ভোজ্য তেলের মূল্য ডাবল সেঞ্চুরির পথে : স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারেও

* কাজে আসছে না সরকারি উদ্যোগ
* খোলা সবয়াবিন লিটারপ্রতি বেড়েছে ২৫-২৭ টাকা
কামাল মোস্তফা ঃ নিত্যপণ্যের বাজারে যেন কোন ভাবেই স্বস্তির খবর মিলছেনা। যে জিনিসের দাম একবার বেড়েছে তা যেন স্থায়ী, কমার নাম নেই। বিশেষত আলু, পেঁয়াজের বাজারে কোন সুখবর নেই। এ দিকে আবার রোজাকে সামনে রেখে চোখ রাঙ্গাচ্ছে ভোজ্যতেলের বাজার। ইতিমধ্যে ২০০ ছুঁই ছুঁই করছে দাম। সব মিলিয়ে দিশাহীন মানুষ। প্রশ্ন কবে স্বস্তি মিলবে, কবে স্বাভাবিক হবে নিত্যপণ্যের বাজার। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। খুচরা বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ১৪৫-১৫০ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১২০-১২৫ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন ২৮০ টাকা এবং চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। ডিমের সাইজ ভেদে হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়। বোতলজাত সয়াবিন তেল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে লিটার প্রতি ১৭০ টাকায়, বর্তমানে তা লিটার প্রতি ১২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮২ টাকায়। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাড়তি দাম দিয়েও গত সপ্তাহের শুরুতে তেল পাওয়া যাচ্ছিলো না। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তেল যদি লিটারে ২৫-২৭ টাকা বাড়ে তাহলে সামনে কি অবস্থা দাঁড়াবে। দাম বাড়িয়ে বাজারে তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। আলু, পেঁয়াজ আগের মত চড়া মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে।
ডিলারদের অভিযোগ কোম্পানি অনেকসময় দাম বাড়ানোর জন্য সরবরাহ কমিয়ে দেয়। আমরা কমিশনে ব্যবসা করি, দাম বাড়ানোর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। সরকারের উচিত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আকবর হোসেন। পেশায় তিনি একজন রিকসা চালক, তিনি বলেন, সারাদিন রিকসা চালিয়ে ৫০০-৬০০ টাকা ইনকাম হয়। সেখান থেকে আবার ১৫০ টাকা রিকসার ভাড়া দিতে হয়। এখন বলেন পাঁচ জনের সংসার চালাতে চাল, ডাল,তেল, আলু,সবজি কিনতে এই টাকায় কি সম্ভব!
এদিকে সরকার তেলের দাম সহনীয় রাখতে ১৭ অক্টোবর পাম ও সয়াবিন তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছে। এ ছাড়া উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেয়া হয়। এই সুবিধা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তার ভিতরেই খোলা সয়াবিন তেল বাজারে লিটারপ্রতি বেড়েছে ২৫ টাকার বেশি, আর বোতলজাত তেল বেড়েছে ১২ টাকা। খোলা তেল গত সপ্তাহে ছিল ১৬৭ টাকা। বর্তমানে খোলা তেল লিটার প্রতি ২৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকায়। সোনাডাঙ্গা কাঁচাবাজার সংলগ্ন মুদি দোকান বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক কামারুজ্জামান বলেন, গত সপ্তাহে ডিলারদের কাছে চাহিদামত ভোজ্যতেল চাইলেও দিতে পারছিল না। তারা বলছে দাম বাড়ায় সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল কোম্পানিগুলো। এখন আবার সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে, তবে দাম কিছুটা বেড়েছে। মফিজুল ইসলাম বলেন, আলু, পেঁয়াজ, তেল লাগে সবসময়। এগুলোর দাম যেভাবে বাড়ছে, আয়তো সেভাবে বাড়েনি। তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ চলবো কিভাবে।


