স্থানীয় সংবাদ

োখুলনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৪৪ জনসহ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ১১১ : মৃত্যু ১

# ফের চোখ রাঙ্গাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর #
# এ পর্যন্ত খুমেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি-২৯৫, মৃত্যু-৭
# এ পর্যন্ত বিভাগের মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ৭৭১, মৃত্যু-১

কামরুল হোসেন মনি ঃ ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উৎপাত বেড়েই চলছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। যার কারণে খুলনায় ফের চোখ রাঙ্গাতে শুরু করেছে ডেঙ্গু জ্বর। এ বছরে সর্বোচ্চ একদিনে গতকাল রোববার (৬ অক্টোবর) ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে খুলনায় ৪৪ জন। এ সময়ে খুমেক হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৮৮৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অধিদপ্তরের ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ওই ডেঙ্গু রিপোর্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়. গত ২৪ ঘন্টায় ( শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১১১ জন। এ সময়ে খুমেক হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৮৮৯ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এর মধ্যে খুমেক হাসপাতাল ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে মধ্যে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৪৪ জন। যা এ বছরের সর্বোচ্চ। এছাড়া বাগেরহাটে ৫ জন, সাতক্ষীরায় ৪ জন, যশোরে ১২ জন, ঝিনাইদহে ১৩ জন, নড়াইলে ১১ জন, কুষ্টিয়ায় ১০ জন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯ জন এবং মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অধিদপ্তরের সূত্র মতে, এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ ভর্তি হয়েছে ৭৭১ জন এবং মৃত্যু হয় ১ জনের। তবে মৃত্যুর তালিকায় সর্বোচ্চ রয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু রোগী সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এ সময়ে মোট ভর্তি হয় ২৯৫ জন। এর পরে রয়েছে যশোরে ৩ জনের মৃত্যু। তবে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু শনাক্তের দিক থেকে ৫১২ জন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এই জেলা। এছাড়া মেহেরপুরে ৩১৭ জন, ঝিনাইদহ ১৭২ জন এবং মৃত্যু ১ জন, বাগেরহাটে ৫১ জন, সাতক্ষীরায় ৬১ জন, মাগুরায় ৯১ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১৪ জন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬১ জন এবং কুষ্টিয়া ও নড়াইল জেলায় ২৭২ জন করে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৫৭০ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ২৭১ জন। এ সময়ে মোট ডেঙ্গু রোগী রেফার্ড করা হয়েছে ৩৬ জন। যার মধ্যে খুলনায় রেফার্ডের রোগী সংখ্যা ২৬ জন। খুমেক হাসপাতালে ২৪ ঘন্টায় একজনের মৃত্যু : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরীফ শেখ (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে এই হাসপাতালে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। খুমেক হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার সুহাষ রঞ্জন হালদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাগেরহাট সদরের শরীফ শুক্রবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।’ এর আগে গত ২ অক্টোবর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাহার (৪৫) নামে এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, চলতি বছরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩০৫ জন রোগী ভর্তি হন। বর্তমানে ৪২ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নয় জনকে ভর্তি করা হয়, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১ জন। মারা গেছেন এক জন। চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর এই কয়েক মাস ডেঙ্গুর জন্য উচ্চঝুঁকি থাকে। এই সময়ে বৃষ্টি হয়, মশার প্রজননের জন্যও উপযুক্ত তাপমাত্রা থাকে। সাধারণত মশা প্রজননের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মশাবাহিত অন্য রোগ নিরাময়ে সক্ষম হলেও প্রাণঘাতী ডেঙ্গু নিরাময়ে অক্ষম। কোন শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার যন্ত্রণা দেখে পিতা-মাতা কতটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন একমাত্র ভুক্তভোগী ছাড়া কারও তা উপলব্ধি করার উপায় নেই। তাই ডেঙ্গুতে ভয় খুব বেশিই হয়। ডেঙ্গু মশা এতোটাই ভয়ঙ্কর যে, এর দংশনে প্রচন্ড কম্প দিয়ে জ্বর উঠে। সহসা জ্বর ছাড়তে চায় না। ক্রমান্বয়ে মানুষ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। মনে হতে পারে যে, ডেঙ্গু মশার মধ্যে জীবাণু রয়েছে। যেমন বিষধর সাপে রয়েছে বিষ। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা কিন্তু তা নয়। মশার নিজের মধ্যে কোন জীবাণু নেই। এটা বাহক মাত্র। রোগাক্রান্ত ব্যক্তির দেহে দংশন করে জীবাণু সংগ্রহ করে এবং তা অন্যের দেহে ছড়ায়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button