স্থানীয় সংবাদ

খুলনার সমালোচিত পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি, বর্তমান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) বোম্ব স্কোয়াডের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এস এম কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদক খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীতে ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার তথ্য গোপন এবং ১ কোটি ২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে থেকেই খুলনায় সমালোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এস এম কামরুজ্জামান। ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল হাসান টিটোকে থানার ভেতরে ঝুঁলিয়ে পেটানোর ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। গত ১৫ বছরে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হামলা, নির্যাতন, মাদক বিক্রেতাদের সঙ্গে সখ্যতাসহ অসংখ্য অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। কামরুজ্জামান নিজেকে পরিচয় দিতেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের ভাগ্নে হিসেবে। সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কখনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তাকে দুই দফা পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার করা হয়। গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়ই তিনি খুলনাতেই দায়িত্ব পালন করেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পর তাকে কেএমপির গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বদলী করে বোম্ব স্কোয়াডে নেওয়া হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা টিটো। দুদকের মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সম্পদ বিবরণী দাখিলকালে এস এম কামরুজ্জামান এর ২ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবরসহ সর্বমোট ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। উক্ত সময়ে তার ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংকে ৪৫ লাখ টাকার দায় ছিল। সুতরাং দায় বাদে তার নীট সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকা। তার অতীত জীবনের সঞ্চয়, বেতন-ভাতার আয়, বাড়ি-ভাড়ার আয়, মাইক্রো-বাস ভাড়া হতে আয়, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রাপ্তি ও জমি বিক্রয় বাবদ মূলধনী আয় হতে মোট গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৭১৮ টাকা। তিনি পারিবারিক ব্যয় ও ঋণ পরিশোধ বাবদ ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৪ টাকা ব্যয় করেন। অর্থাৎ তার নীট আয়/সঞ্চয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা। এস এম কামরুজ্জামান এর জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাড়ায় ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকা। সুতরাং এস এম কামরুজ্জামান বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে চাকরি করার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজ মালিকানা ও ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button