নগরবাসী অসহায় হয়ে পড়েছে মশার উৎপাতে

# কেসিসি’র ফগার মেশিন নামমাত্র ব্যবহার করা হচ্ছে নগরীর দু’একটি জায়গায়, আর কালো তেল ব্যবহারে হচ্ছেনা মশা নিধন # ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন নাগরবাসীর #
শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ নগরীতে বেড়েছে অতিমাত্রায় মশার উৎপাত। এতে করে নগরবাসীর জনজীবন অতিষ্ট হচ্ছে। শিশুদেরও রক্ষা করা যাচ্ছেনা এই মশার আক্রমণ থেকে। নগরববাসী মশার কাছে এক প্রকার অসহায় হয়ে পড়েছে। নগরীর দু’একটি জায়গায় ইচ্ছা হলে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে না হলে হচ্ছে না। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের বহু ওয়ার্ডের লোকজন দেখেইনি কাউকে ফগার মেশিন দিয়ে মশা মারতে। যার কারণে মশার উৎপাত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নগরবাসীর অসচেতনতা আর কেসিসি’র উদাসীনতা নগরবাসী অসহায় হয়ে পড়েছে। নগরীর চায়ের দোকানগুলোতে, বাজারে, সবখানে মানুষ এক মিনিট দাঁড়াতে পারে না শুরু হয় মশার আক্রমন। এরমধ্যে কোনটা প্রাণঘাতি ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা বুঝাই মুশকিল। কায়কোবাদ বুলবুল নামের একজন পথচারি বলেন, চায়ের দোকানে কম-বেশি সবাই যায়। সন্ধ্যার আগ মুহুর্ত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যতক্ষণ দোকানপাট খোলা থাকে কারো নিস্তার নেই। পায়ে, ঘাড়ে, কানে সবখানে আক্রমন করছে মশা। কেসিসি’র মশক নিধন কর্মি ৭৭জন তারা কোথায় যায় কোথায় স্প্রে করে কেউ বলতে পারে না। নগরীর কোথাও কেসিসি কর্তৃক মশা নিধনের জন্য ফগার কালো তেল ডিজেল আর ফগারে কোন কাজ হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন নগরবাসী। যেকারণে সাধারণ নাগরীকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে মশা নিধণের জন্য ব্যবহৃত কেসিসি’র এই ওষুধের মান নিয়ে। এদিকে মশা নিধনের নামে প্রতি বছর বছরে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে কেসিসি। এছাড়া এসব মশার কামড়ে হচ্ছে ডেঙ্গু এ্যালার্জি সহ বিভিন্ন রোগ বালাই। নগরীর ড্রেনগুলো পরিস্কারের ব্যবস্থা না করা, ডোবা, ময়লা আবর্জনা, কারণে মশার বংশবিস্তার লাভ করছে। এ বিষয়ে কথা হয় মুসল্লি মোঃ আব্দুর রহমানের সাথে তিনি বলেন, বাসা বাড়ীতে মশার উপদ্রব্য এমন ভাবে বাড়ছে যে প্রতিদিন মশার কামড় খেতে খেতে গায়ে এলার্জির মত লাল লাল ছোট ক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে। সবথেকে বড় কথা ভাই মসজিদে নামাজরত অবস্থায় মশায় যখন হুল ফুটিয়ে দেয় তখন হঠাৎ করে নামজরত মুসল্লিদের আরও বেশি সমস্যা তৈরি হয়। বর্তমান শীত মৌসুমে বাসায় ফ্যান ব্যাবহার করলে শরিরে ঠান্ডা লাগে আবার ফ্যান বন্ধ করলে মশার উপদ্রব বাড়ে। তারপরও মশা তাড়াতে যেসব কয়েল, বা স্প্রে ব্যাবহার করা হয় এতে মানুষের শরীরে সমস্যা হয়। কয়েলের ধোঁয়া শ্বাসকষ্ট সহ শরিরে গ্যাস্িট্রক সৃষ্টি হয় । একই কথা বলেন, ব্যবসায়ি মোঃ জাহিদ হোসেন তিনি বলেন, আমি প্রতি জুম্মাবাদ আমার বাবা মায়ের জন্য দোয়া করতে খালিশপুর গোয়ালখালী সরকারী কবরস্থানে যাই তবে, মশার কামড়ে আল্লাহর কাছে ভাল ভাবে দোয়া করা যায়না। এত পরিমাণ মশার উপদ্রব ।এছাড়া বাড়ীতে ছোট ছেলে সাড়ে সাত মাস বয়স তাকে এমন ভাবে মশা কামড়িয়েছে যে তার শরিরে লাল র্যাশ সৃষ্টি হচ্ছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন হতে মশা নিধনের জন্য যে তেল ব্যাবহার করে আসলে এতে কার্যকর কোন সুফল হচ্ছে না নগরবাসীর। যখন ধোঁয়া ছাড়ে গন্ধ ছাড়া আর কিছু হয়না। এছাড়া ভুক্তভোগী কামাল মোস্তফা বলেন, কেসিসি মূলত দায়সারা স্প্রে করে চলে যায় তা যারা মশা নিধনের জন্য স্প্রে করে তারা প্রধান সড়কের ড্রেন দিয়ে চলে যায়। এরা কথনও অলিগলির মধ্যে প্রবেশ করেনা। এতে করে মেইন সড়কের মশাগুলো প্রবেশ করে অলিতে-গলিতে আর মশাদের অত্যাচার বেড়ে যায় দ্বিগুন। এ বিষয়ে কেসিসির কঞ্জারভেন্সি খালিশপুর থানা শাখার প্রধান কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত মশা নিধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা সকালে কালো তেল, ডিজেল, আর বিকালে ফগার স্প্রে করছি। এত করে মশার উপদ্রব্য কিছুটা হলেও কমছে। আর আমি গোয়ালখালী কবরস্থানে মশার উপদ্রব যেহেতু বেশি । আমি বৃহস্পতিবার কবরস্থান এলাকায় স্প্রে করব। তবে বিষয়টি নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন কঞ্জারভেন্সি শাখার প্রধান মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, আমার সিটির মধ্যে মোট ৩১ টি ওয়ার্ডে ৭৭ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মি কাজ করছে মশা নিধনের জন্য। নিয়মিত স্প্রে করছে ওয়ার্ডে, তবে, কেন কোন কাজ হচ্ছেনা আমি বলতে পারবোনা । আমি গেল ১৪ মাস পর আবারও যোগদান করছি মাত্র। বাজেট কত টাকা আর এই মশা নিধণের ওষুধের মান কেমন এখন বলতে পারছি না।