স্থানীয় সংবাদ

সুন্দরবন রেঞ্জে বনদস্যুরা ফের বেপরোয়া

জেলেদের কাছে ভারতে বসে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবির অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ দীর্ঘদিন সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে বনদস্যু মুক্ত থাকার পর অতি সম্প্রতি আবারো বনদস্যুদের কয়েকটি বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এই বাহিনীর অত্যাচারে জেলে-বাওয়ালীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ভিন্ন নামে ভিন্ন পরিচয়ে ভারতে বসে এই বনদস্যু গ্রুপটি জেলেদের কাছে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করছে বলে জেলে-বাওয়ালীরা অভিযোগ করেছেন। আত্মসমর্পনকৃত বনদস্যু আলিম বাহিনীর প্রধান আব্দুল আলিম, মিলন, জিয়া, জনাব ও নুরু বর্তমানে ভারতে বসে এ চাঁদা দাবি করছে বলে তারা অভিযোগ করেন। এর ফলে সুন্দরবন নির্ভরশীল জেলে-বাওয়ালীদের মাঝে ফের বনদস্যু আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পাশের্^খালী গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, সুন্দরবনে আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযানের পর প্রায় সব বনদস্যু বাহিনী গুলো আতœসমর্পন করে। এরফলে গত কয়েক বছর যাবত সুন্দরবন দস্যু মুক্ত থাকলেও দেশের পট পরিবর্তনের পর বর্তমানে ২/১ টি বাহিনী নতুন নামে আবারো মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকালে বনদস্যু আলিম বাহিনীর প্রধান আলীম ভারতীয় ০০৯১৯৩৮২৬২৩৯৮১ নং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বনদস্যু আকাশ বাহিনীর পরিচয়ে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গেলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
নীলডুমুর গ্রামের জেলে এমএম শরীফ উদ্দীন জানান, আলীফ ওরফে দয়াল ওরফে আলীম ভারতীয় ০০৯১৯৩৮২৬৩২৯৮১ নাম্বার থেকে আমার কাছে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদার টাকা না দিলে ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, বনদস্যু আলীম, মিলন, জিয়া, জনাব ও নুরু বাহিনী র‌্যাবের কাছে অস্ত্রসহ আতœসমর্পনের পর কয়েকবার আদালতে হাজিরা দেয়ার পর তারা ভারতে চলে যায়। বর্তমানে সেখান থেকে তারা ভারতীয় নাম্বার দিয়ে বনদস্যু আকাশবাহিনীর পরিচয়ে চাঁদা দাবী করছে। কয়রা গ্রামের আবু সালেহ একই সুরে জানান, সম্প্রতি আকাশ বাহিনীর পরিচয়ে বনদস্যু আলীম আমার কাছেও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে পরে আমার ক্ষতি করার হুমকি দেয়া হয়। বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের জেলে আবুল হোসেন জানান, একই নাম্বারে আমাকেও ফোন দিয়ে নিজেকে দয়াল আলী পরিচয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে অসুবিধা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। বিষয়টি বুড়িগোয়ালিনী বনস্টেশন অফিসকে তারা অবহিত করেছেন বলে জানান। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা মো: হাবিবুল ইসলাম জানান, দেশের পট পরিবর্তনের পর একটি গ্রুপ এ কাজটি করছে। তবে তারা কোন সুবিধা করতে পারবেনা। আমরা শক্ত অবস্থানে রয়েছি। এ ব্যাপারে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) এ.কে.এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান, বিষয়টি লোকমুখে শুনার পর সুন্দরবনের ভিতরে টহল জোরদার করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button