স্থানীয় সংবাদ

চিন্ময় কৃষ্ণ ইস্যু : আন্দোলনের নামে সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা ইসকনের

অপতৎপরতা রূখে দিতে মাঠে ছাত্র-জনতা

স্টাফ রিপোর্টার : ‘ইসকন আওয়ামী লীগের দালাল, ইসকন নিপাত যাক, ভারত দালাল ভারত যাও বাংলাদেশকে গড়তে দাও’ ইত্যাদি শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল মঙ্গলবারের খুলনা। মূলত: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের ব্যানারে আন্দোলনের নামে ইসকনের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী অপতৎপরতা রূখে দিতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা রাজপথে নামে। তারা দিনভর নগরীর শিববাড়ী ও পিকচার প্যালেস মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় কয়েক দফায় ইসকন সদস্যরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলার চেষ্টা করে। তবে ছাত্র-জনতার কঠোর অবস্থান এবং পুলিশের দৃঢ় পদক্ষেপে তারা বাঁধাগ্রস্ত হয়।
এদিকে, খুলনায় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টার এ কর্মসূচিতে ফ্যাসিবাদ আওয়ালীগের দোসরখ্যাত তিনজন কথিত সাংবাদিক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ও সাবেক এক যুবলীগ নেতা এবং কতিপয় পতিত আওয়ামী লীগ নেতার সরাসরি ইন্দন এবং শেল্টার রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে সাংবাদিক পরিচয়ধারী জনৈক সুনীল দাস এবং বিমান সাহা নামে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক ব্যক্তিকে সরাসরি কর্মসূচিতে দেখা গেছে। উল্লিখিতদের বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র শিববাড়ী মোড়ে অবস্থান নেয়। একই সময় ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদের নামে সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ইসকনের একটি গ্রুপ শিববাড়ী মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে জড়ো হতে শুরু করে। যদিও তার আগেই সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। এক পর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে ইসকন সদস্যরা সেখানে হাজির হয়ে অপতৎপরতার চেষ্টা করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিকচার প্যালেস মোড়ের দিকে পিছু হটে। পরে কিছু সময় সেখানে অবস্থান করে সরকার বিরোধী শ্লোগান দিতে থাকে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল শিববাড়ী থেকে পিকচার প্যালেস মোড়ের দিকে রওনা করে। এই সময়ে সানাতন ধর্মাবলম্বী কয়েকজন শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের মধ্যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ সময় পুলিশ সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষার্থীকে আটক করে। পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও শিববাড়ী এসে শেষ করে।
মিছিলের ইসকন বিরোধী, ইসকন নিপাত যাক, আওয়ামী লীগের দালাল ইসকন, ভারত দালাল ভারত যাও বাংলাদেশকে গড়তে দাও’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন। আন্দোলনে স্থানীয় লোকজনকেও একাত্মতা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বলা হয়, চট্রগ্রামে আদালতে হামলা-ভাংচুর করে এক আইনজীবীকে হত্যা ও মসজিদে হামলার মধ্যদিয়ে প্রমাণ হয়েছে ইসকন একটি সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে দেশ ও ইসলাম বিরোধী বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে এই জঙ্গি সংগঠনের কোন তৎপরতা ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। অবিলম্বে এই সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অপরাধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
অপরদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে পিকচার প্যালেস মোড়ে গণজমায়েত, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। পরে মিছিল নিয়ে নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন সনাতনী জাগরণ জোটের খুলনা বিভাগীয় কমিটির নেতা প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, শ্যামল হালদার, বিমান সাহা, মৃনাল কান্তি বিশ্বাস, গোপাল সাহা, রতন দেবনাথ ও বিশ্বজিৎ দে মিঠু প্রমুখ।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button