স্থানীয় সংবাদ

খালিশপুরে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু : অভিযোগের তীর সৎ মায়ের দিকে

স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীর খালিশপুরে মো. ফিরোজ হোসেন (৪৩) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তার সৎ মা জড়িত বলে অভিযোগ পরিবারের অন্য সদস্যদের। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফিরোজ। ফিরোজ মৃত মোহাম্মদ আলী হোসেন ও মৃত মিনু পারভিনের ছেলে। শনিবার সকালে ফিরোজ হোসেনের ছোট বোন মোসাম্মাৎ জুলিয়া আক্তার ববি বলেন, আমার মা মিনু রহমান মারা যাওয়ার পর বাবা মোহাম্মদ আলী হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে সৎ মা আনজিরা বেগম বিভিন্নভাবে ফিরোজ হোসেনকে মারধর করতেন। খাবার দিতেন না, মাঝে মধ্যে ঘরে আটকে নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের ফলে তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন ফিরোজ। গত ২১/২২ নভেম্বর ফিরোজ হোসেনকে ঘরে আটকে রেখে মুখ বেঁধে মারধর করেন সৎ মা আনজিরা বেগম, সৎ খালা নাজিরা বেগম, রাবেয়া খাতুন (আনজিলা বেগমের পূর্বের ঘরের সন্তান), মোহাম্মদ সেলিম (বাসায় পালক থাকতো)। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারি ঘটনার দিন ফিরোজকে অনেক মারধর করা হয়। এরপর থেকে বড় ভাই ফিরোজ হোসেনের কোনো খোঁজখবর না পাওয়ায় প্রতিবেশীর সাহায্যে ২৮ নভেম্বর সকালে ঘরের তালা ভেঙে ফিরোজকে মুমূর্ষু অবস্থায় পাই। পরে তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। ওই দিন রাত ৩টার দিকে ফিরোজ মারা যান। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সৎ মা আনজিরা বেগম নানাভাবে চেষ্টা করছেন। ববি আরও বলেন, ফিরোজের রহস্যজনক মৃত্যুর কারণে আমরা সৎ মা আনজিরা বেগম, তার বোন নাজিরা বেগম, তার স্বামী কামাল তালুকদার, সৎ মায়ের আগের ঘরের মেয়ে রাবেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। স্থানীয়রা জানায়, ফিরোজ খুব ভালো ছাত্র ছিলেন। তবে তার মা মারা যাওয়ার পর বাবা আরেকটা বিয়ে করেন। সেই থেকে শুরু হয় নির্যাতন। সৎ মায়ের নির্যাতনে ছেলেটি পাগল হয়ে প্রায় ১০ বছর খালিশপুরে পাগলের মতো হাঁটাচলা করতেন। সর্বশেষ পারিবারিক নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটি মারা যান। এ বিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ফিরোজের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের রির্পোট পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button