জেলা ও পুলিশ প্রশাসন মাঠে না থাকার সুযোগে যশোরে ভেজাল মোবিল কারবারীরা অপ্রতিরোধ্য
মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের হঠাৎ করে নিরবতার কারনে যশোর শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রীক আশপাশ এলাকায় গড়ে ওঠা ভেজাল মোবিল কারবারীরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। তারা দেদারছে দেশ বিদেশের নামী দামী কোম্পানীর মোড়ক ও পট সংগ্রহ করে তাতে তাদের তৈরীকৃত পোড়া মোবিল দিয়ে বানানো মোবিল বাজার জাত করছে। ভেজাল মোবিল ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলার যানবাহন মালিকেরা এক দিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অপরদিকে, সরকার এই খাত থেকে মোটা অংকের রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর,ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই তৈরী করা হচ্ছে যানবাহন ক্ষতিকারক ভেজাল মোবিল। যে মোবিল তৈরীর কারখানা থেকে বড় ধরনের দূর্ঘটনা সৃষ্টি হতে পারে। ভেজাল কারবারীরা অর্থের লোভে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তোয়াক্কা না করে তাদের ভেজাল কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ভেজাল মোবিল কারাখানার আশপাশের বাসিন্দারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভেজাল মোবিল কারাখানার সাথে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন মালিক ও শ্রমিক জানান,বর্তমানে রহিম,সাগর,সাদ্দাম,সেলিম,বাচ্চু, মামুন, বড় সেলিম, আমিরুল, শরিফুল, আলী, গিয়াস, জাকির,নাজিম,ইমলাক,রাজু,টিপু, আক্তার,শাকিল,মোর্শেদ,ফারুক ও আমিরসহ ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি সিন্ডিকেট গ্রুপ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পোড়া মোবিল সংগ্রহ করে তা তাদের নির্দিষ্ট কারখানায় তুলে তা জ¦ালিয়ে পরিবেশ বিনষ্ট করে ভেজাল মোবিল তৈরী করছে। ভেজাল মোবিলের ন্যায় তারা পোড়া মোবিল থেকে গ্রীস,গিয়ার,হাইড্রোলিক, ডাম্পার অয়েল তৈরী করে তা বিভিন্ন নামী দামী কোম্পানীর পট সংগ্রহ করে তাতে পুরে বাজার জাত করছে। দেশ বিদেশের নামী দামী কোম্পানীর মোবিল বলে তাদের তৈরীকৃত ভেজাল মোবিল পটের ভিতরে ঢুকিয়ে বাজার জাত করছে। বাজার জাত করার জন্য তাদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। সিন্ডিকেটের কাজ তাদের নকল মোবিল কুরিয়ারসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে পৌছে যাচ্ছে। মান সম্মত এক পট মোবিল বাজারে বিক্রি হয় ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকার অধিক। অথচ তাদের উৎপন্ন ভেজাল মোবিল তারা দোকান্দার সেজে বিক্রি করছে কোনটি সাড়ে ৪শ’ টাকা আবার কোনটি ৬ শত টাকা। তাছাড়া, ভেজাল মোবিল তৈরী করতে এই সিন্ডিকেট যে কারখানা ব্যাবহার করছে তা চরম ঝুঁকিপূর্ন। টাকার বিনিময়ে কিছু শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ কারবারীদের ভেজাল মোবিল কারখানায় দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করছেন। তাছাড়া, ভেজাল মোবিল কারখানার আশপাশে যারা বসবাস করছেন তারা মোবিলের কালো ধোয়ায় চরমভাবে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। সূত্রগুলো বলেছেন,শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ভেজাল মোবিল কারবারীদের কয়েক ডজ্জন কারখানা। যে কারখানায় প্রতিনিয়ত জ¦ালিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ভেজাল মোবিল। ভেজাল মোবিল কারাখানার মালিকের কথা মতো বিভিন্ন কোম্পানীর ব্যারেলে ঢুকিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে। গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের পর পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার ফলে ভেজাল মোবিল কারবারীরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এদেরকে না থামালে ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন না করা হলে দেশে চলমান যানবাহন ও মোবিল ব্যাবহার করা যন্ত্রাংশ চিরতরে বিনষ্ট হয়ে যাবে বলে সূত্রগুলো দাবি করেছেন। তাই অবিলম্বে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের তড়িৎ পদক্ষেপ কামনা করেছেন ওই অঞ্চলের অন্যান্য সাধারণ ব্যবসায়ীরা।