারণে বিপ্লব বিভিন্ন সময় তার কাছে চাঁদা চাইতেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে চাঁদার দাবিতে তাকে মারধর করে ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর সোনাডাঙ্গা থানায় তিনি মামলা করেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিএনপি কার্যালয় ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিপ্লবের বিরুদ্ধে আরও ৩টি মামলা হয়েছে। মামলা হলেও তিনি প্রকাশ্যেই কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।