খালিশপুরে জুয়েলার্সে অভিনব কায়দায় স্বর্ণালংকার চুরি ঃ ঘটনাটি সন্দেহজনক

স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীর খালিশপুরে জুয়েলার্সে অভিনব কায়দায় স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি সন্দেহজনক বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। মূল ঘটনা আড়াল করতে চুরির নাটক সাজানো হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এই ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার স্বর্ণালংকারসহ নগদ অর্থ চুরির দাবি করা হলেও বিষয়টি অস্বাভাবিক বলে অনেকে ধারণা করছেন। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন। ভিকটিমের ভাবি অর্চনা মৌলিক বলেন, তার দেবর গৌতম মৌলিক নগরীর বয়রা পূজাখোলায় ভাড়া থাকেন। তিনি খালিশপুর ক্রিসেন্ট মিল সিবিএ কার্যালয়ের বিপরিতে গৌতম জুয়েলার্স নামক একটি স্বর্ণালংকারের দোকান দিয়েছে গত ১৫/২০ বছর আগে। গত এক বছর আগে তার প্রথম বউ-এর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে মোবাইলের মাধ্যমে আরো একটি মেয়ের সাথে গত ৩/৪ মাস আগে প্রেম করে এই গৌতম। তাকেও বাসায় রাখে বিয়ে ছাড়াই। সেও নাকি ২/৩ লাখ টাকা আর দোকানের চাবি নিয়ে চম্পট দেয়। সেই রেশ না কাটতেই আবারো গৌতম হৃদিকা পাল নামের একটি মেয়ের সাথে মোবাইলে প্রেম করে। ওই মেয়ের বাড়ি চট্টগ্রামের বাশখালি থানায় এলাকায় বলে জানায়। সে রংপুর ডিসি অফিসে চাকুরি করে। সেই মেয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে গৌতমের বাসায় রয়েছে। সাথে ভাই পরিাচয়দানকারীকে নিয়ে আসে। কয়েক দিন আগে তারা কোর্ট ম্যারিজ করে এক সাথে থাকছে। বুধবার রাতে তারা এক সাথে খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ওই মেয়ে আর তার কথিত ভাই ঘরের বাইরে থেকে তালা মেরে দোকানের চাবি নিয়ে আসে। তারা দোকানের চাবি খুলে সব স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। খবর পেয়ে থানার ওসি ও সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। পাশের দোকানদার স্বপন খান বলেন, বৃহস্পতিবার ১১টার পর দোকান খোলার পর দেখা যায় গৌতমের দোকানে একটি তালা। তখন বিষয়টি নিয়ে খোজখবর নেয়া হয়। কিন্তু গৌতমের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। দুপুর ১টার পর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ আসার পর তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। সকালে জুয়েলার্স সমিতির নেতারা গৌতমকে বাসা থেকে ইজিবাইকে করে নিয়ে আসে। তখন সে দাবি করে, তাকে খাবারের সাথে কিছু খাইয়ে তথাকথিত শ্যালক ও স্ত্রী দোকান চুরি করেছে। একশত ভরি স্বর্ণ ছিল বলে তিনি তাদেরকে জানান। আরেক জুয়েলার্স মালিক জাহিদুল ইসলাম বাদশা বলেন, গৌতমকে সমিতির নেতারা ইজিবাইকে করে বাসা থেকে নিয়ে আসে। বাসা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। তা তারা ভাঙ্গে। এরপর গৌতমকে অসুস্থ্য অবস্থায় দোকানে নিয়ে আসে। সে জানায়, তার দোকানে একশত ভরির বেশী স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিল। পরে তাকে আবার খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থলে ডিউটিরত খালিশপুর থানার এসআই কামাল বলেন, ঘটনাটি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। সিন্ধুকের তালা খোলার বিষয়টি খুবই জটিল। খালিশপুর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, মোবাইলের প্রেম ধরে এক নারীকে বিবাহ ছাড়া একই ঘরে কয়েক দিন রেখেছে। ওই নারী বুধবার দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত এক সাথে খাওয়া দাওয়া করেছে। পরে খাবারের সাথে কিছু খাইয়ে অসুস্থ্য করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে ওই মেয়ের কথিত ভাই এসে দোকানের তালা খুলে চুরি করেছে বলে গৌতমের দাবি। তবে সিন্ধুকের তালা খোলার বিষয়টি খুবই জটিল এবং রহস্যজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন। গৌতম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সুস্থ্য হওয়ার পর বিষয়টি বুঝা যাবে আসলে কি হয়েছে।