স্থানীয় সংবাদ

থানায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে : অপহরণের বিষয়ে থানায় জিডি

# খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অপহরণ #
# অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্য নেয়ার জন্য থানায় হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষের চিঠি
# অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়া আতঙ্কে অফিসে আসছে না কর্মকর্তা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ গত ২১ অক্টোবর খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) জি এম ইখতিয়ার উদ্দিনসহ সাজ্জাদ নামে এক ব্যক্তির অপহরণের বিষয়ে মামলা করতে গেলে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসির বিরুদ্ধে। পরে অুিভযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। গত ২২ অক্টোবর অপহনের বিষয়ে অনুপম মন্ডল, লিজা আক্তার, প্রদীপ আলী শেখ, মাসুম শেখ, মো: আরিফ শেখ, মো: আলাউদ্দিন সরদার এবং মো: আজহারুল ইসলাম খান নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জন অভিযুক্ত করে থানায় সাধারণ ডায়রি করেন খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বর্তমানে হাসপাতালে অফিস করতে ভয় পাচ্ছেন ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
এদিকে গত ২৬ অক্টোবর (শরিবার) খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি এম ইখতিয়ার উদ্দিন তার অপহরণ বিষয়টি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। বিষয়টি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক গত ২৯ অক্টোবর ( মঙ্গলবার) হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি এম ইখতিয়ার উদ্দিনের অপহরনের অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সোনাডাঙ্গা মডেল থানা ওসির বরাবর একটি চিঠি প্রদান করেছেন। এই একই চিঠির অনুলিপি খুলনা পুলিশ সুপার ও যৌথ বাহিনীর ক্যাম্প, আবু নাসের স্টেডিয়াম, বৈকালী খুলনার ইনচার্জকেও প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে গতকাল (৩০ অক্টোবর ) বুধবার বিকেলে খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি এম ইখতিয়ার উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন গত ২১ অক্টোবর অপহরণের বিষয়ে আমি পরের দিন ২২ অক্টোবর থানায় মামলা করতে গেলে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মামলা গ্রহণ করেননি। তিনি আমাকে সাধারণ ডায়রি করতে বলেন, আর বলেন মামলা পড়ে দেখা যাবে। তাই মামলা করতে না পেরে আমার অপহরণের বিষয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমুলক কোন বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমি ভয়তে অফিসে করছি না। কারণ যে কোন সময়ে আমি আবারও হামলার শিকার হতে পারি। তিনি বলেন, ওই সময়ে হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন পরিচালক ডা: গৌতম কুমার পাল। তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই পরিচালক স্যার স্বেচ্ছায় অবসরে চলে যাওয়ায় আমি গত ২৬ অক্টোবর হাসপাতালের বর্তমান পরিচালকের বরাবর আমার অপহরণের বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেছি। এই অপহরণের বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত ২৯ অক্টোবর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসিকে বর্তমান হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা: মো: মোহসীন আলী ফারাজী স্যার একটি চিঠি প্রদান করেছেন।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মো: শফিকুল ইসলাম মামলা না নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কথাটি সত্য না। ভুক্তভোগী মামলা করতে আসলে এখনই নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপহরণের বিষয়ে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি এম ইখতিয়ার উদ্দিনকে অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য খুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক যে চিঠি তাকে দিয়েছেন তিনি পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা: মো: মোহসীন আলী ফারাজী এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি এম ইখতিয়ার উদ্দিন তার অপহরণের বিষয়ে জিডিতে উল্লেখ করেন, অনুপম মন্ডল, লিজা আক্তার, প্রদীপ আলী শেখ, মাসুম শেখ, মো: আরিফ শেখ, মো: আলাউদ্দিন সরদার এবং মো: আজহারুল ইসলাম খান নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জন আসামিরা গত ২১ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে আমাকে ও হাসাপাতালের অফিস অ্যাটেন্টডেন্ট সাজ্জাদ হোসেনকে তুলে নিউ মার্কেটে পেছনে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি প্রদান করেন। এ সময়ে তারা বলেন আমাদের লিডার বিএনপি নেতা ফারুক আসতেছে তার সাথে কথা বলেন। বিএনপি নেতা ফারুক আসলে তিনি ঘটনার বিষয় শুনে এবং উক্ত বিষয় হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলে চলে যায়। পরে ওখান থেকে ওই আসামিরা আমাকে আরও একটি অফিসে নিয়ে গেলে সেখান থেকে সোনডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button