ডুমুরিয়ায় গত ১৫ দিনে অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু ৮ জনের
সুজিত মল্লিক, ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ খুলনার ডুমুরিয়ায় চলতি নভেম্বরের ১৫ দিনেই ৮জন অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১০ বছরের শিশু থেকে শুরু করে অশিরোর্দ্ধ বৃদ্ধও আছেন। তবে তাদের আতœহননের পেছনে পারিবারিক কলহ ছাড়াও রয়েছে নানাবিধ কারণ। নিহতদের পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৩রা নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে বিষপানে মারা যায় তামিম শেখ (১৮) সে উপজেলা সদরের দক্ষিণ ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত ইউনুচ শেখের ছেলে। আতœহননের কারণ হিসেবে জানা গেছে, শৈশবকালে পিতার মৃত্যু’র পর থেকেই তাকে দেখে রাখার মত কেউ ছিলেন না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঢুকে পড়ে নেশার জগতে। যা নিয়ে আতœীয়-স্বজনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল না। পুলিশের ধারণা সে দিশেহারা জীবন যাপন ও নিজের ওপর অভিমানে আত্মহত্যা করেছে। এরপর ৪ নভেম্বর বিকেলে পানিতে ডুবে মারা যান রাম প্রসাদ রায় (৫০)। তিনি উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের খড়িবুনিয়া গ্রামের শিবপদ রায়ের ছেলে। জানা গেছে, ওইদিন তিনি বাটিয়াঘাটা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কাঞ্চননগর খেয়া ঘাটে এসে দেখতে পান নদীতে ভাটি। তখন তিনি নেমে পায়ে হেঁটে নদী পার হচ্ছিলেন। এরই মধ্যে প্রবল গতিতে ভেসে আসে বানের পানি। যার তোড়ে ডুবে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। এরপর ৫ নভেম্বর ভোরে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান গোর্বধন মন্ডল (৮৩) নামের এক বৃদ্ধ। তিনি উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের জিলেরডাঙ্গা গ্রামের মৃত ভগবান মন্ডলের ছেলে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, তিনি পারিবারিক কলহের কারণে মারা গেছেন। ৯নভেম্বর সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যায় ১১বছরের কিশোরী অর্পিতা মন্ডল (১১)। সে উপজেলার ধামালিয়া ইউনিয়নের টোলনা গ্রামের ইন্দ্রজিৎ মন্ডলের মেয়ে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, সে তার ছোট ভাই’র সঙ্গে খেলা করা নিয়ে ঝগড়া হয়। যা নিয়ে তার মা তাকে বকা দেন। ওই অভিযানে সে আত্মহত্যা করে।১০ নভেম্বর দুপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যায় তাপন গাইন (২৪)। সে উপজেলার রুদাঘরা গ্রামের নিরঞ্জন গাইনের ছেলে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, মোবাইল ফোন কেনা নিয়ে তার বাবার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে সে আত্মহত্যা করে। ১১ নভেম্বর সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে সাদিয়া খাতুন (১০) নামের আরও এক কিশোরী মারা যায়। সে উপজেলা সদরের খলশী গ্রামের মতিয়ার রহমানের মেয়ে। জানা গেছে, নিহত সাদিয়ার সঙ্গে তার ছোট ভাই’র খাবার খাওয়া নিয়ে মারামারি হয়। যা নিয়ে তার মা তাকে গালি দেয়। ওই অভিযানে শিশুটি আত্মহত্যা করে। ১৩ নভেম্বর রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে নমিতা রানী গোলদার (৭২) নামের এক বৃদ্ধা মারা গেছেন। তিনি ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের ধানিবুনিয়া গ্রামের মৃত মতিলাল গোলদারের স্ত্রী। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের কারণে তিনি মারা গেছেন। সর্বশেষ ১৮ নভেম্বর বিকেলে গলায় ফাঁস দিয়ে প্রেমা পাল (১৮) নামের এক কিশোরী মারা গেছে। সে উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের মিকশিমিল গ্রামের প্রভাষ পালের মেয়ে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, পরীক্ষার ফি’র টাকা জোগাড় করা নিয়ে বাবার সঙ্গে তার তর্ক হয়। ওই অভিমানে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা বলেন- অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুর ঘটনার সবগুলো নিয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। এর মধ্যে কেউ কেউ পারিবারিক কলহ আর তুচ্ছ ঘটনার কারণে মারা গেছে।