স্থানীয় সংবাদ

দীর্ঘ ১ যুগ পর আওয়ামীলীগ নেতার দখল থেকে মুক্ত হলো শিরোমনি প্রশিকা গলদা চিংড়ি হ্যাচারি

স্টাফ রিপোর্টার ঃ বিগত চারদলিয় সরকার রাষ্টিয় ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালে বেসরকারি সংস্থা প্রশিকা খুলনার শিরোমনি এলাকায় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৫ একর ৬৭ শতক জমি কেনে। পরে পুরো জমি জুড়ে সেখানে প্রশিকা গলদা চিংড়ি হ্যাচারি নামে একটি প্রতিষ্ঠান করে গত দুই যুগ ধরে গলদা এবং সাদা মাছের পোনা উৎপাদনের পাশাপাশি মাছ চাষ করে আসছে। সরকার এর পট পরিবর্তনের পর এ প্রতিষ্ঠানটির দিকে নজর আসে একটি কুচক্রি মহলের । খানজাহান আলী থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আবিদ হোসেন বিভিন্ন জুট মিল , নিয়োগ বানিজ্য , বদলী বানিজ্য শুরু করেন সাবেক মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ্র এর সহযোগিতায় , শেখ আবিদ হোসেন এর হাত থেকে রেহায় পায়নি প্রশিকার এ প্রতিষ্ঠানটিও । প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুক আহম্মদ স্থানিয় খানজাহান আলী থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আবিদ হোসেনের ভাই কামাল হোসেন কে ২০১২ সালে মে মাসে শিরোমনি হ্যাচারী ম্যানেজার হিসাবে নিয়োগ দেয়, এরপর কামাল হোসেন ও তার ভাই আওয়ামীলীগ নেতা শেখ আবিদের সহযোগিতায় দখল নেন । আর ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এ দখলবাজির কাজে সহযোগিতা করে প্রশিকার সাবেক কর্মী অজয় কুমার দে, বাকের আহম্মেদ, আঃ সোবহান গং । তারা সে সময় থেকে হ্যাচারী বিভিন্ন স্থাপনা ভাড়া দেয় এবং মালামাল লুটপাট ও বিক্রয় করে। শুধু তাই নয় সেখানে রাতের আধারে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসানো হতো । কাজী ফারুকের যোগসাজগে আওয়ামীলীগ নেতা শেখ আবিদ ও তার ভাই কামাল প্রশিকার উক্ত জমি বায়নার মাধ্যমে বিক্রি করার চেষ্টা করে। প্রশিকার খুলনা ঢেভলমেন্ট অথরিটি , জেলা সাবরেজিষ্টি অফিস , থানা সাব রেজিষ্ট অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে সে সময়ে বায়না রেজিষ্টি বন্ধ করে। প্রশিকার সিনিয়র পরিচালক শেখ সাহিদ হোসেন বলেন দির্ঘ ১ যুগ পর আমরা আমাদের শিরোমনি হ্যচারী নিয়য়ন্ত্রনে পেয়ে আনন্দিত, আশা করি এলাকার জনগনের চাহিদা অনুযায়ি এ প্রতিষ্ঠান পুনরায় তার জৌলস ফিরে পাবে এবং স্থানিয় বাসিন্দাদের চাহিদা পুরুনে গুরুত্বপর্ন ভুমিকা রাখবে। উল্লেখ্য যে ২০০৯ সালের ২৪ মে ১ শত ৫ তম গভার্নি বডির সভায় ৯ জনের মধ্যে ৮ জন সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজি ফারুক আহম্মেদ কে অপসারন করেন। তিনি আরো বলেন কাজী ফারুককে নি¤œ আদালত , জর্জকোর্ট , হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে সাবেক চেয়ারম্যান হিসাবে রায়ে বিবেচনা করেছিলো। তিনি আরো বলেন এলাকার সাধারন মানুষ আমাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে । কিন্তু যারা এতদিন জবর দখল কওে রেখেছিলো তারা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে এমনকি স্থানিয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতার নামে মিথ্যা প্রগান্ডা ছড়াচ্ছে। প্রশিকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরায় মুলত তাদের নিয়ন্ত্রনে অফিস নেয়। তিনি আরো বলেন আগামিতে এখানে কৃষি ও মৎস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউট, আবাসিক সুবিধা সহ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে , এর ফলে এ এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে টেকনিক্যাল জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখতে পারবে। এছাড়াও যথেষ্ট পরিমানে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে । অন্তবর্তীকালিন সরকারের কাছে এনজিও ব্যুরোর নিয়ম অনুযায়ি এবং এম আর এ নিয়ম অনুয়ায়ি সার্বিক সহযোগিতাও আশা করেন তিনি । বর্তমান প্রশিকার ফুলতলা উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রশিকার প্রতিষ্ঠাতা ডা. কাজী ফারুক হোসেনকে বহিষ্কার করা হয় ২০০৯ সালে । পরে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পায় আঃ ওদুদ। পরবর্তি ধারাবাহিকতায় বর্তমান চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম , তার নেতৃত্বে এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা এতদিন এখানে আসতে পারিনি রাজণৈতিক কারনে। প্রশিকা খানজাহান আলী উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক কাজী সালাউদ্দীন বলেন, অত্র হ্যাচারীটি আমার আওতাধীন উন্নয়ন এলাকার অংশ আমাকে চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর চট্রগামের মিরসরাই উন্নয়ন এলাকা হতে বদলী করে অত্র উন্নয়ন এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে আমি এই উন্নয়ন এলাকার দায়িত্ব ও হ্যাচারীর দায়িত্ব পালন করছি।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button