ঢাকায় স্বামী’র আত্মহত্যার ৪৮ঘণ্টার পর যশোরে গলায় ফাঁস দিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা
যশোর ব্যুরো ঃ ঢাকায় স্বামী মাসুদ রানা (২২) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ৪৮ ঘণ্টার পর স্ত্রী জলি আক্তার ঐশী (৩০) আত্মহত্যা করেছেন। রোববার দিবাগত মধ্যরাতে জলি আক্তার ঐশী নিজের ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। একই সাথে দম্পতির মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত জলি আক্তার ঐশি ঘোপ সেন্ট্রাল রোড বেলতলা এলাকার মৃত মোস্তফা দেওয়ানের মেয়ে এবং যশোর সদর উপজেলা লেবুতলা বীর নারায়নপুর গ্রামে মাসুদ রানার স্ত্রী।
মৃত মাসুদের চাচাতো ভাই মনিরুজ্জামান মনি,বলেন, মাসুদ রানার সাথে ঘোপ সেন্ট্রাল রোড বেলতলা এলাকার জলি আক্তার ঐশির সাথে টিকটকের মাধ্যমে দু’জনের পরিচয় হয়।পরে গত ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে তারা দুইজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এর কয়েক মাস পরে মাসুদ চাকুরির সুবাদে ঢাকায় চলে যায়। তাদের দাম্পত্য জীবন মধুময় ভাবে কাটছিল। দু’জনে মিলে টিক টকারও করে একে অপরে ভাইরাল হয়। কিন্তু তাদের সেই সুখ কপালে জোটেনি। সামান্য বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অভিমান তৈরী হয়। এই অভিমান থেকে শুক্রবার রাতে স্ত্রীর ঐশীর সাথে মাসুদ রানার ফোনে ঝঁগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে মাসুদ রানা স্ত্রীর ওপরে অভিমান করে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকার বাসায় ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে শনিবার স্বামীর দুপুরে ঢাকা থেকে মাসুদের লাশ যশোরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। এর পর থেকে ঐশি বাড়িতে মনমরা হয়ে থাকত। পরে স্ত্রী জলি আক্তার ঐশি স্বামীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে রোববার দিবাগত রাতে নিজের ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সোমবার সকালে বেলা হলেও ঐশি নিজ রুম থেকে বের না হওয়ায় পরিবারের লোকজন তার ঘরে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন।
এদিকে নিহতের চাচা হাসান বলেন, আমার ভাইপো জলি আক্তার ঐশীকে প্রেম করে বিয়ে করার পরে আমরা জানতে পারি ঐশির আগে এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল।সেই ঘরে চৌদ্দ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তারপরও আমার ভাই ছেলে এবং বউমাকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু বউমা বিদেশে যেতে চাইলে বিষয়টি নিয়ে ছেলের সাথে ফোনে বউমার কথা কাটাকাটি হয়। এসব বিষয়ে অভিমান করে ছেলে ঢাকার মিরপুরের বাসাতে আত্মহত্যা করেন। আমরা ঢাকায় থেকে জানতে পারি বউমা বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক জানিয়েছেন, দুপুরে লাশের ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে যশোর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাকের বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। তবে অন্য কোন কারণ আছে কি না তা জানার চেষ্টা চলছে। ময়না তদান্তের রিপোর্ট পেলেই প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।