খুলনায় ডেঙ্গুরোধ ও সড়ক-ড্রেন মেরামতের দাবি

# কেসিসি প্রশাসকের কাছে বিএনপির স্মারকলিপি #
স্টাফ রিপোর্টারঃ অবিলম্বে খুলনা মহানগরবাসীর সকল প্রকার নাগরিক সেবা দ্বোরগড়ায় পৌঁছে দিতে এবং সবধরণের জনদূর্ভোগ লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন খুলনা মহানগর বিএনপি। বুধবার দুপুর ১২টায় প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন কেসিসি’র সচিব শরীফ আসিফ রহমান। স্মারকলিপিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, খুলনা নগরীতে প্রাণঘাতী ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মহামারী আকারে ছড়িয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে; ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। তবুও মশক নিধনে কেসিসি’র কার্যকর পদক্ষেপ না দেখে হতাশ নগরবাসী। এছাড়া জরাজীর্ণ সড়ক ও অলি-গলি এবং ভাঙাচোরা ড্রেনের কাজ মন্থর গতিতে চলায় উন্নয়ন বিড়ম্বনা নগরবাসীর ‘গলার কাটা’ হয়ে দাড়িয়েছে। নগরীর ব্যস্ততম ময়লাপোতা মোড়ে সৌন্দর্য্য বর্ধনের নামে রাস্তাটি সংকুচিত করার প্রতিবাদে সচেতন নাগরিক সমাজ মানববন্ধন করেছে। সে বিষয়েও কেসিসি’র উদাসীনতা চরম দায়িত্বহীনতায় পরিচয় দিচ্ছে। তারা উল্লেখ করেন, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন ও সংস্কারের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ রাষ্ট্র বির্নিমানের স্বপ্ন নিয়ে দেড় সহস্রাধিক ছাত্র জনতার আত্মাহুতি ৫ আগস্টের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। সরকারি হিসেবেই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহত হয়েছেন ২২ হাজার মানুষ। বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা যে কয়েকগুণ বেশি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন সরকারের দুই বছর ও তাদের আর্শিবাদে রাষ্ট্র ক্ষমতা জবরদখলকারী ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দু:শাসনের অবসানে আগস্ট বিপ্লব এক গৌরবোজ্জল স্বর্ণালী অধ্যায়। পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা যে পন্থায় গণভবন থেকে পালিয়ে প্রতিবেশি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তা ভবিষ্যতের জন্য অনন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। আগামী দিনে এই দেশে আর কখনোই গণতন্ত্র ব্যতিত অন্য কোন নিকৃষ্ট পন্থায় কেউই ক্ষমতা দখলের দু:সাহস দেখাতে পারবে না। বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয় এবং শীত মৌসুম পর্যন্ত জীবনঘাতি এই মহামারির দোর্দন্ড দাপট চলে। সময়ে সাথে সাথে রোগটি জটিল ও মারাত্মক রূপ নিচ্ছে এবং রোগীর শরীরে নানা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু রোগীর শরীরে প্লাটিলেটের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গিয়ে চরম ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ মশক নিধনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কর্মতৎপরতা নগরবাসীকে রীতিমতো হতাশ করেছে। মশার লার্ভা নিধনে তাদের কোন উদ্যোগ যেমন নেই, পাশাপাশি ফগার মেশিন দিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়ার কুন্ডলীর ভেতরেই শত শত মশার জীবন্ত ওড়াওড়ি প্রমাণ করে দেয়, কেসিসির ছিটানো এই স্প্রে মশক নিধনে কেবল অকার্যকরই নয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সততার ভয়াবহ ঘাটতিরও পরিচায়ক। এদিকে হাসপাতালে মরণাপন্ন রোগীর দেহে প্লাজমা দেয়ার প্রয়োজনে অধিকাংশরাই দ্বারস্থ হচ্ছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কারণে নগরীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও চার্জ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় অনেকেই যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এদিকে হাসপাতালগুলোতে এখনও আওয়ামী আমলে দোর্দন্ড প্রতাপ নিয়ে চাকরি করা ফ্যাসিবাদের দোসররা রয়েছে বহাল তবিয়তে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১১শ’ মানুষ ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১৩ জন। সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা ও ড্রেন সংস্কার/পুনঃনির্মান এবং ২২টি মোড়/সড়ক দ্বীপ আধুনিকায়ন। শুরু করার পর কাজ ফেলে রাখায় জনদূর্ভোগ চরমে পৌঁছে দিচ্ছে কেসিসি’র এইসব প্রকল্প। খুলনার মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন হওয়া সত্বেও কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অভিজ্ঞতাহীনতার কারণে এখানে কোন টুর্ণামেন্ট যেমন হয়না, তেমনি নতুন খেলোয়াড় তৈরির বিষয়ে নেই কোন উদ্যোগ। নতুন খেলোয়ার সৃষ্টিতে সরকারের বরাদ্দ বিপুল অংকের অর্থের নয়ছয় হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। স্মারকলিপি গ্রহণকালে কেসিসি সচিব বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু মশা নিধনে, সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলমস তুহিন, ফকরুল আলম, বেগম রেহেনা ঈসা, এড. নুরুল হাসান রুবা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, বদরুল আনাম খান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু প্রমূখ।