খুলনা বিভাগে একদিনে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ১৫৪
# এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ডেঙ্গু রোগী ছাড়াল ৫৭৭৬ জন : মৃত্যু ১৯
# বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুতে খুবির সহকারী গ্রন্থাগারিকের স্ত্রীর মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা বিভাগে একদিনে নতুন করে ১০ জেলায় ও দুই সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিলে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১৫৪ জন। এ সময়ে সরকারি কোন হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুর মৃত্যুর কোন খবর পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগে ১০ জেলাসহ দুই সরকারি হাসপাতালে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৫৭৭৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অধিদপ্তরের ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সাফিনা খানম নামে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী গ্রন্থাগারিক এস এম আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। খুবি’র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ওই ডেঙ্গু রিপোর্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়. গত ২৪ ঘন্টায় ( শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে খুলনা বিভাগে ১০ জেলায় ও দুই সরকারি হাসপাতাল মিলে মোট ডেঙ্গ রোগী ভর্তি হয়েছে ১৫৪ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে যশোরে। এছাড়া খুলনায় ১৯ জন, বাগেরহাটে ৬ জন, সাতক্ষীরায় ১ জন, ঝিনাইদহে ১৭ জন, মাগুরায় ৫ জন, নড়াইলে ১৫ জন, কুষ্টিয়ায় ১৬ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১৩ জন ও মেহেরপুরে ৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জন এবং সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৫ হাজার ৭৭৬ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। এর মধ্যে খুমেক হাসপাতালে চিবিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু রোগী মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের । এছাড়া খুলনায় ১ জন, যশোরে ৩ জন, ঝিনাইদহ ১ জন এবং কুষ্টিয়ায় দুইজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তির মধ্যে খুলনায় ১৬৭০ জন, বাগেরহাটে ৭৪ জন, সাতক্ষীরায় ১৩৬ জন, যশোরে ৮৫২ জন, ঝিনাইদহ ৩৬৯ জন, মাগুরায় ১৯৫ জন, নড়াইলে ৪৬৫ জন, কুষ্টিয়ায় ৬১৩ জন. চুয়াড্ঙ্গাায় ১১৫ জন, মেহেরপুরে ৪৮৫ জন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩৪ জন এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৬৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে খুলনা বিভাগে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন ৩৫৬ জন। রেফার্ড করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
খুমেক হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১৯ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান ৮ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ১১০জন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬৯৯ জন রোগী ভর্তি হন। এসময়ে মোট মৃত্যু হয় ১২ জনের।
এদিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সাফিনা খানম নামে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী গ্রন্থাগারিক এস এম আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। খুবি’র সূত্রে মতে রবিবার সকাল ৭ টায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মারা যান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী গ্রন্থাগারিক এস এম আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সাফিনা খানম। পোর্ট কলোনী জামে মসজিদে যোহরবাদ জানাজা শেষে পোর্ট কলোনী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে ও ২ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। এক শোক বার্তায় তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। অনুরূপভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান, গ্রন্থাগারিক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মো. সারওয়ার জাহান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন। আদ-দি¦ন আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সূত্র মতে, গত একদিনে এই হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন ১৫ জন। এছাড়া বেসরকারি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সূত্র মতে, গত একদিনে এ্ই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ১০ জন। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৪০ জন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৩২২ জনকে। এর মধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাসে একজন ডেঙ্গু রোগী মৃত্যু হয়।