স্থানীয় সংবাদ

ডিমের নির্ধারিত দরের প্রভাব পড়েনি খুলনার বাজারে

তদারকি অভিযান জোরদারের দাবি

স্টাফ রিপোর্টারঃ সরকার নির্ধারিত দরে খুলনার বাজারে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না ডিম। আওয়াজ দিয়ে ঘোষণা দিয়েও আগের দরে ডিম কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা এ দরে বিক্রি করছেন। খুলনায় খুচরায় প্রতিপিচ ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৩/১৪ টাকা। আর সরকার নির্ধারিত দর ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারী হিসেব অনুযায়ী প্রতিপিচ ডিমে ক্রেতাদের ১ টাকা ১৩ পয়সা থেকে ২টাকা বেশী গুণতে হচ্ছে। দৌলতপুর মুচি পাড়া মোড়ের মুদি দোকানদার স্বপন বলেন, তিনি ১৩ টাকা করে ডিম কিনেছেন। তাই তিনি ১৪ টাকা করে বিক্রি করছেন। বুধবার রাতে এ প্রতিনিধির সাথে স্বপনের কথা হয়। দৌলতপুর বাজারের প্রতিটি দোকানে ছোট ডিম সাড়ে ১৩টাকা আর বড় ডিম ১৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর কম দামে বিক্রি করতে নারাজ। বিক্রেতারা বলছে, তারা কম দামে কিনতে না পারলে কম দামে বিক্রি করবে কি করে। ওই এলাকার ক্রেতা রাণী বেগম বলেন, দোকানদাররা সরকারের বেধে দেয়া নিয়মে ডিম বিক্রি করতে নারাজ। তারা নানা অজুহাতে বেশী দামে ডিম বিক্রি করছে। এ জন্য বাজারে তদারকি অভিযান জোরদার করার দাবি জানান এই নারী ক্রেতা। ফকিরহাট উপজেলার খাজুরা গ্রামের ডিম ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ বলেন, খামারিদের একটি ডিম উৎপাদন করতে সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী পড়ছে। তাছাড়া সেখান থেকে তাকে ক্রয় করে খুলনার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। তার সাথে যোগ হচ্ছে পরিবহণ খরচ এবং শ্রমিক খরচ। যা সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশী। তিনি আরও বলেন, লেয়ার মুরগী থেকে ডিম উৎপাদন করা হয়। অনেক মালিক ডিম উৎপাদন শেষে ফার্ম বন্ধ করে দিচ্ছেন। খাবার ও বাচ্চার দাম বেশী থাকায় অনেকেই খামার ছেড়ে দিয়ে বিকল্প ব্যবসার চিন্তা করছেন। সরকার যে দাম বেধে দিয়েছেন সে দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছেনা। তিনি পাইকারী পর্যায়ে খুলনার বিভিন্ন তিনি বাজারে ১০০ পিচ ডিম সাড়ে ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। বটিয়াঘাটার ফার্ম মালিক নিমাই চন্দ্র বলেন, বড় বড় কোম্পানীগুলোকে সরকার বিভিন্ন সময়ে সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকেন। কিন্তু আমাদের বেলায় সেটি প্রযোজ্য হয় না। কোম্পানীগুলো সিন্ডিকেট করে মুরগীর বাচ্চার দাম ক্রমশ বৃদ্ধি করছে। এভাবে বাড়তে থাকে সরকার নির্ধারিত দরে ডিম বিক্রি করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার অনেক খামারী বাচ্চার দাম বৃদ্ধির কারণে ফার্ম বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার কোম্পানীগুলোর দিকে নজর না দিলে এ শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন। দোলখোলা ইসলামপুর মোড়ের ব্যবসায়ী বাসুদেব বলেন, পাইকারী পর্যায়ে ডিম বেশী দরে ক্রয় করছেন। সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি করলে আমাদের কোন চালান থাকবেনা। নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে কথা হয় সৈয়দ নজরুলের সাথে। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মাংসের পর আমিষের চাহিদা মেটায় ডিম। কিন্তু সেই ডিমের বাজার গত কয়েক মাস ধরে উর্ধমুখী। তাছাড়া নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে জীবন ধারণ করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বাজার ব্যবস্থাপনার দিকে সরকারের নজর দেওয়ার তাগিদ জরুরী বলে তিনি মনে করেন। দোলখোলা ইসলামপুর মোড়ে কথা হয় অতুনু করের সাথে। তিনি বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও ব্যবসায়ীরা মানছে না।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button