নগরীর বাস্তুহারা এলাকার ইকবাল বহিস্কৃত হয়েও এখনো বেপরোয়া
# ইকবাল যেন এখন আতঙ্কের নাম #
# মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সালিশ বিচারসহ বিভিন্ন অপকর্মের ওস্তাদ #
# ইকবালকে খুলনা মহানগর বিএনপি’র শোকজ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগের ছত্র ছাঁয়ায় থাকার পর গত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে চাঁদাবাজি মামলায় বহিষ্কৃত ইকবাল বাহিনী প্রধান ইকবাল হোসেন বাস্তুহারা এলাকায় এখন আতঙ্কের নাম। একসময় সে অটো চালাতো। অটো চালানো বাদ দিয়ে এখন এলাকায় বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ট। মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সালিশ বিচারসহ বিভিন্ন অপকর্মে তার নাম জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। যুবলীগ নেতা বাবলু দীর্ঘ ১৬বছর বিএনপির নেতা কর্মীদের হামলা মামলা দিয়ে অতিষ্ঠ করে রেখেছে টাকার বিনিময়ে সেই বাবলুকে আবারও এলাকায় ঢুকতে দিয়েছে এই ইকবাল। তার বিরুদ্ধে দেওয়া একাধিক অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এই সেই ইকবাল যেকিনা মহানগর যুবলীগ নেতা, বাস্তহারা ইউনিট বিএনপির অফিস ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, মালামাল লুটকারি, বিভিন্ন সময়ে নেতা কর্মীদের মারপিট ও কোপাতে নেতৃত্ব দানকারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী জুয়েল হোসেন দিপুর খালাতো ভাই। এমনকি সে সাবেক যুবলীগ নেতা বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা বাবলুর ভাই বাবুর কাছের বন্ধু। ইকবালের ছেলে বাবুর অফিসে চাকুরী করে। তাছাড়া বাবুর নিকট থেকে বিগত বছর গুলোতে আর্থিক সুবিধা ভোগ করে আসছে। দিপু ও বাবলুর আশীর্বাদ পুষ্ট এই ইকবাল বিগত আওয়ামীলীগের সময় আওয়ামী দু: শাসনের কবল থেকে ছিল সম্পূর্ণ মুক্ত। যেমন একদিনের জন্যও তাকে এলাকা বা ঘর ছাড়তে হয়নি তেমন সে বিএনপির প্রায় কর্মসূচিতে ছিল নিরব ও নিষ্ক্রিয়। নিজের অটো চালানোর কাজ ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলো সে। তাছাড়া দিপু ও বাবলুর সাথে বাস্তহারা এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করে। হঠাৎ ৫ই আগষ্টের নব স্বাধীনতার পর এই পদপদবী বিহীন ইকবাল বাস্তহারা ইউনিট বিএনপির বড় নেতা হয়ে যান। বিগত আওয়ামী আমলের বাস্তহারা শীর্ষ সন্ত্রাসী টুপি শহীদের প্রধান সহযোগী দবির উদ্দীন মোহাম্মদ ও তার চাচাতো ভাই নূর ইসলামসহ কিছু সহযোগীদের নিয়ে গঠন করে ইকবাল বাহিনী। ৫ই আগস্টের পর থেকে অদ্যবধি অটো চালানো বাদ দিয়ে ওই সকল সহযোগীদের নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিএনপির অফিসে নিয়মিত অবস্থান করে। ভিন্ন রকমের বিচার সালিশের নামে অর্থ বাণিজ্য করে থাকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে দলীয় সিদ্ধান্ত হয় মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী ওমরের মাদক বিক্রির পয়েন্ট ভাঙ্গারি ঘরের আড়ালে মাদক ব্যবসায়ীর জায়গা উচ্ছেদ করতে হবে। সে মোতাবেক ১৫ দিনের সময় বেধেঁ দেওয়া হয়। কিন্তু দুই মাসেও তার অবস্থান থেকে সরে যায়নি। কারন ইকবাল গোপনে তার নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে। বিনিময় ওমরকে শেল্টার দিচ্ছে।
৫ আগস্টের পর, ইকবাল ও তার সাঙ্গপাঙ্গ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা টুপি শহীদের সহযোগী দবির হোসেনসহ কয়েকজন মিলে আওয়ামী দলীয় সমর্থক ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের কর্মচারী মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম দুলালের উপর চড়াও হয়। এলাকা ছাড়ার জন্য তাকে হুমকী প্রদান করে এবং মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। এরপর দুলাল এলাকায় থাকার জন্য ইকবালকে ৪হাজার টাকা দিয়েছে। কিন্তু ইকবাল ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় বিভিন্নভাবে হয়রানী, শারীরিক নির্যাতন মামলা, হামলার হুমকী প্রদান করে আসছে। এঘটনায় গত ২২অক্টোবর দুলাল জাতীয়তাবাদী দল খুলনা মহানগর শাখার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
গত ৮ অক্টোবর দুপুরে বিএনপির দলীয় কর্মী বাস্তহারা কলোনী এলাকার কবির হোসেন মীরের অজান্তে তারই মোবাইল থেকে বিকাশ পিন নম্বর নিয়ে প্রথমে ৩৪শ টাকা, পরে আরও ২ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেন। এঘটনায় ভুক্তভোগী কবির খালিশপুর থানায় জিডি করেছে। গত কয়েকদিন আগে হাউজিং আবাসিক এলাকায় একটি মেয়েলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুনিয়র ছেলেদের সাথে টাকা ভাগাভাগি বনিবনা না হওয়ায় উত্তেজিত হয়ে ঘটনাটা সাংবাদিকের কাছে প্রকাশ করে। বিভিন্ন সাংবাদিক দিয়ে জাতীয়দাবাদী মহিলা দল খুলনা মহানগর কমিটির সাবেক সদস্য ফরিদা বেগমকে হেনস্থ করার চেষ্টা করছে। এবং ওই ঘটনার সাথে ফরিদাকে জড়ানোর অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। সে কিভাবে মহিলা দল করে। সে দেখে নেবে বলে হুমকী দেয় ইকবাল। তাছাড়া বাবা মা তুলে তাকে গালি গালাজ করে। প্রকাশ্যে বিভিন্ন রকমের হুমকী প্রদান করে আসছে। নিজের অটো চালানোর কর্ম বাদ দিয়ে চাঁদাবাজি, বিচার সালিশির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে নিয়মিত মদ পান, জুয়া খেলা ইকবালের প্রতিদিনকার অভ্যাস। তারই ধারাবাহিকতায় ৫আগস্টের কয়েকদিন পর রাত আনুমানিক ১১টায় মাতাল অবস্থায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন বাবুলকে বিনা উস্কানিতে গালিগালাজ করে অপমান অপদস্ত করে। বিএনপির বিগত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় ইকবালের নামে দুটি চাঁদাবাজি মামলা হয়েছিল। বিভিন্ন অপকর্মের জন্য দল থেকে বহিষ্কারও হয়েছিলো। জাতীয়তাবাদী দলের খুলনা মহানগরের আহবায়ক ও সদস্য সচিবের নিকট ইকবালের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন জাতীয়দাবাদী মহিলা দল খুলনা মহানগর কমিটির সাবেক সদস্য ফরিদা বেগম। ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এড. মোঃ আলি বাবু জানান, দলীয় আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের কারনে ইকবাল হোসেনকে আমি যে একবার বহিষ্কার করেছিলাম। ইকবাল ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য। বর্তমানে বিএনপি খুলনা মহানগর থেকে ইকবাল হোসেনকে শোকজ করা হয়েছে।